বাঁদিক থেকে- কণিষ্ক বিশ্বাস, শুভজিৎ রায়চৌধুরী এবং তন্ময় ঘোষ
ল্যাপটপের তাপ থেকে চার্জ দেওয়া যাবে ফোনে। উনুনের আঁচ থেকে জ্বালানো যাবে বাল্ব। এমনই এক আবিষ্কার করে ফেলেছেন তিন বাঙালি গবেষক। তাঁদের গবেষণাপত্র ইতিমধ্যেই ‘সায়েন্স’ ম্যাগাজ়িনে প্রকাশিত হয়েছে।
বেঙ্গালুরুর জওহরলাল নেহরু সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড সায়েন্টিফিক রিসার্চের (জেএনসিএএসআর) গবেষক-শিক্ষক কণিষ্ক বিশ্বাস এবং তাঁর দুই ছাত্র শুভজিৎ রায়চৌধুরী ও তন্ময় ঘোষ মিলে এই আবিষ্কার করেছেন।
কণিষ্ক জানালেন, তাঁদের এই গবেষণাটিকে বলে ‘থার্মো-ইলেকট্রিক এফেক্ট’। তাপকে বিদ্যুতে পরিণত করে ব্যবহারযোগ্য করে তোলা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা গাড়িতে যখন চাপি, তখন পেট্রল অথবা ডিজেল ৩০ শতাংশ পুড়ে গাড়িটি চালাতে সাহায্য করে। ডিজেল, পেট্রলের বাকি ৭০ শতাংশ গাড়ির এগজস্ট পাইপ দিয়ে তাপ আকারে বেরিয়ে যায়। এ রকমই তাপ বেরিয়ে যায় ফ্রিজ, ল্যাপটপ থেকে শুরু করে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র অথবা বিভিন্ন স্টিল প্লান্ট-সহ বহু জায়গা থেকে।’’ কণিষ্ক এবং তাঁর ছাত্রেরা ভাবছিলেন এই বর্জ্য তাপ কী ভাবে কাজে লাগানো যায়, তা নিয়ে। এর পরে গবেষণায় তাঁরা আবিষ্কার করেছেন একটি যৌগ (সিলভার অ্যান্টিমনি টেলুরাইড)। সেই যৌগ দিয়ে তৈরি একটি যন্ত্র যদি ল্যাপটপে লাগিয়ে দেওয়া যায় অথবা উনুনের পাশে ওই তাপকে বিদ্যুতে পরিণত করার জন্য লাগিয়ে দেওয়া যায়, তা হলে বিভিন্ন গ্যাজেটে চার্জ দেওয়া যাবে। জ্বালানো যাবে বাল্ব।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের ছাত্র কণিষ্ক পরে আইআইএসসি বেঙ্গালুরু থেকে স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি করেছেন। আইআইটি খড়্গপুরের রসায়নের ছাত্র শুভজিৎ পিএইচডি করেছেন জেএনসিএএসআরে, কণিষ্কের অধীনে। অন্য দিকে, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার ছাত্র তন্ময় পিএইচডি করেছেন এস এন বসু ন্যাশনাল সেন্টার ফর বেসিক সায়েন্সেস থেকে। এর পরে পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চ করেছেন কণিষ্কের অধীনে। এখন এই দু’জনই বিদেশে গবেষণায় ব্যস্ত। ইতিমধ্যেই এই আবিষ্কারের ভারতীয় পেটেন্ট করা হয়ে গিয়েছে। কণিষ্ক জানালেন, টাটা স্টিল থেকে ইতিমধ্যেই এই যন্ত্র ব্যবহারের জন্য আগ্রহ দেখিয়েছে।