রহস্য: রক্ষিত মিত্তলের (ইনসেটে) স্কুটারটি উদ্ধার হয়েছে বেলডাঙায়, জাতীয় সড়কের পাশ থেকে। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়ার জন্য মঙ্গলবার স্কুটার নিয়ে বেরিয়েছিলেন বছর কুড়ির যুবক। কিন্তু তার পর থেকেই তিনি নিখোঁজ। এক দিন পরে, বুধবার সকালে পুলিশের থেকে ফোন পেয়ে পরিজনেরা জানতে পারেন, বাড়ি থেকে প্রায় ১৭০ কিলোমিটার দূরে, জাতীয় সড়কের ধারে মিলেছে স্কুটারটি। কিন্তু খোঁজ মেলেনি ওই যুবকের।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবকের নাম রক্ষিত মিত্তল। তিনি বেলঘরিয়ার ১১ নম্বর বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি আবাসনের বাসিন্দা। ব্যবসায়ী অশোক মিত্তলের বড় ছেলে রক্ষিতের আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর মেডিক্যালের প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট-এ বসার কথা। পরিজনেরা পুলিশকে জানিয়েছেন, প্রতিদিনের মতোই মঙ্গলবার সকালেও বরাহনগরের একটি মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন রক্ষিত। তাঁর কাকা দীনেশ বলেন, ‘‘বেলা হয়ে গেলেও রক্ষিত বাড়ি না ফেরায় চিন্তায় পড়ি সকলে। মোবাইলে ফোন করে দেখা যায়, সেটি বন্ধ।’’ পরিজনেরা জানিয়েছেন, চুপচাপ স্বভাবের ওই যুবক বাইরে তেমন ভাবে কারও সঙ্গে মেলামেশা করতেন না। প্রতিদিন সকালে পুজো দিতে যাওয়া ছাড়া বাকি সময়ে বাড়িতেই পড়াশোনা নিয়ে থাকতেন।
মঙ্গলবার রাতে বেলঘরিয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন অশোকবাবু। তদন্তে নেমে পুলিশ বরাহনগরের ওই মন্দিরে গিয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখে, ১০টা নাগাদ সেখান থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন রক্ষিত। পাশাপাশি, বেলা ১২টা নাগাদ ওই যুবকের মোবাইলের শেষ টাওয়ার লোকেশন দত্তপুকুরের মীরহাটিতে ছিল বলেও জানা যায়। রাতেই পরিজনদের নিয়ে সেখানে যান বেলঘরিয়া থানার তদন্তকারীরা। দত্তপুকুর থানার পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে ওই জায়গায় গিয়ে দেখা যায়, সেটি একটি আমবাগান। কিন্তু সেখানেও খোঁজ মেলেনি রক্ষিতের।
অন্য দিকে, এ দিন সকালে বেলডাঙা থানার টহলদারি গাড়ি মহুলা এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে লক করা অবস্থায় একটি নতুন লাল রঙের স্কুটার পড়ে থাকতে দেখে। তাতে কোনও নম্বর প্লেট ছিল না। আশপাশে খোঁজ করে স্কুটারের মালিককে পায়নি পুলিশ। তখন ওই গাড়ির ভিতর থেকে কাগজপত্র উদ্ধার করে জানা যায়, সেটির মালিকের নাম রক্ষিত মিত্তল। কাগজপত্রের সঙ্গেই উদ্ধার হয় মোবাইলের সিম কার্ড। এর পরে পুলিশ ওই যুবকের বাড়িতে ফোন করে বিষয়টি জানায়। কিন্তু বেলঘরিয়া থেকে প্রায় ১৭০ কিমি দূরে স্কুটার চালিয়ে ওই যুবক কেন গেলেন, তার সঙ্গে আর কেউ ছিলেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। ব্যারাকপুরের ডিসি (দক্ষিণ) আনন্দ রায় বলেন, ‘‘বেলডাঙা থেকে খবর পাওয়ার পরেই সেখানে বেলঘরিয়া পুলিশের একটি দল পাঠানো হয়েছে।’’