প্রতীকী ছবি।
স্কুল বন্ধ থাকায় গত এপ্রিল থেকে কোনও আয় নেই কলকাতা এবং সংলগ্ন তিন জেলার প্রায় তিন হাজার বৈধ স্কুলগাড়ি এবং স্কুলবাস মালিকের। এই অবস্থায় আগামী অগস্ট পর্যন্ত স্কুল বন্ধ থাকার নির্দেশিকা জারি হওয়ায় জীবিকার সংস্থান নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে তাঁদের।
স্কুলের জন্য বরাদ্দ কনট্র্যাক্ট ক্যারেজের গাড়ি বিশেষ পারমিট ছাড়া অন্যত্র ভাড়ায় দেওয়া যায় না বলে অনেকেই বিকল্প আয়ের সংস্থান করতে পারছেন না বলে অভিযোগ। তাঁরা জানান, আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরেও স্কুলগাড়ির চালক এবং সহকারীর বেতন ছাড়া কর এবং বিমার টাকাও তাঁদের নিয়মিত মিটিয়ে যেতে হচ্ছে। বেশ কিছু স্কুলবাসের ক্ষেত্রে মহিলা অ্যাটেনডেন্ট রাখাও বাধ্যতামূলক। ফলে তাঁদের বেতনও মেটাতে হচ্ছে স্কুলবাস মালিকদেরই।
সরকারি-বেসরকারি ব্যাঙ্ক এবং বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে যাঁরা গাড়ি কিনেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে কিস্তির টাকা নিয়মিত মেটানোর চাপও রয়েছে। সরকারি ঘোষণা সত্ত্বেও বহু আর্থিক সংস্থা কিস্তি মকুব না করায় চাপ আরও বেড়েছে ওই সব স্কুলবাস এবং স্কুলগাড়ির মালিকদের। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই লকডাউন পর্বের ভাড়া আদায় করতে গিয়ে তাঁদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলেও অভিযোগ।
স্কুল বন্ধ থাকায় অভিভাবকেরা ন্যুনতম ৫০ শতাংশ ভাড়াও মেটাতে চাইছেন না বলে অভিযোগ পুলকার সংগঠনগুলির। পাশাপাশি, স্কুলের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক বন্দোবস্ত থাকা বাসমালিকদেরও অনেক ক্ষেত্রে অন্তত ৫০ শতাংশ ভাড়ার টাকাও মিলছে না বলে অভিযোগ।
পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ দত্ত বলেন, ‘‘যে ধরনের অনটনের মধ্যে দিয়ে স্কুলগাড়ির মালিকদের যেতে হচ্ছে তাতে স্কুল খোলার পরে কত জন গাড়ি রাস্তায় নামানোর অবস্থায় থাকবেন তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।’’ বালি পুলকার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক মদন জানা বলেন, ‘‘অভিভাবকদের কাছে ভাড়ার কিছু অংশ দেওয়ার আবেদন জানিয়ে কোনও ফল হয়নি। অন্যত্র গাড়ি ভাড়া খাটানোর উপায় নেই। তাই গাড়ি চালিয়ে যাঁদের সংসার চলে, তাঁরা সঙ্কটে পড়েছেন।’’
স্কুলবাসের সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল কনট্র্যাক্ট ক্যারেজ ওনার্স অ্যান্ড অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হিমাদ্রি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চালক-সহকারীর বেতন এবং কর মেটাতে গিয়ে মাসে প্রায় পঁচিশ হাজার টাকা খরচ হলেও কোনও আয় না থাকায় সমস্যা বাড়ছে।’’ তাঁরা জানান, তাঁদের সংগঠনের অধীনে থাকা হাতে গোনা কয়েকটি বাস পুরসভার জরুরি বিভাগের কর্মীদের বাড়ি থেকে আনা-নেওয়ার কাজ করলেও বেশির ভাগই বসে রয়েছে। খরচ চালাতে তাই বিকল্প আয়ের খোঁজ করছেন বেশির ভাগ স্কুলবাস মালিক।