n সতর্কতা: কোভিড-বিধি মেনে চলছে অল্প কিছু স্কুলবাস। নিজস্ব চিত্র
স্কুল চালু হলেও করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা কাটেনি। তাই গণপরিবহণে চাপিয়ে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন অভিভাবকদের অনেকেই। আবার অভিভাবকদের অনেকে জানাচ্ছেন, তাঁরা সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে চান। কিন্তু স্কুলবাস না চলায় তাঁরা তা করতে পারছেন না।
অভিভাবকদের একাংশ জানাচ্ছেন, নিজস্ব বাস নেই, এমন স্কুলের পড়ুয়াদেরই সব চেয়ে বেশি অসুবিধা হচ্ছে। ভিআইপি রোডের কৈখালি এলাকার একটি আবাসনের বাসিন্দা এক অভিভাবক মধুরিমা বসু জানান, তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে। মেয়ের স্কুলের নিজস্ব বাস নেই। অভিভাবকদের ঠিক করা বাসেই মেয়ে যাতায়াত করে। কিন্তু সেই বাসে ছাত্রী কম হচ্ছে বলে বাস চালাচ্ছেন না বাসমালিক। তাই ইচ্ছা থাকলেও তিনি মেয়েকে স্কুলে পাঠাতে পারছেন না।
স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য বাস না চলায় বেশ কিছু পড়ুয়া স্কুলে আসতে পারছেন না বলে জানালেন রামমোহন মিশন স্কুলের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাস। সুজয়বাবু বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের নিজস্ব বাস নেই। দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস করতে নিজস্ব গাড়ি কিংবা গণপরিবহণ ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে। কিন্তু নবম বা একাদশ শ্রেণির অনেক পড়ুয়াই বাস না চলায় আসছে না।’’
অবশ্য এই প্রসঙ্গে ওয়েস্ট বেঙ্গল কনট্র্যাক্ট ক্যারেজ ওনার্স অ্যান্ড অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের পাল্টা প্রশ্ন, এত কম পড়ুয়া নিয়ে কী ভাবে বাস চলবে? সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিমাদ্রী গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কলকাতা ও বৃহত্তর কলকাতায় আমাদের সংগঠনের চার হাজারের মতো বাস চলে। চার হাজারের মধ্যে ৭০০ মতো স্কুলবাস চলছে। বাসে পড়ুয়ার সংখ্যা এতই কম যে সবাই বাস চালাতে সক্ষম হচ্ছেন না। আমরা তাই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে স্মারকলিপি দিয়ে জানাচ্ছি যাতে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খোলা হয়। তা হলে কিছু বেশি পড়ুয়া বাসে যাবে।’’
বাসে না পোষানোয় ছোট গাড়িতে পড়ুয়াদের নিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান এক স্কুলবাসের মালিক বিপ্লব সরকার। বিপ্লববাবু বলেন, ‘‘আমার দু’টি বাস ও কয়েকটি ছোট গাড়ি বৌবাজারের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে যাতায়াত করে। ওই স্কুলে এখন শুধু দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারাই যাচ্ছে। মাত্র কয়েক জন পড়ুয়ার জন্য বাস বার না করে ছোট গাড়িতে কাজ চালাচ্ছি। তবে পঞ্চম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলপড়ুয়ারা যেতে শুরু করলে আমাদের কিছুটা সুরাহা হবে।’’
তবে যে সব স্কুলের নিজস্ব বাস রয়েছে, তাদের পড়ুয়াদের সমস্যা নেই বলেই দাবি কর্তৃপক্ষদের। সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি বলেন, ‘‘আমাদের নিজস্ব স্কুলবাস রয়েছে। তাই আমরা স্কুলবাসের ভাড়া ঠিক সময়েই দিয়ে দিই। তাই যে সব পড়ুয়া স্কুলবাসে আসতে চায় তারা সবাই স্কুলবাসেই আসছে।’’
তবে স্কুলের নিজস্ব বাসই হোক বা অভিভাবকদের ঠিক করা স্কুলবাস, মালিকেরা জানাচ্ছেন, বাসচালক ও তাঁর সহকারী কোভিড-বিধি মেনেই চলছেন। চালক ও সহকারীরা মাস্ক তো পরছেনই, অনেকে ফেসশিল্ডও ব্যবহার করছেন। বাসে ওঠার আগে পড়ুয়ারা হাত স্যানিটাইজ় করে বাসের আসনে বসছে।