আরজি করের সামনে ভাঙচুরের ঘটনায় হামলাকারীদের ছবি প্রকাশ করেছিল পুলিশ। ছবি: এক্স।
আরজি কর হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন মোট ৩৭ জন। এমনটাই জানা গিয়েছে লালবাজার সূত্রে। সেই সঙ্গে আরজি কর-কাণ্ডে আরও এক চিকিৎসককে নোটিস দিয়েছে পুলিশ। তাঁকে লালবাজারে তলব করা হয়েছে। হাজিরা দিতে বলা হয়েছে সোমবারেই। সমাজমাধ্যমে ভুল বা অনৈতিক তথ্য প্রচারের জন্য তাঁকে ডাকা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
আরজি করের ঘটনা প্রসঙ্গে এর আগে দু’জন চিকিৎসককে তলব করে লালবাজার। চিকিৎসক কুণাল সরকার এবং সুবর্ণ গোস্বামীকে রবিবার ডাকা হয়েছিল। তাঁরা সোমবার হাজিরা দেবেন বলে জানিয়েছেন। তবে তাঁরা একা যাবেন না। সতীর্থ চিকিৎসকেরা মিছিল করে তাঁদের কলকাতা পুলিশের সদর দফতর পর্যন্ত পৌঁছে দেবেন। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে লালবাজার পর্যন্ত হবে সেই মিছিল। সঙ্গে থাকবেন ওই দুই চিকিৎসকের আইনজীবীরাও। এর পর মেডিক্যাল কলেজের সামনে ওই দু’জনের ফেরার অপেক্ষায় অবস্থানে বসার কথা সতীর্থ চিকিৎসকদের।
আরজি করে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর সমাজমাধ্যমে এই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে নানা তথ্য ছড়াচ্ছে। অনেকাংশেই যা ভিত্তিহীন বলে অভিযোগ। কলকাতা পুলিশ প্রথম থেকে ভুয়ো তথ্যের বিরুদ্ধে প্রচার করছে। সাংবাদিক সম্মেলন করে পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলও প্রমাণ ছাড়া তথ্য সমাজমাধ্যমে পোস্ট না করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। ভিত্তিহীন তথ্য ছড়ালে আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, ঘটনার পর অনেকেই সমাজমাধ্যমে নির্যাতিতা তরুণীর নাম এবং ছবি প্রকাশ করেছেন, যা আইনবিরুদ্ধ। সে বিষয়েও সতর্ক করেছিলেন বিনীত। তার পরেই রাজ্যের দুই চিকিৎসককে তলব করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধেও অনুরূপ অভিযোগ রয়েছে।
নির্যাতিতার নাম প্রকাশের অভিযোগে বিজেপি নেত্রী তথা প্রাক্তন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কেও তলব করেছিল পুলিশ। সোমবার ডাকা হল আরও এক চিকিৎসককে।
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে গত ১৪ অগস্ট শহর জুড়ে মেয়েদের ‘রাত দখল’ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। আরজি কর হাসপাতাল চত্বরে সেই কর্মসূচি চলাকালীন এক দল দুষ্কৃতী হামলা চালায় বলে অভিযোগ। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর করা হয়। যদিও ঘটনাস্থল অক্ষত রয়েছে বলে জানিয়েছিল পুলিশ। এই ঘটনার দায় সিপিএম, বিজেপির মতো বিরোধী দলগুলির উপর চাপিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছিলেন, হামলাকারীদের হাতে বাম যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের পতাকা দেখা গিয়েছে। যাঁরা জাতীয় পতাকা নিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের বিজেপি সমর্থক বলে চিহ্নিত করেন মমতা। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, হাসপাতালের বাইরে ডিওয়াইএফআইয়ের পতাকা থাকলেও ভিতরে তার প্রমাণ মেলেনি। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কেও তলব করেছে লালবাজার।