ফাইল ছবি
প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা সামনেই। অথচ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজগুলির বেশ কিছু পড়ুয়া এখনও রেজিস্ট্রেশন নম্বর পাননি। এই পরিস্থিতিতে ওই পড়ুয়াদের একটি বছর নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
চলতি শিক্ষাবর্ষে যাঁরা বিভিন্ন কলেজে প্রথম সিমেস্টারে ভর্তি হয়েছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্প্রতি আপলোড করা পড়ুয়াদের নামের তালিকায় তাঁদের অনেকেরই নাম নেই। অর্থাৎ তাঁদের রেজিস্ট্রেশন হয়নি। কিন্তু তাঁদের দাবি, কলেজের পড়ুয়া হিসেবে তাঁরা এত দিন অনলাইন ক্লাস করে গিয়েছেন। অনেক ছাত্রছাত্রীর বক্তব্য, তাঁরা রেজিস্ট্রেশনের বিষয়টি জানতেই পারেননি। অনেকের আবার দাবি, একাধিক কলেজে ভর্তি হয়ে কোন কলেজের নামে রেজিস্ট্রেশন করাবেন, তা-ই বুঝতে পারেননি।
করোনা পরিস্থিতিতে এ বার কলেজগুলিতে ভর্তি এবং রেজিস্ট্রেশন দু’টোই অনলাইনে হয়েছিল। অধ্যক্ষদের বক্তব্য, অনেক ছাত্রছাত্রীই সাইবার কাফে থেকে ভর্তির আবেদনপত্র জমা দেন। সেখানে তাঁদের মোবাইল নম্বর এবং ইমেল অনেক সময়েই ঠিক ছিল না। তাই নবাগত ছাত্রছাত্রীদের রেজিস্ট্রেশনের বিষয়ে জানিয়ে তাঁদের দিয়ে সেই কাজ সম্পন্ন করানোটাও কলেজ কর্তৃপক্ষদের পক্ষে দুরূহ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এখনও পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীরা খাতায়কলমে কেউ কলেজে আসেননি। অতিমারি পরিস্থিতির কারণে এখনও ক্যাম্পাস বন্ধ, অনলাইন ক্লাস চলছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আপলোড করা তালিকায় বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী তাঁদের নাম না দেখে সংশ্লিষ্ট কলেজ কর্তৃপক্ষকে সে কথা জানান। বেশ কয়েকটি কলেজ ওই পড়ুয়াদের জানিয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। গত মঙ্গলবার এবং বৃহস্পতিবার ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট ইউনিটি-র নেতৃত্বে প্রথম সিমেস্টারের ওই পড়ুয়ারা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) আশিস চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন। ওই ছাত্র সংগঠনের অন্যতম সদস্য সুব্রত খাটুয়া জানালেন, বৃহস্পতিবারও সহ-উপাচার্য জানিয়েছেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে জানালে ছাত্রদের এই সমস্যার সমাধান করে দেওয়া হবে। সুব্রত বলেন, ‘‘এই সমস্যা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত কলেজগুলির হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর। যদি এই সমস্যার সমাধান না হয়, তাহলে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাজীবনের একটা বছর পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে।’’
সুরেন্দ্রনাথ কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল কর জানালেন, বিশ্ববিদ্যালয় চেকলিস্ট আপলোডের পরে তাঁর কলেজের প্রায় একশো জন পড়ুয়ার ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে, তাঁরা ভর্তি হয়েছেন কিন্তু রেজিস্ট্রেশনের তথ্য আপলোড করেননি। তিনি বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় যদি কলেজগুলির অধ্যক্ষদের সঙ্গে আলোচনা করে পথ বার করে, তা হলে এই ছাত্রছাত্রীদের একটি বছর নষ্ট হওয়া আটকানো যাবে।’’ বেথুন কলেজের অধ্যক্ষা কৃষ্ণা রায় জানালেন, অনেক পড়ুয়া একাধিক কলেজে ভর্তি হয়েছেন। কিন্তু কলেজকে কিছু জানাননি আর রেজিস্ট্রেশনও হয়নি। এখন তাঁরা এসে বলছেন যে রেজিস্ট্রেশন নম্বর পাননি। এমন ঘটনা তাঁর কলেজেও ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিক নির্দেশ দেওয়া প্রয়োজন। অধ্যক্ষদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক বা দু’দিনের জন্য রেজিস্ট্রেশন পোর্টাল খুলে দিতে পারলে এই পড়ুয়াদের বছর নষ্ট হওয়া আটকানো সম্ভব হবে। তবে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্যের মতামত জানা যায়নি। তাঁকে ফোন এবং টেক্সট মেসেজ করা হলেও তার উত্তর আসেনি।