—প্রতীকী চিত্র।
সাতাশতলা আবাসনের কুড়িতলার ফ্ল্যাট। তার উপরে জানলায় গ্রিল নেই। একটি ঘরে পোষা কুকুরের সঙ্গে খেলছিল এক কিশোরী। হঠাৎই নীচে পড়ে যায় সে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এটি দুর্ঘটনা, না কি আত্মহত্যা, তা এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। তবে সোমবার সন্ধ্যায় এই ঘটনাটি যে ভাবে ঘটেছে, তাতে দুর্ঘটনার দিকেই পাল্লা ভারী বলে মনে করছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটে উল্টোডাঙা স্টেশনের কাছে একটি আবাসনে। সেখানেই কুড়িতলার একটি ফ্ল্যাটে বাবা, মা, ঠাকুরদা ও ঠাকুরমার সঙ্গে থাকত ওই কিশোরী। মা-বাবার একমাত্র সন্তান সে। পড়ত নিউ টাউনের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের দশম শ্রেণিতে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, সোমবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ওই কিশোরীর মা, বাবা, ঠাকুরদা ও ঠাকুরমা একটি ঘরে ছিলেন। সেই সময়ে কিশোরীকে সেখানে ডাকা হলেও সে সাড়া দেয়নি। পরে আরও কয়েক বার ডেকেও তার সাড়া না পেয়ে বাড়ির তিনটি ঘর খুঁজে দেখা হয়। কিন্তু কিশোরীকে কোথাও পাওয়া যায়নি। এর পরে পরিবারের সদস্যেরা নীচে নেমে নিরাপত্তারক্ষীদের জিজ্ঞাসা করেন, ওই কিশোরীকে তাঁরা দেখেছেন কি না। নিরাপত্তারক্ষীরা খোঁজ শুরু করতেই আবাসনের নীচে ওই কিশোরীর রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাকে ই এম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
তদন্তকারীরা জানান, ওই কিশোরী যে আবাসনে থাকত, সেখানকার কোনও ফ্ল্যাটেরই জানলায় গ্রিল নেই। আবাসন সূত্রের খবর, নিজেদের পোষা কুকুরের সঙ্গে ভীষণ ভাব ছিল ওই কিশোরীর। সোমবার সন্ধ্যায় বাবা, মা, ঠাকুরদা ও ঠাকুরমা যখন একটি ঘরে ছিলেন, তখন ওই কিশোরী অন্য একটি ঘরে পোষা কুকুরের সঙ্গে খেলছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ওই আবাসনের ফ্ল্যাটের জানলাগুলি বেশ বড়। গ্রিল না থাকায় সেখান দিয়ে যে কেউ নীচে পড়ে যেতে পারেন। তদন্তকারীদের অনুমান, কুকুরের সঙ্গে খেলতে গিয়ে ওই কিশোরী কোনও ভাবে জানলার কার্নিসে উঠে যায়। তার পরে বেসামাল হয়ে কার্নিস থেকে সোজা নীচে গিয়ে পড়ে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই কিশোরীর দেহ আবাসনের নীচে যে জায়গায় পড়েছিল, তার ঠিক উপরেই তাদের ফ্ল্যাটের জানলা। মানিকতলা থানার পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। মঙ্গলবার বিকেলে ফরেন্সিক বিভাগের কর্মীরা ওই আবাসনে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন। মানিকতলা থানার এক পুলিশ আধিকারিক জানান, একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ওই ফ্ল্যাট থেকে কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। ঘটনার বিষয়ে পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।