বামেদের মিছিল। ছবি: সুদীপ আচার্য।
ফের অবরোধ এবং মিছিলে জেরবার শহর। বুধবারের বন্ধের সমর্থনে মঙ্গলবার বিকেলে শহরের বিভিন্ন এলাকায় মিছিল বের করে সতেরোটি বাম দলের জোট। যার জেরে উত্তর ও মধ্য কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় যানজট হয়। চরম ভোগান্তির শিকার হন অফিসফেরত যাত্রীরা। যানজটের ফাঁসে পড়ে রীতিমতো গলদঘর্ম অবস্থা হয় তাঁদের।
এই দিন দুপুর ২টো নাগাদ মহাত্মা গাঁধী রোড ও সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের সংযোগস্থলে রাস্তা অবরোধ করে কংগ্রেস। যার জেরে ওই দুই রাস্তায় সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে যানবাহন। আধ ঘণ্টার এই অবরোধে দুর্ভোগে পড়েন পথচারীরা। দুই রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক হতে হতে বিকেল ৪টে বেজে যায়।
ফের বিকেল ৫টায় ধর্মতলা চত্বর থেকে শুরু হয় বামেদের মিছিল। এই মিছিলের জেরে যানজটে আটকে পড়ে মধ্য কলকাতার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। রাস্তায় বেড়িয়ে নাজেহাল হন অফিসফেরত যাত্রীরা। অনেকে বিকল্প হিসেবে মেট্রোয় ওঠেন। ফলে সন্ধ্যার পর থেকে সেখানেও উপচে পড়ে ভিড়। সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে তৎপর হয়ে ওঠেন ট্যাক্সি চালকেরাও। গন্তব্যে পৌঁছনোর জন্য ট্যাক্সি চালকদের কেউ কেউ নির্দিষ্ট ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন বলেও অভিযোগ। বিধাননগরের বাসিন্দা তমোজিৎ সান্যাল বলেন, ‘‘ধর্মতলা মোড়ে পঁয়তাল্লিশ মিনিট দাঁড়ানোর পরে একটি ট্যাক্সি মেলে। চালক নির্দিষ্ট ভাড়ার উপরে অতিরিক্ত ৫০ টাকা ভাড়া চান। সেই গাড়িতেই উঠে বসি।’’
বামেদের ধর্মতলার মিছিলটি গিয়ে থামে কলেজ স্ট্রিটে। এর জেরে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ-সহ নির্মল চন্দ্র স্ট্রিট, গনেশ চন্দ্র অ্যাভিনিউ, কলেজ স্ট্রিট, সূর্য সেন স্ট্রিটে ব্যাপক যানজট হয়। এই দিন সন্ধ্যায় এন্টালি এবং শ্যামবাজার থেকেও মিছিল বের হয়। এই দুই মিছিলের জেরে শিয়ালদহ, রাজাবাজার, মানিকতলা, শ্যামবাজার-সহ উত্তর কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকাতেও যানজট হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই তিনটি বড় মিছিল ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় বন্ধের সমর্থনে বামেরা ছোট ছোট মিছিল বের করে। ফলে সারা শহরেই এই দিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত যানজট লেগেই থাকে। লেক গার্ডেন্সের বাসিন্দা সুমিতা চক্রবর্তী তাঁর অসুস্থ মাকে নিয়ে শিয়ালদহে চিকিৎসক দেখানোর জন্য বের হয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘মাসে দু’বার মাকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে হয়। বাড়ি থেকে শিয়ালদহ যেতে অন্য দিন সময় লাগে পঁয়তাল্লিশ মিনিট। সেখানে সময় লেগেছে দেড় ঘণ্টারও বেশি।’’
রাস্তায় কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশেরাও এই দিন মিছিল সামলাতে হিমশিম খেয়ে যান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্র্যাফিক কর্তা বলেন, ‘‘বিভিন্ন এলাকায় মিছিলের জন্য এ দিন শহরের সব রাস্তাতেই যান চলাচল ব্যাহত হয়।’’