আগুন নিভেছে রেলভবনে। নিজস্ব চিত্র।
কলকাতার স্ট্র্যান্ড রোডের রেলভবনে বিধ্বংসী আগুনের ঘটনা নিয়ে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত শুরু করল পূর্ব রেল। অন্তর্ঘাত না নিছক দুর্ঘটনা থেকে অগ্নিকাণ্ড, তা তদন্ত করে দেখা হবে। আগুন লাগার ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ঘটনাস্থলে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছবেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে শোকপ্রকাশ করে টুইট করেছেন নরেন্দ্র মোদী। মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা এবং গুরুতর আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর।
মঙ্গলবার ভোর ৪টে নাগাদ ওই বহুতলের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানা গিয়েছে দমকলের তরফে।
সোমবার সন্ধ্যা ৬ টা ১০ নাগাদ আগুন লাগে ১৪ তলা রেলভবনের ১৩ তলায়। পরে ভবনের ১২ তলাও চলে যায় আগুনের গ্রাসে। আগুনের জেরে ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন ৯জন। এর মধ্যে রেলের অফিসার, দমকলকর্মী এবং এক পুলিশ অফিসারও রয়েছেন। দমকলের ইঞ্জিনের পাশাপাশি যন্ত্রচালিত মই আসার পর আগুন নেভানোর কাজ গতি পায়। মধ্যরাতেই আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। কিন্তু রাত ২টো নাগাদ ফের জ্বলে ওঠে আগুন। দমকলের তরফে জানানো হয়েছে, ভোর ৪টে নাগাদ রেলভবনের আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
আগুন লাগার খবর পেয়ে সোমবার রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুও তাঁর সঙ্গে ছিলেন। রাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘রেলের অনেক পুরনো ভবন। ভয়াবহ দুর্ঘটনা। খুবই দুঃখজনক। মৃতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপুরণ ছাড়াও পরিবারের এক জনকে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে।’’ ঘটনা নিয়ে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রীও। মঙ্গলবার সকালে করা টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘কলকাতায় অগ্নিকাণ্ডের জেরে প্রাণহানিতে শোকাহত। দুঃখের সময়ে সাহসীদের পরিবারের পাশে আছি। আশা করছি আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন'। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফে ক্ষতিপূরণের ঘোষণাও করা হয়েছে। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনার পাশাপাশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সমস্ত রকম সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল।
এর পাশাপাশি ইতিমধ্যেই ঘটনা নিয়ে উচ্চপর্যায়ের তদন্তের কথা জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী। রেলের ওই তদন্তকারী দলে চারজন উচ্চপদস্থ অফিসার থাকবেন বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী। রেলের তরফে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, উচ্চপর্যায়ের এই তদন্তকারী দলকে নেতৃত্ব দেবেন রেলের মুখ্য নিরাপত্তা অফিসার জয়দীপ গুপ্তা। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে রাতে গিয়েছিলেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার মনোজ যোশী। উচ্চপর্যায়ের তদন্তের পাশাপাশি তিনি বলেছেন, ‘‘রাজ্য সরকার যদি তদন্ত শুরু করে, তাহলে রেলের তরফে সব রকম সাহায্য করা হবে।’’ এই অগ্নিকাণ্ডের জেরে যাত্রী সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটেছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি যাত্রী সংরক্ষণ সম্পর্কিত তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।