পড়ুয়া ঘিরে মারমুখীরা। — নিজস্ব চিত্র
বিজেপির বিরুদ্ধে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপিকাকে নিগ্রহের অভিযোগ তুলে যাদবপুর থানা ঘেরাও করলেন সিপিএম এবং এসএফআই কর্মী-সমর্থকেরা। তাঁদের অভিযোগ, সোমবার যাদবপুর এইট-বি বাসস্ট্যান্ডে বিজেপির সভা চলাকালীন ওই অধ্যাপিকাকে নিগ্রহ করা হয়। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস কমিউনিকেশন বিভাগের দুই পড়ুয়া-সহ কয়েক জন নিগ্রহের ‘শিকার’ হন বলেও বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ। বিজেপির পাল্টা দাবি, অনুমতি নিয়ে জনসভা করা সত্ত্বেও তার মধ্যে ঢুকে পড়ে গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করেন ওই অধ্যাপিকা। তবে, তাঁকে হেনস্থার অভিযোগ নস্যাৎ করেছে বিজেপি।
ঘটনার সূত্রপাত এ দিন সন্ধে সাড়ে ৬টা নাগাদ। যাদবপুর এইট-বি বাসস্ট্যান্ডে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর সমর্থনে বিজেপির সভা চলছিল। অভিযোগ, ওই সভা চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক অধ্যাপিকাকে নিগ্রহ করেন বিজেপির মহিলা কর্মী-সমর্থকরা। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে ওই দৃশ্য দেখতে পান পিনাকী ঢোলে ও রাহি রায় নামে মাস কমিউনিকেশন বিভাগের দুই পড়ুয়া। তাঁদের দাবি, অধ্যাপিকাকে ওই ‘পরিস্থিতি’ থেকে উদ্ধার করতে এগিয়ে যান তাঁরা। অভিযোগ, সে সময় তাঁদের উপরেও ‘হামলা’ চালান বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। তাঁদের দাবি, স্থানীয় বাসিন্দাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি আয়ত্তে আসে। বিষয়টি বার বার জানানো সত্ত্বেও পুলিশ নির্বিকার ছিল বলে অভিযোগ তাঁদের। গোটা ঘটনা ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এইট-বি বাসস্ট্যান্ড এলাকা।
ওই ঘটনার পর অভিযুক্ত বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের গ্রেফতারের দাবিতে ফের নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। যাদবপুর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন সিপিএম এবং এসএফআই কর্মী-সমর্থকরা। পতাকা নিয়ে রাস্তায় নেমে চলে বিক্ষোভ প্রদর্শন। স্লোগানও দিতে থাকেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: ‘চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ’ হলেন বিপিন রাওয়াত
এ দিন এইট-বি বাসস্ট্যান্ডে সিএএ-এর সমর্থনে বিজেপির ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত, প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য, বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর ও যুবনেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। বিজেপির অভিযোগ, এ দিন সভা শেষ হওয়ার পরেই সিপিএম এবং এসএফআই কর্মী-সমর্থকরা ঝাঁপিয়ে পড়ে মঞ্চ ভাঙচুর করেন।
পতাকা হাতে মঞ্চ ভাঙচুর। নিজস্ব চিত্র
আরও পড়ুন: গায়ের কাছে সুন্দরী তরুণী, তার পরেই হাপিস মোবাইল-টাকা! গোয়েন্দাদের জালে তরুণ দম্পতি
বিজেপি কর্মীদের আরও অভিযোগ, সভা চলাকালীন তার মধ্যে ঢুকে পড়ে গোলমাল শুরু করেন ওই অধ্যাপিকা এবং সিপিএম এবং এসএফআই-এর কিছু কর্মী। তাঁদের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘পুলিশের অনুমতি নিয়ে একটি শান্তিপূর্ণ সভা হচ্ছে। অন্য কোনও দল তার মাঝে ঢুকে পড়ে অশান্তি তৈরি করবে কেন?’’ তবে অধ্যাপিকাকে মারধরের অভিযোগ অবশ্য বিজেপি নস্যাৎ দিয়েছে। ইচ্ছাকৃত ভাবে গোলমাল পাকিয়ে মূল ইস্যু থেকে অন্য দিকে নজর ঘুরিয়ে দেওয়া যাদবপুরের বামপন্থীদের বরাবরের কৌশল— এমনটাই দাবি বিজেপির।