পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। ফাইল ছবি।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়-অর্পিতা মুখোপাধ্যায় কাণ্ডে কসবার একটি ‘বেআইনি’ অনুষ্ঠানবাড়ি শিরোনামে উঠে এসেছিল। আট মাস আগে মেয়র ফিরহাদ হাকিম ওই অনুষ্ঠানবাড়ি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু আট মাস পার হলেও তদন্তের অগ্রগতি কতটা হয়েছে, সেই প্রশ্নের সদুত্তর মিলছে না।
ইডি-র তদন্তে উঠে এসেছিল, কসবার রাজডাঙা মেন রোডের ওই বাড়িটি রয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতার নামে। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ ও অর্পিতা এখন জেলে। অভিযোগ, কলকাতা পুরসভার ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডে তিনটি আবাসিক জমিকে বেআইনি ভাবে একত্রিত করে অনুষ্ঠানবাড়িতে পরিণত করা হয়েছিল। যার জন্য পুরসভা বহু টাকার সম্পত্তিকর থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ। গত ৩০ জুলাই ফিরহাদ ওই অনুষ্ঠানবাড়িটি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তখন মেয়র জানিয়েছিলেন, ওই তিনটি জমি কেএমডিএ-র সম্পত্তি। সেখানে বহুতল তৈরি করে ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফিরহাদ বলেন, ‘‘কেএমডিএ-র চেয়ারম্যান আমি। কেএমডিএ-কে তদন্ত করে দেখতে বলেছি। দরকারে ওই সম্পত্তি কেএমডিএ অধিগ্রহণ করে বড় নোটিস বোর্ড টাঙিয়ে দেবে।’’
বর্তমানে কসবার ওই বাড়িটি বন্ধ রয়েছে। মাস কয়েক আগে এক জন কেয়ারটেকারকে দেখা গেলেও এখন ফাঁকা বাড়িটি বাইরে থেকে তালাবন্ধ। কেএমডিএ সূত্রের খবর, মেয়রের নির্দেশের পরে আট মাস পার হলেও তদন্তের অগ্রগতি তেমন কিছু হয়নি। কেএমডিএ-র এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘তদন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে। বলার মতো কিছু নেই।’’
স্থানীয় বাসিন্দারা এক সময়ে ওই বাড়ি থেকে আসা রাতের উল্লাস, ডিজে-র দাপটে তটস্থ থাকতেন। সে দিক থেকে ওই পাড়া এখন শান্ত। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, ওইঅনুষ্ঠানবাড়ি কি আর চালু হবে না? স্থানীয় সূত্রের খবর, এখনও নানা অনুষ্ঠানের বুকিং করতে অনেকেই হাজির হন। পুরসভার কর রাজস্ব বিভাগ সূত্রের খবর, কসবা এলাকার ইডি ব্লকের ‘ই’ সেক্টরের অন্তর্গত ১০, ১১ ও ১২ নম্বর আবাসিক জমিকে একত্রিত করে ওই বাড়ি তৈরি করা হয়েছিল। আদতে সাত কাঠা জমির উপরে ওই বাড়িটি থাকলেও কর রাজস্ব বিভাগের খাতায় সেটিকে দু’কাঠা ন’ছটাক ফাঁকা জমি হিসাবে দেখানো হয়েছে। সেই অনুযায়ী পুরসভা বছরে মাত্র ২৩৫২ টাকা সম্পত্তিকর পায়। আদতে বাড়িটি থেকে পুরসভার কমপক্ষে এক লক্ষ টাকা কর পাওয়ার কথা।
তদন্ত কতটা এগোল? বুধবার ফিরহাদ বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। কেএমডিএ ওই বাড়িটি অধিগ্রহণ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ বিষয়ে ভূমি রাজস্ব দফতরের কাছে আবেদন করা হয়েছে।’’