সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিলেন আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
সোমবার সকালে আবার সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিলেন আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। এই নিয়ে চতুর্থ বার সিবিআই দফতরে হাজিরা দিলেন তিনি। সোমবারও বেশ কিছু নথি নিয়ে দফতরে ঢুকতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। সাংবাদিকদের কোনও প্রশ্নের উত্তর দেননি সন্দীপ। কেন বার বার সন্দীপকে তলব করা হচ্ছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
আরজি করে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় সন্দীপকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই। গত বৃহস্পতিবার তাঁকে তলব করা হয়েছিল। সে দিন হাজিরা দেননি। শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টে সন্দীপের আইনজীবী জানিয়েছিলেন, তিনি নিরাপত্তার অভাবে ভুগছেন। পর্যাপ্ত নিরাপত্তার আবেদনও জানিয়েছিলেন। এর পর ওই দিনই রাস্তা থেকে সিবিআইয়ের গাড়িতে ওঠেন সন্দীপ। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় সিজিও কমপ্লেক্সে। তার পর থেকে প্রতি দিনই তাঁকে তলব করা হয়েছে। রবিবার প্রায় সাড়ে ১৩ ঘণ্টা সন্দীপকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। গভীর রাতে তিনি বাড়ি ফিরেছিলেন। রাতে তাঁর বাড়ির সামনে আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাতে জমায়েতও হয়েছিল। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ আবার সিবিআই দফতরে পৌঁছেছেন সন্দীপ।
আরজি করে সন্দীপ অত্যন্ত প্রভাবশালী বলে অভিযোগ। মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর থেকে সেখানে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, তাতে চিকিৎসক থেকে পড়ুয়া, সকলের অন্যতম দাবি ছিল সন্দীপের অপসারণ কিংবা পদত্যাগ। আন্দোলনের চাপে পড়ে সোমবার, ১২ অগস্ট পদত্যাগ করেন সন্দীপ। স্বাস্থ্য দফতরে গিয়ে নিজের পদত্যাগপত্র জমাও দেন। কিন্তু তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সন্দীপকে কলকাতার অন্য একটি সরকারি হাসপাতালের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ করে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। সেখান থেকেও তাঁর অপসারণের দাবিতে শুরু হয় আন্দোলন। এর মাঝে মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, সন্দীপকে লম্বা ছুটিতে যেতে। সেই থেকে ছুটিতেই আছেন সন্দীপ।
হাই কোর্টের নির্দেশেই আরজি করের ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। ইতিমধ্যে হাসপাতালের চিকিৎসক, পড়ুয়া এবং একাধিক আধিকারিককে তারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এবং প্রত্যেকের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে।
সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীনই সমাজমাধ্যম এবং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তাঁকে নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়ে আদালতে মামলা করেছেন সন্দীপ। সূত্রের খবর, সে দিনের ঘটনাপ্রবাহ প্রসঙ্গে একাধিক প্রশ্ন করা হচ্ছে সন্দীপকে। আরজি করে দেহ উদ্ধারের পর সেই সেমিনার হলের পাশের একটি ঘরের দেওয়াল ভেঙে ফেলা হয় সংস্কারের নামে। অভিযোগ, এ ক্ষেত্রেও সন্দীপের নির্দেশ থাকতে পারে। কেন তড়িঘড়ি সংস্কারের কাজ শুরু করা হল, তা নিয়ে সন্দেহপ্রকাশ করেছেন অনেকে। সে বিষয়েও সন্দীপকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা।