মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কাঁপা কাঁপা হাতে হলেও নবান্ন থেকে কালীঘাটের অনেকটা পথই স্কুটার চালালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গিয়েছিলেন ববি হাকিমের আরোহী হয়ে। কিন্তু ফেরার পথে গোটাটা মাঝের পথটুকু আরোহী হলেও শুরু ও শেষটা স্কুটার চালালেন। মুখে না বলে এই ই-স্কুটার ব্যবহারের মধ্য দিয়েই কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপি-কে বড় বার্তা দিয়েছেন তিনি। কিন্তু তার পরেও সরব হয়েছেন। বৃহস্পতিবার মমতা বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলেও ভারতে তা দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। দাম কী ভাবে বাড়ছে, কারা বাড়াচ্ছে, কত টাকা কী ভাবে যাচ্ছে তার পিছনে একটা বড় রহস্যের খেলা রয়েছে। সেই খেলা ঢাকার জন্যই মাঝে মাঝে নানা রকম মিথ্যে কথা বলে জনগণের সঙ্গে ছলনা করা হয়।’’
শুধু পেট্রল-ডিজেল নয়, রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার প্রতি দাম বৃদ্ধি নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘এই সরকার ক্ষমতায় আসার আগে গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম ছিল ৪০০ টাকা। মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই গ্যাসের দাম বেড়ে হয়েছে ৮২৫ টাকা। একটা বাড়িতে মানুষের ২টো সিলিন্ডার কমপক্ষে লাগে। দুটো গ্যাসের দামই যদি ১,৬৫০ টাকা হয় তবে সে বাজার করবে কী, খাবে কী? ছেলেমেয়ের পড়াশুনো চালাবে কী করে? রাস্তায় যাতায়াত করবে কী করে?’’ কেন্দ্রীয় বাজেটে কেরোসিনের উপর থেকে ভর্তুকি তুলে নেওয়ার অভিযোগ তুলে মমতা বলেন, ‘‘বিজেপি আজকে রান্নাঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। কেরোসিন তেলে ৪,০০০ কোটি টাকা ভর্তুকি প্রত্যাহার করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। শুধু মানুষের জীবনের দাম ছাড়া সব কিছুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে এই সরকার।’’
এ দিন মমতা দাবি তোলেন, রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার প্রতি দাম ৮২৫ টাকা থেকে কমিয়ে ৪০০ টাকা করতে হবে। বিজেপি-কে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘‘প্রতিদিন এক একটা করে নেতা আসছেন, আর একটা কথা বলেন না। পেট্রলের দাম কেন বাড়ল তার উত্তর নেই। ডিজেলের দাম কেন বাড়ল তার উত্তর নেই। এলপিজি-র দাম কেন বাড়ল তার উত্তর নেই। যা ইচ্ছে মিথ্যে কথা বলে যাচ্ছে।’’ একই সঙ্গে তিনি এই বিষয়টা নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বিজেপি বিরোধী বিভিন্ন দলকে সঙ্গে নেওয়ার ইঙ্গিত দিতে তিনি বলেন, ‘‘দাম অবিলম্বে কমাতে হবে। রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার প্রতি দাম ৮০০ টাকা থেকে ৪০০-য় ফিরিয়ে আনতে হবে। না ফেরালে আমরা কিন্তু বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।’’
মমতার এই আক্রমণকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘গোটা দেশেই পেট্রোপণ্যের দাম বেড়েছে। কিন্তু কোথাও কোনও অসুবিধা হচ্ছে না কারণ সেখানে মানুষের আয়ও বেড়েছে। এই রাজ্যে মানুষের আয় বৃদ্ধি না হওয়াতেই অসুবিধা। আর তার জন্য দায়ী তৃণমূল সরকার।’’