sanjit das

পাথর ছোড়া নিয়ে তাচ্ছিল্য, থেঁতলে খুন যুবককে

গত সোমবার ভোরে ই এম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালের কাছে সার্ভিস রোডের ফুটপাত থেকে এক যুবকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২১ ০২:৪২
Share:

প্রতীকী ছবি।

গুলি নয়, পাথর দিয়ে মুখ ও মাথা থেঁতলেই খুন করা হয়েছে সঞ্জিত দাস নামে সল্টলেকের দত্তাবাদের বাসিন্দা যুবককে। এই ঘটনায় রবি দত্ত ওরফে ছোটকা এবং মন্টু দাস নামে দু’জনকে গ্রেফতার করার পরে বুধবার সকালে এই কথা জানিয়েছে পুলিশ। খুনের কারণ হিসেবে মত্ত অবস্থায় বিবাদের কথাও উল্লেখ করেছেন তদন্তকারীরা। ধৃতদের মধ্যে এক জন খুনের ঘটনা স্বীকার করে নিয়েছে বলে পুলিশের দাবি।

Advertisement


গত সোমবার ভোরে ই এম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালের কাছে সার্ভিস রোডের ফুটপাত থেকে এক যুবকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। এলাকাটি ফুলবাগান থানার অন্তর্গত হওয়ায় সেখানকার পুলিশ গিয়ে দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠায়। তদন্তে জানা যায়, ওই যুবকের নাম সঞ্জিত দাস। সল্টলেকের দত্তাবাদ এলাকায় তাঁর বাড়ি। আগে তিনি ই এম বাইপাসেরই একটি শপিং মলে কাজ করতেন। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে তিনি কর্মহীন ছিলেন। যেখানে মৃতদেহটি পড়ে ছিল, তার থেকে বেশ কিছুটা দূর পর্যন্ত রক্তের দাগ দেখতে পান তদন্তকারীরা।


ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট পাওয়ার পরে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে ধোঁয়াশা আরও বাড়ে। দেহের ময়না-তদন্তের পরে প্রথমে রিপোর্ট জানাতে চাননি চিকিৎসকেরা। দেহটি যেখান থেকে উদ্ধার হয়েছিল, সেই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান তাঁরা। এর পরে‌ দেহটি কী ভাবে পড়ে ছিল, তা খতিয়ে দেখে ওই
চিকিৎসকদের ধারণা হয়, সঞ্জিতকে গুলি করে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। পৃথক কোনও জায়গায় খুনের পরে দেহটি ই এম বাইপাসের ওই জায়গায় ফেলা হয়েছে বলেও তাঁদের মনে হয়। কিন্তু দেহের মধ্যে থেকে কোনও গুলি উদ্ধার হয়নি।

Advertisement


তদন্তের পরে পুলিশ যদিও জানিয়েছে, গুলির ব্যবহার এ ক্ষেত্রে হয়নি। পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করা হয়েছে সঞ্জিতকে। পুলিশের অনুমান, রাতে ফিরবেন বলে রবিবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন সঞ্জিত। অনেক রাতেও তিনি না ফেরায় আশপাশে খোঁজাখুঁজি করেন তাঁর বাড়ির লোকজন। সোমবার ভোরে উদ্ধার হয় সঞ্জিতের মৃতদেহ। এর পরে ঘটনাস্থলের আশপাশের বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে একটি সিসি ক্যামেরার
ফুটেজও পাওয়া যায়। তাতে দেখা যায় দু’জন ফুটপাতে এনে শুইয়ে রাখছে সঞ্জিতের দেহ। ওই ফুটেজে পাওয়া ছবির ভিত্তিতেই মঙ্গলবার রাতে দত্তাবাদেরই বাসিন্দা মন্টুকে আটক করে পুলিশ। জেরায় সে-ই খুনের কথা স্বীকার করেছে বলে তদন্তকারীদের দাবি। মন্টুই এর পরে ফুলবাগানের শিবকৃষ্ণ দাঁ লেনের বাসিন্দা রবির নাম বলে পুলিশকে।


মন্টু পুলিশকে জানায়, প্রায়ই তাদের আড্ডা বসত দত্তাবাদের কাছেই একটি ভেড়ির ধারে। রবিবার রাতেও সেই আড্ডা বসেছিল। মত্ত অবস্থায় রাস্তা দিয়ে যাওয়া গাড়ির দিকে পাথর ছুড়ছিল তারা। পুলিশের দাবি, মন্টু জানিয়েছে, একটি গাড়িতে পাথর মারতে ব্যর্থ হওয়ায় সঞ্জিত তাকে নিয়ে মজা করতে শুরু করে। মন্টুর আরও দাবি, সব সময়েই সঞ্জিত তাকে তাচ্ছিল্য করত। তাই ওই রাতে রাগের মাথায় সে পাথর দিয়েই সঞ্জিতকে মারতে শুরু করে। কিন্তু আঘাত এত গুরুতর হবে, তা সে বুঝতে পারেনি বলে মন্টু দাবি করেছে তদন্তকারীদের কাছে‌। পুলিশ জানিয়েছে, রবিও জেরায় একই দাবি করেছে। তদন্তকারীরা জানান, ঘটনার পরে দু’জনে মিলে দেহটি ই এম বাইপাসের ধারের ওই হাসপাতালের কাছে শুইয়ে রেখে যায়।


পুলিশের কাছে রবি দাবি করেছে, কেউ দেখতে পেলে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাবেন, এই ভেবেই সঞ্জিতের দেহ তারা হাসপাতালের কাছে রেখে আসে। এ দিন আদালতে দু’জনকেই হেফাজতে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement