প্রচার: করোনা আটকাতে পুজোর থিমে প্রতিষেধক শিবির। শুক্রবার, বেহালায়। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
বিশ্বকর্মা পুজোয় করোনা সচেতনতার বার্তা দিলেন রিকশাচালকেরা। বেহালার এস এন রায় রোডে সাধুর আশ্রম মোড়ে বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজন করেন তাঁরা। সেখানেই করোনা সচেতনতার বার্তা দিলেন তাঁরা। মণ্ডপে দেখা গেল, চিকিৎসকরূপী বিশ্বকর্মা করোনার প্রতিষেধক দিচ্ছেন। গলায় স্টেথোস্কোপ। পাশে প্রতিষেধক নেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছেন সাধারণ মানুষ। হাতে কাগজের টোকেন। বসে থাকা এক নার্স সেই টোকেন মিলিয়ে দেখছেন। মণ্ডপের দেওয়ালে লেখা ‘মাস্ক ছাড়া প্রবেশ নিষেধ’। মণ্ডপে বাজানো হচ্ছে না মাইক বা বক্স।
উদ্যোক্তারা সকলেই রিকশা চালিয়ে সংসার চালান। তিল তিল করে জমানো টাকা দিয়েই আয়োজন করেন এই পুজোর। রিকশাচালক ইউনিয়নের সম্পাদক সুজিত ভান্ডারী বলেন, ‘‘গত দেড় বছর ধরে আমরা সকলেই অতিমারির দাপটে কাবু। অনেক কাছের মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। একমাত্র সচেতনতাই পারবে করোনাকে হারাতে। এ বছর মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই সমস্ত রকম বিনোদন বাদ রেখেছি আমরা।’’
শুক্রবার বিকেলে ওই মণ্ডপে গিয়ে দেখা গেল, সামনেই টেবিলে সাজানো মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার। দর্শনার্থীরা কেউ মাস্ক পরে না এলে তাঁদের দেওয়া হচ্ছে সেই মাস্ক। হাতে দেওয়া হচ্ছে স্যানিটাইজ়ার। রিকশা চালিয়ে দিন গুজরান করা সঞ্জিত মণ্ডল, সুকুমার মণ্ডল বা রোহিত মণ্ডলেরা সকলেই মাস্ক পরে ছিলেন। মেনে চলছিলেন দূরত্ব-বিধি। রোহিতের কথায়, ‘‘রিকশা চালানোর সময়ে প্রথমে মাস্ক পরে শ্বাস নিতে কষ্ট হত। এখন অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। সবাইকে বলছি, বাইরে বেরোলে মাস্কটা অবশ্যই পরুন।’’
রিকশাচালকদের ওই মণ্ডপে থিমের ঠাকুর গড়েছেন সুবোধ পাল। তিনি বললেন, ‘‘সাধারণত, বিশ্বকর্মার সঙ্গে শুধু তাঁর বাহন হাতিই মণ্ডপে থাকে। কিন্তু এখানে করোনার বার্তা দেওয়ার জন্য একাধিক মূর্তি তৈরি করতে একটু বেশি সময় লেগেছে। প্রায় এক মাস ধরে এই মণ্ডপ ও মূর্তি তৈরি করেছি।’’ এ দিন অবশ্য মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ভিড় করতে দেওয়া হয়নি। ভিড় হতে দেখলেই রিকশাচালকেরা দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়াতে বলেছেন।
প্রতি বছরের মতো এই পুজোর আয়োজনে শামিল হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা মানবেন্দ্র হাজরা। তাঁর কথায়, ‘‘করোনা দূর করতে মাস্ককে সঙ্গী করতেই হবে।’’