Demand

যোগ্য-অযোগ্য বিভাজনের দাবিতে বর্ষবরণের রাতেও রাজপথে থাকবেন ওঁরা

আগামী ২ জানুয়ারি স্কুল খুললেও কাজে যোগ দেবেন না। কারণ, যত দিন পর্যন্ত প্যানেল থেকে অযোগ্যদের বাদ দেওয়া না হবে, তত দিন এই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:৪৩
Share:

অনমনীয়: মোবাইলের টর্চ জ্বেলে স্লোগান বিক্ষোভরত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। রবিবার ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

গত তিন দিন ধরে তাঁরা বসে রয়েছেন শহরের পথে। জানাচ্ছেন, ৩১ ডিসেম্বর বর্ষবরণের রাতেও তাঁরা রাজপথ ছেড়ে যাবেন না। আগামী ২ জানুয়ারি স্কুল খুললেও কাজে যোগ দেবেন না। কারণ, যত দিন পর্যন্ত প্যানেল থেকে অযোগ্যদের বাদ দেওয়া না হবে, তত দিন এই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। রবিবার সন্ধ্যায় ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে এমনই জানালেন ‘২০১৬ যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের’ তরফে বসে থাকা শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁরা জানান, আগামী ৭ তারিখ সুপ্রিম কোর্টে ফের শুনানি রয়েছে। ওই শুনানিতেও সুরাহা না মিললে রাজপথে বসেই তাঁদের আন্দোলন চলবে।

Advertisement

রবিবার সন্ধ্যায় মোবাইলে টর্চ জ্বেলে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। স্লোগানে গলা মেলাচ্ছিলেন আসানসোলের একটি স্কুলের সংস্কৃতের শিক্ষিকা রূপা কর্মকার। তাঁর হাতে পোস্টার ও মোবাইল, পাশে বছর তিনেকের ছেলে ও স্বামী। রূপা বলেন, ‘‘সাত বছর স্কুলে শিক্ষকতা করার পরে আমাদের চাকরি এখন অনিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। এটা কেন হবে? আমি স্বামী ও ছেলেকে নিয়ে তিন দিন ধরে পথে বসে আছি। আমরা চাই যোগ্য ও অযোগ্যদের বিভাজন।’’

হাতে ধরা পোস্টার দেখিয়ে রূপা বলেন, ‘‘এই পোস্টারে সিবিআইয়ের দেওয়া তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এই তথ্য অনুযায়ী নবম, দশমে ৮.৫০ শতাংশ অযোগ্য এবং একাদশ ও দ্বাদশের ১৪.৪৭ শতাংশ অযোগ্য। এই সামান্য শতাংশ অযোগ্যদের জন্য কেন পুরো প্যানেল বাতিল হবে? এসএসসি এখনও যোগ্য ও অযোগ্যের বিভেদ যদি করতে না পারে, তা হলে দায়ী তারা। এর জন্য আমাদের ভোগান্তি কেন হবে?’’

Advertisement

দু’বছরের সন্তানকে নিয়ে এ দিন ধর্নায় বসেছিলেন ব্যারাকপুরের বাসিন্দা, সাবিনা ইয়াসমিন নামে এক শিক্ষিকা। তিনি বলেন, ‘‘রাতে বাচ্চাকে ওর বাবার সঙ্গে বাড়ি পাঠিয়ে দেব। কিন্তু আমি রাতে থাকব। যত দিন না পর্যন্ত এর সুরাহা হচ্ছে, এই ধর্না থেকে উঠছি না। এত বছর চাকরি করার পরে আমাদের সামাজিক ভাবেও হেনস্থা হতে হচ্ছে। এটা আমাদের প্রাপ্য নয়।’’

বিক্ষোভরত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনেকেই এ দিন ওয়াই চ্যানেল জুড়ে ছবি আঁকেন। স্বর্ণালী চক্রবর্তী নামে এক শিক্ষিকা বলেন, ‘‘ছবির মাধ্যমে আমাদের দাবি মানুষের সামনে তুলে ধরছি। এ ছাড়াও সাত তারিখ পর্যন্ত নানা কর্মসূচি হবে। রাজপথ ছাড়ছি না।’’

বৃন্দাবন ঘোষ নামে আর এক শিক্ষকের কথায়, ‘‘যোগ্য-অযোগ্যের মধ্যে পার্থক্য তো হয়েছে। সিবিআই এই বিভাজন করেছে। তবু এসএসসি কেন সব তথ্য দিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জানাচ্ছে না? প্রয়োজনে এসএসসি আরও ভাল আইনজীবী নিয়োগ করে সব তথ্য সুপ্রিম কোর্টে তুলে ধরুক। না হলে সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে কমিশন গঠন করে আইনজীবী নিয়োগ করা হোক।’’

আগামী ২ জানুয়ারি ফের খুলবে স্কুল। সে দিনই বই দিবস। বৃন্দাবন বলেন, ‘‘স্কুল খুললেও আমরা স্কুলে নয়, রাজপথেই থাকব। আমাদের চাকরিটাই তো অনিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। প্যানেল সুরক্ষিত রেখে আমরা যাঁরা যোগ্য, তাঁদের চাকরি নিশ্চিত করতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement