-ফাইল চিত্র।
করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে স্কুল। তাই বেসরকারি স্কুলগুলিকে ফি কাঠামো পুনর্গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। কিন্তু তা ঠিক ভাবে স্কুলগুলি মানছে না। এমন অভিযোগ জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে এ বার স্মারকলিপি জমা দিতে চলেছে বেসরকারি স্কুলের অভিভাবকদের সংগঠন ‘ইউনাইটেড গার্ডিয়ান্স অ্যাসোসিয়েশন’। সংগঠনের আহ্বায়ক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, আগামী ২৭ নভেম্বর শিক্ষামন্ত্রীর বাড়ি গিয়ে তাঁরা স্মারকলিপি জমা দেবেন। সেই সঙ্গে সরকারের তরফে শিক্ষামন্ত্রীকে বিষয়টি হস্তক্ষেপ করারও অনুরোধ করবেন তাঁরা।
অভিভাবকদের অভিযোগ ছিল, করোনার মধ্যেও বেসরকারি স্কুলগুলি এমন কিছু পরিষেবা বাবদ ফি নিচ্ছে যা পড়ুয়ারা এখন পাচ্ছে না। এই অভিযোগে এক অভিভাবক মামলাও করেন হাইকোর্টে। গত ২১ জুলাই থেকে সেই মামলা চলেছিল। অবশেষে ১৩ অক্টোবর বেসরকারি স্কুলের ফি কাঠামো কী হবে সেই সংক্রান্ত রায় দেয় হাইকোর্ট।
অভিভাবকদের সংগঠনটির অভিযোগ, হাইকোর্টের রায় ঠিক মতো মানছে না অনেক বেসরকারি স্কুলই। সুপ্রিয়বাবু বলেন, “হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে স্কুলগুলি ‘নন এসেনশিয়াল ফি’ নিতে পারবে না। অনেক স্কুলই সেটা মানছে না। ‘এসেনশিয়াল ফি’-এর নাম করে ‘নন এসেনশিয়াল ফি’ নিচ্ছে।” সুপ্রিয়বাবুর দাবি, স্কুল না খোলা পর্যন্ত কুড়ি শতাংশ ছাড় সব পড়ুয়ার পাওয়ার কথা। যাঁরা তারও বেশি ছাড় চান, সেই সব অভিভাবকদেরই স্কুল কর্তৃপক্ষকে চিঠি লেখার কথা। অথচ অনেক স্কুল ছাড়ের জন্য সব অভিভাবকদেরই চিঠি দিতে বলছে।
আরও পড়ুন: কাজ হারিয়ে ‘আত্মঘাতী’ যুবক
এমনকি কবের মধ্যে তা দিতে হবে, সেই নির্দিষ্ট সময়ও বলে দেওয়া হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, “করোনা পরিস্থিতির কারণে বহু অভিভাবকেরই বেতন কমে গিয়েছে। অনেকের চাকরি নেই। এই অবস্থায় স্কুলগুলি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি দেখছে না। এ রকম চলতে থাকলে মাঝপথে ছেলেমেয়েদের স্কুল ছাড়াতে বাধ্য হবেন অনেক বাবা-মা। তাতে সন্তানদের পড়াশোনার ক্ষতির আশঙ্কা থাকলেও তাঁদের সেই পথে যেতে হবে।”
যদিও বেসরকারি স্কুলগুলি অভিভাবকদের এই অভিযোগ মানতে নারাজ। সম্প্রতি আইসিএসই, সিবিএসই অনুমোদিত বেসরকারি স্কুলগুলি একটি নতুন সংগঠন তৈরি করেছে। তার তরফে দাবি করা হয়েছে, সব বেসরকারি স্কুলই হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে ফি পুনর্গঠন করেছে। কিছু স্কুলের শিক্ষকদের আবার অভিযোগ, অনেক অভিভাবকই কোনও ফি দিচ্ছেন না।
আরও পড়ুন: সাবওয়ে এড়িয়ে রাস্তা পারাপার চলছেই বাইপাসে
এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ‘অ্যাসোসিয়েশন অব দ্য স্কুল ফর দ্য আইএসসি’–র সর্বভারতীয় সভাপতি সুজয় বিশ্বাস বলেন, “অনেক স্কুলেরই অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ হয়ে পড়েছে। স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রে এমনকি শিক্ষকদের বেতন দিতেও বহু ক্ষেত্রে অসুবিধা হয়ে যাচ্ছে।”