যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু জানিয়েছিলেন হুমকি চিঠির কথা। —ফাইল চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে হুমকি চিঠি পাঠানোর ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল এক ‘অধ্যাপক’-এর। সেই ‘অধ্যাপক’ রানা রায়কে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার রাতে ভুবনেশ্বরের একটি হোটেল থেকে কলকাতা পুলিশ গ্রেফতার করেছে অভিযুক্তকে। যদিও যে মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার সঙ্গে যাদবপুরের ঘটনার কোনও যোগ নেই।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুকে হুমকি চিঠি দেওয়ার ঘটনায় শনিবারই মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। যাদবপুর থানায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৬, ৫০৯ এবং ৩৪ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছিল অভিযুক্ত ‘অধ্যাপক’ রানার বিরুদ্ধে। ঠিক তার দু’দিনের মাথাতেই গ্রেফতার করা হল তাঁকে। পুলিশ সূত্রে খবর, বেলগাছিয়ার এক মহিলার অভিযোগের ভিত্ততে এই গ্রেফতারি।
গত ২ সেপ্টেম্বর দায়ের হওয়া ওই অভিযোগে পুলিশকে অভিযোগকারিণী জানিয়েছেন, তিনি বেলগাছিয়ার বাসিন্দা। রানাও বেলগাছিয়ার ভেটেরিনারি কলেজ এলআইজি হাউসিংয়ে থাকতেন। গত চার বছর ধরে তিনি নানা ভাবে উত্ত্যক্ত করছেন ওই মহিলাকে। পুলিশকে ওই মহিলা জানিয়েছেন, ২০১৯ সাল থেকে মাঝেমধ্যেই কুপ্রস্তাব দিয়ে ওই মহিলাকে চিঠি দিতেন রানা। যখন তখন পিছু নিতেন। এমনকি, গোপনাঙ্গও প্রদর্শন করতেন। গত ১৭ অগস্ট ওই এলআইজি আবাসনের ভিতরেই অভিযোগকারিণীকে বলপূর্বক জড়িয়ে ধরেন রানা। এর পরেই পুলিশের দ্বারস্থ হন অভিযোগকারিণী। নিজের অভিজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি রানার আরও কুকীর্তির কথা ফাঁস করেছেন তিনি।
রানা রায়। ছবি: সংগৃহীত
সূত্রের খবর, নিজেকে ‘অধ্যাপক’ বলে দাবি করা এই রানার বাড়ি বেলগাছিয়ায় হলেও তিনি কোচবিহারে থাকতেন। সেখানকারই একটি কলেজের শিক্ষক তিনি। তবে বেলগাছিয়ার ওই আবাসনেও নিয়মিত আসা যাওয়া ছিল তাঁর। পুলিশকে ওই মহিলা তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন, রানা নিজেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচ্চপদস্থ অফিসার হিসাবে পরিচয় দিতেন। গাড়িতে ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারের গ্রুপ-এ অফিসার’ লেখা বোর্ড লাগিয়ে ঘুরে বেড়াতেন তিনি। এ ছাড়াও এলাকার ব্যবসায়ী এবং দরিদ্র বিক্রেতাদের কাছ থেকে অনেক টাকা ধারও করেছিলেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন বেলগাছিয়ার ওই মহিলা। রানার বিরুদ্ধে প্রতারণা এবং পরিচয় জালিয়াতির অভিযোগ দায়ের করে তিনি জানিয়েছেন, সব মিলিয়ে এলাকার মানুষজনের কাছ থেকে ৬২ হাজার টাকার ধার করেছিলেন রানা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রানার বিরুদ্ধে এর আগে শ্লীলতাহানির অভিযোগও দায়ের হয়েছিল। ২০১৯ সালে টালা থানায় ওই অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু রানাকে তখন গ্রেফতার করা হয়নি। তাঁকে পলাতক বলে জানানো হয়েছিল আদালতে। পরে গত ফেব্রুয়ারি মাসে শিয়ালদহের ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের নির্দেশে গ্রেফতার করা হয় এবং শেষে আদালতের নির্দেশেই আবার জামিনও পেয়ে যান রানা।