(বাঁ দিকে) সিজিও কমপ্লেক্স এবং দেবাশিস সোম (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক বিভাগের শিক্ষক দেবাশিস সোম সিবিআইয়ের একটি দফতর থেকে বেরিয়ে অন্য এক দফতরে গেলেন। সোমবার সকালে সিবিআইয়ের নিজ়াম প্যালেসের দফতরে হাজিরা দিয়েছিলেন দেবাশিস। আরজি করের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় তলব করা হয়েছিল তাঁকে। দুপুর ৩টের পর তিনি নিজ়াম প্যালেস থেকে বেরিয়ে সোজা চলে যান সিজিও কমপ্লেক্সের সিবিআই দফতরে। উল্লেখ্য, সেই দফতর থেকেই আরজি করের মহিলা চিকিৎসক খুনের ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআইয়ের অন্য একটি দল। তবে এ বার কি দেবাশিসকে চিকিৎসক খুনের ঘটনায় জেরা করবে সিবিআই, শুরু হয়েছে জল্পনা।
দেবাশিস আরজি করের ফরেন্সিক বিভাগের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে যুক্ত। ওই বিভাগের ‘ডেমনস্ট্রেটর’ পদে রয়েছেন তিনি। এ ছাড়া, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের কাউন্সিলেরও সদস্য তিনি। রয়েছেন কলেজের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের (এনএমসি) কমিটিতেও। রবিবার সকালে আচমকাই তাঁর কেষ্টপুরের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। আরজি করের আর্থিক অনিয়মের তদন্তের সূত্র ধরেই দেবাশিসের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালান কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত টানা তল্লাশি অভিযান শেষে তাঁকে নিয়ে নিজ়াম প্যালেসে গিয়েছিল সিবিআই। রাত পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন তিনি।
সোমবার সকালে আবারও দেবাশিসকে তলব করা হয়েছিল। সেই মতো সকালেই নিজ়াম প্যালেসে হাজিরা দেন তিনি। তবে দুপুরের পর তাঁর সিজিও কমপ্লেক্সে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ঘটনাচক্রে, সোমবার সকালে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষও সিজিও কমপ্লেক্সে যান। সূত্রের খবর, সেখানেই তাঁর পলিগ্রাফ পরীক্ষা চলছে। আরজি কর হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত অনেকে বলছেন, দেবাশিস আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের অত্যন্ত ‘ঘনিষ্ঠ’। হাসপাতালে তাঁর নিজের বিভাগের ঘরে নাকি তিনি বসতেন না! সন্দীপের ঘরের পাশে একটি ঘর তাঁর জন্য বরাদ্দ ছিল। সেখানে বসেই কাজ চালাতেন। ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগ তিনি ‘নিয়ন্ত্রণ’-এর চেষ্টা করতেন বলেও দাবি করছেন কেউ কেউ।
সম্প্রতি সন্দীপের বিরুদ্ধে আরজি করের জৈব বর্জ্য এবং অন্যান্য বিষয়ে যে আর্থিক দুর্নীতির মামলা করা হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে, তাতে নাম রয়েছে দেবাশিসেরও। প্রসঙ্গত, সোমবার আরজি কর-কাণ্ডের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর সেমিনার হলের মধ্যে ভিড় করেছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই ভিড়ে দেখা গিয়েছে দেবাশিসকে (যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। সূত্রের খবর, সেই ভিডিয়োর সূত্র ধরেই তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে ডাকা হয়েছে।