শিল্টন পাল। নিজস্ব চিত্র।
আমি খেলাধুলোর জগতের মানুষ। রাজনীতির বিষয়ে মাথা গলাই না। তবে আমার একটা সামাজিক পরিচিতি রয়েছে। তার জন্য নিজের বসবাসের এলাকার প্রতি একটা দায়বদ্ধতাও আছে। যেটা আমি কখনওই এড়িয়ে যেতে চাই না। গত ১৫-১৬ বছর ধরে আমি বাগুইআটির বাসিন্দা। সেই অর্থে আমিও বিধাননগর পুরসভার এক জন ভোটার তথা নাগরিক।
একটা বিষয় আমার খুব মনে হয়, বিধাননগর পুরসভা মানে শুধুই সল্টলেক নয়। বাগুইআটি, কেষ্টপুর, জগৎপুরের মতো রাজারহাট-গোপালপুর এবং রাজারহাট-নিউ টাউনের একটি বিস্তীর্ণ এলাকাও এই পুরসভার অধীনে। সেখানেও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা রয়েছে। কিন্তু আমরা প্রতিনিয়ত যে দু’-একটি সমস্যার মুখোমুখি হই, সেগুলি নিয়েই বলতে চাই।
অতীতে আমাদের বাগুইআটি এলাকা দীর্ঘ দিন রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার অধীনে ছিল। তখনও দেখেছি, এখানকার রাস্তা ভীষণ অপরিসর। রাস্তার ধারে বড় বড় বিদ্যুতের খুঁটি। মাথার উপর দিয়ে গিয়েছে বিদ্যুতের তার। রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভা বিধাননগর পুরসভার অধীনে চলে আসার পরেও সেই সমস্যার সমাধান হয়নি।
তাই রাস্তাগুলির আরও উন্নয়নের প্রয়োজন। একটা শহরের উন্নয়নে রাস্তার ভূমিকা অনেকটাই। তবে সব রাস্তাই যে খারাপ, সে কথা বলব না। আগের চেয়ে রাজারহাট-গোপালপুর এলাকার রাস্তাঘাট এখন অনেক ভাল। তবে কোনও কোনও এলাকায় রাস্তার অবস্থা বেশ খারাপ। সেই সব রাস্তার সংস্কার একান্ত প্রয়োজন।
আর একটা সমস্যা হল, একেই এলাকার রাস্তাগুলি সরু। তার উপরে বিদ্যুতের খুঁটির জন্য অনেক জায়গায় তা আরও অপরিসর হয়ে গিয়েছে। ফলে বড় গাড়িতে করে যাওয়ার সময়ে উল্টো দিক থেকে অন্য গাড়ি এসে গেলে বেরোতে খুব সমস্যা হয়। সরু রাস্তায় গাড়ি কিংবা রিকশার ধাক্কায় দুর্ঘটনা ঘটারও আশঙ্কা থাকে। প্রতিদিন বসতি বাড়ার কারণে রাস্তার এই সমস্যায় ভীষণ ভাবে ভুগতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। আমার মনে হয়, বিদ্যুতের খুঁটি না রেখে অন্য অনেক জায়গার মতো মাটির নীচ দিয়ে বিদ্যুতের তার নিয়ে যাওয়া হলে রাস্তাগুলি খানিকটা চওড়া হতে পারে। এতে যান চলাচলেও গতি আসবে। পথচারীরাও নিরাপদে যাতায়াত করতে পারবেন। আশা করব, নতুন পুরবোর্ড এই সমস্যার আশু সমাধানে নজর দেবে।
দ্বিতীয় যে সমস্যার কথা বলব, তা হচ্ছে খাল সংস্কার। আমাদের বাগুইআটি অঞ্চলের পিছন দিক দিয়ে একটি খাল গিয়েছে। সেই খাল এবং তার চারপাশের পরিস্থিতি ভয়াবহ। খালটি পুরোপুরি বুজে গিয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশও এর দায় এড়াতে পারেন না। তাঁরা ইচ্ছেমতো আবর্জনা খালে ফেলেন। এই বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে সরকারি উদ্যোগেই। পাশাপাশি খালটির সংস্কার দ্রুত প্রয়োজন। খাল বুজে যাওয়ায় এলাকায় দিন দিন বাড়ছে মশার উপদ্রব। আর ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার প্রকোপ তো আছেই। আমাদের দিকে এটা খুব বড় একটা সমস্যা।
একই সঙ্গে হাল ফেরাতে হবে খালধারের পরিবেশেরও। সেই রাস্তায় পড়ে থাকে নির্মাণ সামগ্রী। সল্টলেকের পাশ দিয়ে কেষ্টপুর খাল গিয়েছে। ওই খালের দু’ধারে সৌন্দর্যায়ন হয়েছে। ফলে কেষ্টপুর খালটিকে এখন আর খাল বলে ততটা মনে হয় না, যতটা আমাদের এলাকার খালটিকে মনে হয়। এই খালের জন্য বাগুইআটি সংলগ্ন বহু এলাকা বর্ষায় জলমগ্ন হয়ে পড়ে। তাতে দুর্ভোগ আরও বাড়ে। আমি মনেপ্রাণে চাইব, নতুন পুরবোর্ড এই সব সমস্যা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।