COVID Vaccine

Vaccine for students: ‘এ বার নিশ্চিন্তে বেরোতে পারব’, প্রতিষেধক নিয়ে বলছে পড়ুয়ারা

কলকাতা পুরসভা এলাকায় সোমবার থেকে শুরু হয়েছে কমবয়সিদের প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:০৮
Share:

অবশেষে: স্কুলে প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে এক পড়ুয়াকে। ছবি: সুমন বল্লভ।

সোমবার সকাল ১০টা বাজতে না বাজতেই সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গভর্নমেন্ট গার্লস হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী সোহিনী মুখোপাধ্যায় হাজির হয়ে গিয়েছিল স্কুলে। সঙ্গে বাবা গণেশ মুখোপাধ্যায়। স্কুলে প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় নেওয়ার পরে সোহিনী বলছে, “এখন স্বস্তিবোধ হচ্ছে। এত দিন প্রতিষেধক পাইনি বলে বাইরে বেরোতে একটু ভয় লাগত। কোনও ভাবে সংক্রমিত হলে বাড়ির বড়রাও আমাদের থেকে আক্রান্ত হয়ে যেতে পারেন, সেই আতঙ্কও কাজ করত। এখন সেই ভয় কাটল। নির্দিষ্ট সময় পরে দ্বিতীয় ডোজ়টা নিয়ে নিতে হবে।” গণপরিবহণে চেপে এ বার সে অনেকটাই নিশ্চিন্তে স্কুলে আসতে পারবে, জানাচ্ছে সাঁতরাগাছির বাসিন্দা সোহিনী।

Advertisement

কলকাতা পুরসভা এলাকায় সোমবার থেকে শুরু হয়েছে কমবয়সিদের প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ। এ দিন পুরসভার ১৬টি বরোর ১৬টি স্কুলে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের (১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সি) প্রতিষেধক দেওয়ার পরে আজ, মঙ্গলবার আরও ৩৪টি স্কুলে এই প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। তিনি বলেন, “সব মিলিয়ে মঙ্গলবার ৫০টি স্কুলে প্রতিষেধক দেওয়া হবে। সরকারি স্কুল বাদে মঙ্গলবার আরও ১৭টি বেসরকারি স্কুলে প্রতিষেধক প্রদানের কাজ হবে। তবে স্কুলগুলিকে এ জন্য ইউনিক আইডি তৈরি করতে হবে।”

ছোটদের প্রতিষেধক প্রদানের জন্য কার্যত তৈরি বেসরকারি স্কুলগুলিও। যেমন সাউথ পয়েন্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আজ, মঙ্গলবার সেখানে ২৫০ জন পড়ুয়াকে প্রতিষেধক দেওয়া হবে। সকাল ৯টা থেকে তাদের জুনিয়র স্কুলে শিবির করে ওই কাজ চলবে। শিবির চলবে আগামী ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। এ জন্য ইতিমধ্যেই পড়ুয়াদের জন্য স্কুলে অপেক্ষা করার ঘর থেকে পর্যবেক্ষণ কক্ষ— সবই তৈরি।

Advertisement

তবে সোমবার প্রতিষেধক নিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে অধিকাংশ পড়ুয়া। সাখাওয়াতের ছাত্রী সোহিনীর বাবা গণেশবাবু বললেন, “পড়ুয়াদের প্রতিষেধক দেওয়া হয়ে গেলে এ বার তো স্কুলটা খুলে দিতে পারে। না হলে পড়াশোনার ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। করোনা আবহে আমার মেয়েদের মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়নি। উচ্চ মাধ্যমিকটা অন্তত যেন প্রস্তুতি নিয়ে ঠিকঠাক ভাবে দিতে পারে, সেটা শিক্ষা দফতরের দেখা দরকার।”

এ দিন স্কুলে এসে প্রতিষেধক নিয়ে বেহালা হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া অভিজিৎ অধিকারী জানাচ্ছে, স্কুলে এসে উচ্চ মাধ্যমিকের প্রস্তুতি বেশ ভালই চলছিল গত কিছু দিন। ফের স্কুল বন্ধ হওয়ায় তাতে আবার ছেদ পড়ল। তার কথায়, “সামনেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। প্রতিষেধক পেয়ে গেলাম বলে করোনা-ভীতি কমেছে অনেকটাই। তাই এ বার করোনা-বিধি মেনে পরীক্ষাটা স্কুলে বসে অফলাইনেই দিতে চাই।” স্কুলটা আরও আগে খুললে প্র্যাক্টিক্যালের ক্লাসগুলো যে আরও বেশি করে করতে পারত, সেই আক্ষেপও শোনা গেল অভিজিতের গলায়।

কেষ্টপুরের দেশপ্রিয় বালিকা বিদ্যামন্দিরে প্রতিষেধক প্রদান কর্মসূচিতে নবম শ্রেণির ১৮১ জন ছাত্রীর মধ্যে এ দিন প্রথম ডোজ় নিয়েছে ১৩৩ জন। আর একাদশ শ্রেণির ১৮৫ জনের মধ্যে প্রতিষেধক নিয়েছে ১৩২ জন ছাত্রী। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নাজরিন নাহার জানান, আজ, মঙ্গলবার তাঁদের স্কুলের দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীদের প্রতিষেধক দেওয়া হবে। এ দিন প্রতিষেধক নেওয়ার পরে ওই স্কুলের নবম শ্রেণির রিমঝিম বসাক বলে, “এর আগেও অসুখের সময়ে আমাকে ইঞ্জেকশন নিতে হয়েছে। তাই প্রতিষেধক নিতে ভয় করেনি। বরং আজ থেকে অনেক বেশি চিন্তামুক্ত হলাম। পরের ডোজ়টা নিয়ে, মাস্ক পরে এ বার অনেক নিশ্চিন্তে বেরতে পারব। স্কুল খুললে নিশ্চিন্তে ক্লাস করতে পারব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement