rabindra sarobar

Rabindra Sarovar: বিভিন্ন প্রজাতির সবুজের জন্য এলাকা ভাগ রবীন্দ্র সরোবরে

ব্রাহ্মী, বাসক, থানকুনি, কুলেখাড়া থেকে তুলসীর নানা প্রজাতি-সহ ১২০ রকমের ঔষধি গাছ থাকবে ‘হার্বাল জ়োন’-এ।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২১ ০৬:৪৬
Share:

ব্রাহ্মী, বাসক, থানকুনি, কুলেখাড়া থেকে তুলসীর নানা প্রজাতি-সহ ১২০ রকমের ঔষধি গাছ থাকবে ‘হার্বাল জ়োন’-এ।

ব্রাহ্মী, বাসক, থানকুনি, কুলেখাড়া থেকে তুলসীর নানা প্রজাতি-সহ ১২০ রকমের ঔষধি গাছ থাকবে ‘হার্বাল জ়োন’-এ। ‘ত্রিফলা কুঞ্জ জ়োন’-এ থাকবে আমলকী, হরীতকী, বহেড়া। ১০০ বছরের পুরনো সুন্দরী গাছ তো বটেই, সেই সঙ্গে সুন্দরবনের একাধিক গাছের দেখা মিলবে ‘সুন্দরী জ়োন’-এ। আবার রাঙামাটি বিভাগে দেখা যাবে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম এলাকার পলাশ, শিমুলকে। এ ভাবেই রবীন্দ্র সরোবর চত্বরকে ১৬টি ভাগে ভাগ করে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগিয়ে তাকে আরও পরিবেশবান্ধব করে গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে কেএমডিএ।

Advertisement

রবীন্দ্র সরোবরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেএমডিএ-র সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার দিলীপকুমার বড়াল বলছেন, ‘‘১৬টি জ়োন-কে কী ভাবে পরিবেশবান্ধব রূপ দেওয়া যায়, তার জন্য কলকাতা ও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং রাজ্য জীববৈচিত্র্য পর্ষদ, শিবপুর বটানিক্যাল গার্ডেনের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি সাব-কমিটি গঠিত হয়েছে।’’ ওই সাব-কমিটির সদস্য তথা রাজ্য জীববৈচিত্র্য পর্ষদের গবেষণা আধিকারিক অনির্বাণ রায় বলেন, ‘‘রবীন্দ্র সরোবরে ইতিমধ্যেই গাছসুমারি হয়েছে। সেখানে মোট ৩৬৬টি প্রজাতির গাছের মধ্যে ১৬২টি প্রজাতির গাছই বৃক্ষ জাতীয়। তাদের মোট সংখ্যা ৭৮৯৬টি।’’ কেএমডিএ সূত্রের খবর, সরোবর চত্বরে থাকা ওই ১৬২টি প্রজাতির বৃক্ষ জাতীয় গাছেদের ইতিহাসও এ বার থেকে সহজেই জানা যাবে কিউআর কোডের সাহায্যে। সরোবর চত্বরে প্রতিটি প্রজাতির গাছের পাশে একটি স্ট্যান্ডে লাগানো থাকবে ওই কিউআর কোড। দিলীপবাবুর কথায়, ‘‘ছাত্র, গবেষক, পরিবেশকর্মীরা মোবাইলে ওই কিউআর কোড স্ক্যান করলেই সংশ্লিষ্ট গাছের সবিস্তার বিবরণ জানতে পারবেন। এই কাজ শেষ করতে আগেই টেন্ডার প্রক্রিয়া হয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই বিভিন্ন প্রজাতির গাছের পাশে বটানিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার সহায়তায় কিউআর কোড বসানোর কাজ শুরু হবে।’’

রবীন্দ্র সরোবরকে ১৬টি জ়োনে ভাগ করার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। এ বিষয়ে সাব-কমিটির চেয়ারম্যান তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কৃষ্ণেন্দু আচার্য বলেন, ‘‘পুরনো কলকাতার অনেক গাছ বিলুপ্তপ্রায়। রবীন্দ্র সরোবরে অনেক গাছের বীজ পড়ে চারা জন্মায়। এ বার ওই সমস্ত চারাগাছ সংরক্ষণ করে আলাদা নার্সারি জ়োন করা হবে। সেখান থেকে গাছ সংগ্রহও করা যাবে। সরোবরে গাছের সংখ্যা বাড়লে পাখির সংখ্যাও বাড়বে। পরিবেশ বাঁচাতেই এই উদ্যোগ।’’
কেএমডিএ-র এক পদস্থ কর্তা বললেন, ‘‘শহরে এখনও অনেক অবলুপ্তপ্রায় প্রাণী রয়েছে। গোবিন্দপুর রেল কলোনি এলাকা থেকে এখনও রবীন্দ্র সরোবর চত্বরে বেজি, গোসাপ, শেয়াল ঢোকে। তাদের বাঁচাতে সরোবরের একাংশে অন্ধকার পরিবেশ তৈরি করে গড়া হবে নেচার অবজ়ারভেটরি জ়োন।’’

Advertisement

একই ভাবে কলকাতা পুরসভার ৯৫ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন, দক্ষিণ কলকাতার অরবিন্দনগরে প্রায় দেড় বিঘা জমিকে কলকাতা পুরসভার উদ্যান বিভাগ শুধুমাত্র ফলের বাগান হিসাবে গড়ে তুলেছে। যার নাম— ‘ফলবাহার উদ্যান’। ওই ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘ওই এলাকায় এক সময়ে জঞ্জাল পড়ে থাকত। তা থেকে আগুন জ্বলত। তাই ওই এলাকায় উদ্যান তৈরি করার জন্য স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে কথা হলে তিনি সেখানে শুধু ফলের বাগান করার পরামর্শ দেন। সেই মতো কলকাতা পুরসভার উদ্যান বিভাগের আর্থিক সহায়তায় আম, জাম, কাঁঠাল, জামরুল, পেয়ারা, সবেদা, লিচু-সহ বহু ফলের গাছ লাগানো হয়েছে।’’ আগামী শনিবার নবনির্মিত ওই ফলের উদ্যানের উদ্বোধন হবে। সেখানে প্রাতর্ভ্রমণও করা যাবে বলে জানিয়েছেন পুরসভার কর্তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement