প্রতীকী চিত্র।
চালকের দিকের অংশ বলতে কিছুই অবশিষ্ট নেই। হেডলাইট, উইন্ডস্ক্রিন, স্টিয়ারিং— সব ভেঙে ভিতরের দিকে ঢুকে এসেছে। ইঞ্জিনও দুমড়ে গিয়েছে। চালকের পিছনে যাত্রীদের বসার একের পর এক আসন বেঁকে গিয়েছে। এমনকি, বেঁকে গিয়েছে যাত্রীদের সুবিধার জন্য গেটের কাছে লাগানো লোহার হাতলও। চাপ চাপ রক্ত গাড়ির সর্বত্র। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে যাত্রীদের জুতো।
বুধবার সকালে মা উড়ালপুলের নীচের একটি স্তম্ভে সজোরে ধাক্কা মেরে এমনই অবস্থা হয় গঙ্গানগর-বানতলা কেবি-২১ রুটের একটি বেসরকারি বাসের। পুলিশ সূত্রের খবর, বাসটি অত্যন্ত দ্রুত গতিতে পার্ক সার্কাসের চার নম্বর সেতুর দিক থেকে সায়েন্স সিটির দিকে আসছিল। সায়েন্স সিটি মোড়ে পৌঁছনোর আগেই সেটি সজোরে ধাক্কা মারে মা উড়ালপুলের নীচের একটি স্তম্ভে। ঘটনার পরেই বাস থেকে কোনও ভাবে নেমে চম্পট দেন চালক। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছন তিলজলা ট্র্যাফিক গার্ড এবং প্রগতি ময়দান থানার পুলিশকর্মীরা।
পুলিশের এক আধিকারিক জানান, বাসটিতে ১১ জন যাত্রী ছিলেন। ঘটনার অভিঘাতে অনেকেই আহত হন। এক যাত্রীর মাথা ফেটে যায়। দ্রুত সকলকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসার পরে সকলকেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। যাঁর মাথা ফেটেছে, তাঁর বেশ কয়েকটি সেলাই পড়েছে। ভুবন সরকার নামে এক যাত্রী বলেন, ‘‘চালক প্রথম থেকেই অত্যন্ত দ্রুত গতিতে চালাচ্ছিলেন। মাঝপথে কিছু বুঝে ওঠার আগেই হঠাৎ বিকট আওয়াজ হল। তার পরেই জোরে ঝাঁকুনিতে পড়ে গেলাম। হাতে চোট লেগেছে।’’ আর এক যাত্রীর বক্তব্য, ‘‘সামনে চলে আসা একটি ছোট গাড়িকে পাশ কাটাতে গিয়েই চালক নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি। সজোরে উড়ালপুলের স্তম্ভে গিয়ে ধাক্কা মারেন।’’
ঘটনার জেরে ওই রাস্তায় পর পর গাড়ি দাঁড়িয়ে যায়। ট্র্যাফিক পুলিশের কর্মীরা রাস্তা ফাঁকা করার পাশাপাশি বাসটিকে ক্রেন দিয়ে সরিয়ে প্রগতি ময়দান থানায় নিয়ে যান। পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বাসটি ভাল করে দেখে মনে হয়েছে, সেটিতে কোনও যান্ত্রিক গোলযোগ ছিল। বাসের বাঁ দিকের চাকাও ফাটা। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, হঠাৎ করে চাকা ফেটে যাওয়ায় চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। তাঁকে ধরা গেলেই দুর্ঘটনার আসল কারণ স্পষ্ট হবে।’’ আপাতত ঘটনাস্থলের কাছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে বাসচালকের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।