Childrens Day

মুক্তির শিশু দিবসে ফিল্মে পুরনো ভারতের পাঠ

প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর আমলে জাত-ধর্মের ঊর্ধ্বে সবাইকে নিয়ে চলার মূল্যবোধই জনপ্রিয় সিনেমার উপজীব্য ছিল। তাঁর জন্মদিনে স্কুলপড়ুয়াদের মনেও সেই পুরনো ভারতের ছোঁয়া।

Advertisement

ঋজু বসু

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২২ ০৮:০২
Share:

সোমবার শিশু দিবসে শহরের শৈশবের রং যেন পাল্টে দিয়েছে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘দোস্তজী’। ফাইল চিত্র।

স্কুলের মাঠে পর্দা খাটিয়ে বা ক্লাসঘরে ভিডিয়ো ক্যাসেটে হাঁ করে সিনেমা দেখেছে খুদেরা। সাদা-কালো বিয়াল্লিশ’, ‘সুভাষচন্দ্র’ থেকে ‘হীরক রাজার দেশে’র যুগ পেরিয়েও নানা সিনে-স্মৃতির ছড়াছড়ি। ‘কোনি’ থেকে লায়ন কিং’-এর টানে স্যর-ম্যাডামদের সঙ্গে গোটা ক্লাসের সিনেমা হল অভিযানও একদা আকছার ঘটত! আজকের স্কুলপডুয়াদের জন্য তেমনই আস্বাদ ফিরে ফিরে আসছে!

Advertisement

বহু বছর বাদে একটি বাংলা ছবির টানে শতাধিক ছাত্রীর জন্য শো বুক করতে হয়েছে বেহালার অজন্তায়, নন্দনে চোখে পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে স্কুলপোশাকের হুটোপাটি। কল্যাণীর সঙ্গম থেকে ব্যারাকপুরের অতীন্দ্রেও দর্শককুলে ছোটদের পাল্লা ভারী। বেহালা গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কাবেরী চট্টোপাধ্যায় বলছিলেন, “করোনাকালের পরে স্কুল খুললেও অনেক দিন বাদে মেয়েরা এত খুশি। কত বছর ছাত্রীদের এক্সকারশন হয়নি। ছোটদের দেখার মতো ছবিই বা ক’টা আসে!”

আজ, সোমবার শিশু দিবসে শহরের শৈশবের রং যেন পাল্টে দিয়েছে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘দোস্তজী’। সম্প্রতি একটি বিশেষ শোয়ে ছবিটি দেখেছেন বেশ কয়েকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা। টালমাটাল করোনাকালের পরে ছোটদের চিরন্তন শৈশবের সজীবতা ফেরানোর চেষ্টায় তাঁরা অনেকেই নতুন দিশা পাচ্ছেন।

Advertisement

মিত্র ইনস্টিটিউশন (মেন) স্কুলের প্রধান শিক্ষক সায়ন্তন দাস বলছিলেন, “কোভিডের বন্দি-জীবনের জড়তা শিশুমনেও ছাপ ফেলেছে। একটা সিনেমায় গ্রামের শৈশবের মুক্তির স্বাদ চেনাতে পেরে আমরা ধন্য। সেই সঙ্গেজাত-ধর্মের ঊর্ধ্বে বন্ধুতার রং চেনানোর কথাগুলোও আজকের ছোটদের নতুন করে শেখানোর দরকার রয়েছে।”

ব্যারাকপুরের ডগলাস মেমোরিয়াল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সোনিয়া গিডলারের কথায়, “চার পাশে বিদ্বেষের নানা উস্কানি শিশুমনে প্রভাব ফেলে। কার পাশে বসব, অমুকের পাশে বসব না গোছের ধারণা ছোটদের মন থেকে তাড়াতে ভাল সিনেমা কাজে আসতে পারে!” স্পেশ্যাল এডুকেটর সুতপা দত্ত সেরিব্রাল পলসিতে আক্রান্ত খুদেদেরও ‘দোস্তজী’ দেখাতে নন্দনে আনছেন।

সিনেমার মাধ্যমে ছোটদের পরিবেশ সচেতনতা, লিঙ্গ সাম্যবোধ বা সম্প্রীতির মন তৈরির কাজে অনেক দিনের শরিক ‘পিপলস ফিল্ম কালেক্টিভ’ বলে একটি উদ্যোগ। ‘লিটল ফিল্মস’ নামে ছক-ভাঙা স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবির ডালি নিয়ে তারাও সুবিধা-বঞ্চিত শিশুদের কাছে পৌঁছে যায়। উদ্যোগটির অন্যতম কর্মকর্তা দ্বৈপায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় বলছিলেন, “পপুলার কালচারে নানা ভাবে ছোটদের মন বিষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা থাকে। ছোটদের অনাবিল বন্ধুতা, ভালবাসার সিনেমা তাই খুবই জরুরি।”

প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর আমলে জাত-ধর্মের ঊর্ধ্বে সবাইকে নিয়ে চলার মূল্যবোধই জনপ্রিয় সিনেমার উপজীব্য ছিল। তাঁর জন্মদিনে স্কুলপড়ুয়াদের মনেও সেই পুরনো ভারতের ছোঁয়া।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement