আর জি কর হাসপাতাল। ফাইল চিত্র
সরকারি হাসপাতালে সন্তান জন্মানোর পরে, বাড়ি ফেরার আগে মা পাবেন এক হাজার টাকা। যাতে বাড়ি গিয়ে মা ও নবজাতকের পরিচর্যায় সেই টাকা খরচ করা যায়। কিন্তু যে মায়েদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই, তাঁদের কী হবে? সমস্যা পর্যবেক্ষণ করে এ বার হাসপাতালেই তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করলেন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, যে মায়েদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই, সন্তান জন্মানোর পরে ছুটি পাওয়ার আগের দিন তাঁদের নথি ব্যাঙ্কে জমা করে ‘জ়িরো ব্যালান্স’ অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পুরো কাজই ব্যাঙ্কের সহযোগিতায় করে দেবেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গত ৫ জানুয়ারি শুরু হয়েছে এই ব্যবস্থা। গত শনিবার পর্যন্ত ৬০ জনের অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। হাসপাতালের তরফে এই পদক্ষেপকে বলা হচ্ছে ‘বেডসাইড অ্যাকাউন্ট ওপেনিং’, অর্থাৎ শয্যার পাশেই ব্যাঙ্কের খাতা খোলা। হাসপাতালের এক কর্তার কথায়, “যাঁদের অ্যাকাউন্ট নেই, তাঁরা ভীষণ সমস্যায় পড়ছিলেন। তাই হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার আগে আমরাই তাঁদের অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।’’
সূত্রের খবর, গত ডিসেম্বরে আর জি কর হাসপাতালে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এমন ৪৫৪ জন মায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। অন্য দিকে, প্রায় ৩০০ জনকে চেক দেওয়া হয়েছে। কারণ, তাঁদের নামে অ্যাকাউন্ট ছিল না। হাসপাতালের এক কর্তা জানাচ্ছেন, আগে সকলকেই চেকের মাধ্যমে এক হাজার টাকা দেওয়া হত। কিন্তু তাতে সমস্যা হল, যাঁরা দূর-দূরান্তে থাকেন তাঁরা হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে বাড়ি যাওয়ার পরে আর চেক নিতে আসতেন না। ফলে সেই চেক হাসপাতালেই পড়ে থাকত। ২০১৭ থেকে রাজ্যে শুরু হয়েছে এই ‘জননী সুরক্ষা’ প্রকল্প। হাসপাতালের অন্দরের খবর, ওই বছর থেকে শুরু করে ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৩০০টি করে চেক আর জি কর হাসপাতালেই পড়ে আছে। সূত্রের খবর, এর মূল কারণ হল, রোগীকে ছুটির সময়ে ওই চেক দেওয়া হত না। পরে নিতে আসার জন্য বলা হত। কিন্তু পরে অনেকেই আর আসতেন না।
হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান বিধায়ক সুদীপ্ত রায় বলেন, “বাড়ি ফিরেই যাতে মা ও সন্তানের পুষ্টিকর খাবারের বন্দোবস্ত হয়, তার জন্য ওই টাকা দেওয়ার প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু আর জি করে একটা সময়ে ছুটির পরে রোগীর পরিজনদের চেক নিতে আসার জন্য বলা হত। কেন এমন হত জানি না। তবে নতুন কর্তৃপক্ষ আসার পরে ঠিক হয়, রোগী ছুটি পাওয়ার দিনই চেক দিয়ে দেওয়া হবে।’’ সুদীপ্তবাবু আরও জানান, তার পরেও দেখা যাচ্ছিল, অনেকের নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই। তাই এ বার ব্যাঙ্কে খাতাও খুলে দেবে হাসপাতালই।