Rajat Dey Murder case

‘শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়াই চলবে’, যাবজ্জীবন শুনেও অনুতাপ নেই অনিন্দিতার

ঘটনা সামনে আসার পরেও, ঠিক একই ভাবে ভাবলেশহীন ছিলেন এক সময়ের কলকাতা এবং বম্বে হাইকোর্টের আইনজীবী অনিন্দিতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২১:০১
Share:

রজত, অনিন্দিতা। ফাইল চিত্র।

ঠাসা ভিড়। সেচ্ছাসেবী সংগঠন, আইনজীবীদের স্লোগানে গমগম করছে আদালত চত্বর। করোনার আতঙ্কের লেশমাত্র নেই। বিকেল চারটে নাগাদ আইনজীবী রজত দে খুনের ঘটনায় স্ত্রী অনিন্দিতাকে যাবজ্জীবন সাজা শোনালেন বিচারক। কিন্তু অনিন্দিতার চোখে-মুখে অনুতাপের কোনও ছাপ ধরা পড়ল না। আদালতের বাইরে বেরিয়েও ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। সাংবাদিকদের দেখে বলল উঠলেন, ‘‘আমি নির্দোষ। জীবনের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।’’

Advertisement

ঘটনা সামনে আসার পরেও, ঠিক একই ভাবে ভাবলেশহীন ছিলেন এক সময়ের কলকাতা এবং বম্বে হাইকোর্টের আইনজীবী অনিন্দিতা। সাত বারেরও বেশি নিজের বয়ান বদলেছেন তিনি। এমনটাই জানা গিয়েছিল পুলিশ সূত্রে। পুলিশি জেরায় ভেঙেও পড়েননি। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তির যুগে কখন যে নিজেরই পাতা জালে জড়িয়ে গিয়েছেন, তা বুঝতে পারেননি। তার পরেও নিজের বক্তব্য অনড় ছিলেন। আজ, বুধবারও বারাসত তৃতীয় ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে বিচারকের সামনে তাঁকে একই রকম দেখা গিয়েছে তাঁকে। সেখানে উপস্থিত আইনজীবী মহলের তেমনই বক্তব্য।

রজতের পরিবার সর্বোচ্চ সাজারই আশা করেছিলেন। কিন্তু বিচারক তেমনটা মনে করেনি। এই ঘটনাকে বিরলতমের মধ্যে বিরল বলে মনে করেননি তিনি। কারণ অনিন্দিতার বিরুদ্ধে যা তথ্য-প্রমাণ ছিল, তা বেশিরভাগই তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর। সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিরলতম মামলা বলে মনে করেনি আদালত। তাই ক্যাপিটাল পানিসমেন্ট না দিয়ে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন বিচারক।”

Advertisement

আরও পড়ুন: রজত দে হত্যা মামলায় স্ত্রী অনিন্দিতার যাবজ্জীবন

অনিন্দিতার বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০২ খুনের ধারা এবং ২০১ তথ্য-প্রমাণ লোপাটের মামাল চলেছে। রায় ঘোষণার পর রজতের বাবা সমীর দে বলেন, “বিচারক যা বিবেচনা করেছেন, তাতে আমরা সন্তুষ্ট। আমার আইনজীবীরা উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রয়োজন মনে করলে, আমরা যাব।”

আরও পড়ুন: স্বামীকে টুকরো করে রেঁধে খাওয়ানোর খবর শেয়ার করেছিলেন অনিন্দিতা

এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ বিচারকের সামনে হাজির ছিলেন সরকারি এবং অনিন্দিতার আইনজীবী। বিচারকের সামনে হাজির করানো হয় অনিন্দিতাকে। বিচারককে তাঁর আইনজীবী বলেন, “বাবা মারা গিয়েছেন। মায়ের সর্বোচ্চ সাজা হলে তিন বছরের শিশুর কী হবে?”

বেলা চারটে নাগাদ রায় ঘোষণা করতে গিয়েও কিছু মন্তব্য করেন বিচারক। তাঁর কথায়: ‘‘শিশুপুত্র রয়েছে। অনিন্দিতার বয়স কম। তাঁর অতীতের অপরাধের কোনও ইতিহাস নেই। নিজেকে শুধরে নেওয়ার সময় রয়েছে।’’ বিচারক, অনিন্দিতা এবং সরকারি আইনজীবীর কথাবার্তা শুনে আইনজীবী মহল মনে করেছেন, লড়াই এ বার উচ্চ আদালতে গড়াতে চলেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement