নিজস্ব চিত্র
হাসপাতালের শুয়ে শুধু তাকিয়ে থাকতেন। কথা বলতে পারতেন না। দু’মাস ধরে তবু বাঁচার লড়াই ছাড়েননি কোভিড আক্রান্ত গণেশ প্রসাদ সিংহ। ৭০ দিন নিয়ত মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শনিবার আমরি হাসপাতাল থেকে ছুটি পেতে চলেছেন রাঁচির বাসিন্দা গণেশ। তার মধ্যে ৪২ দিন ছিলেন ভেন্টিলেটরে। চিকিৎসক সোহম মজুমদার বলেন, ‘‘এমন উদাহরণ নেই। অর্থাৎ এত দিন আইসিইউ-তে থেকে এ ভাবে সুস্থ হয়ে ফেরা নজিরবিহীন।’’
এখনও দুর্বল। কেউ না ধরলে উঠে দাঁড়াতে পারেন না। তবু বাবাকে বাঁচাতে পেরে হাতে চাঁদ পেয়েছেন ছেলে কুমার রাহুল। বলছেন, ‘‘এটা একটা যুদ্ধ জয় করলাম। বাবার লড়াইটা মানসিক ভাবে অনেক কঠিন ছিল। এতটা সময় একা থাকা, কথা বলতে না পারা, সব যন্ত্রণা বাবা সহ্য করেছেন। সেখান থেকে তাঁকে যে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারছি, সেটাই এই যুদ্ধ শেষে পাওনা।’’
৩০শে এপ্রিল করোনা আক্রান্ত হন গণেশ। রাঁচির পালস হাসপাতালে তিনি প্রথমে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা হয়। বাইপ্যাপ দেওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হয়। চিকিৎসকরা বলেন একমো সাপোর্ট দরকার। ফুসফুসের অবস্থা খারাপ। ২০ মে তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে কলকাতায় আনা হয়। ভর্তি করানো হয় আমরি হাসপাতালে। তখন তাঁর অক্সিজেন লেভেল ছিল ৫০। কোভিডের চিকিৎসা শুরু হয় আমরিতে। ৯ জুন পর্যন্ত টানা ১৯ দিন একমো সাপোর্টে রাখা হয় তাঁকে। সব মিলিয়ে তিনি ৪২ দিন ছিলেন ভেন্টিলেটরে। ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকেন তিনি।
চিকিৎসাবিজ্ঞান শেষ পর্যন্ত হাল ফেরায়। সুস্থ হয়ে ওঠেন গণেশ। তবে এখনও মাঝে মাঝে অক্সিজেনের দরকার পড়ছে তাঁর। চিকিৎসকরা বলছেন, গণেশ এখনও এখনও অল্প বিস্তর অসুস্থ রয়েছেন। ফিজিওথেরাপি চলছে। দুর্বলতা রয়েছে শরীরে। কাউকে ধরে দাঁড়াতে হচ্ছে। কিন্তু তাও বাবাকে বাড়ি ফেরাতে পেরে খুব খুশি ছেলে-বৌমা।