Air Pollution

বায়ুদূষণ রোধে নির্দেশ-বিধি জারির পক্ষে সওয়াল

তথ্য এ-ও জানাচ্ছে, রাজ্যে কোভিডের থেকেও বায়ুদূষণের কারণে মৃতের সংখ্যা প্রায় ১২ গুণ বেশি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:২৬
Share:

—প্রতীকী ছবি

সাম্প্রতিক এক বেসরকারি সমীক্ষা জানাচ্ছে, রাজ্যের সিংহভাগ চিকিৎসকই বায়ুদূষণকে আপৎকালীন পরিস্থিতি হিসেবে দেখেন। তাঁদের মধ্যে ৩৭ শতাংশ চিকিৎসকই মনে করেন, রাজ্যে বাতাসের মানের বিন্দুমাত্র কোনও উন্নতি হয়নি। ৫৬ বছরের বেশি বয়সিরা সবাই এই দূষিত বায়ুর সামনে অসুরক্ষিত (ভালনারেবল) এবং তাঁরা শ্বাসযন্ত্রজনিত কোনও না কোনও সমস্যায় ভুগছেন।

Advertisement

তথ্য এ-ও জানাচ্ছে, রাজ্যে কোভিডের থেকেও বায়ুদূষণের কারণে মৃতের সংখ্যা প্রায় ১২ গুণ বেশি। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বায়ুদূষণ রোধে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন জানিয়েছেন রাজ্যের চিকিৎসকদের একটি অংশ। এক বেসরকারি হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিসিন বিভাগের প্রধান সংযুক্তা দত্তের বক্তব্য, ‘‘আমরা কোভিড নিয়ে এতটা চিন্তিত। কিন্তু যে দূষিত বাতাস ২৪ ঘণ্টা ধরে আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে, তা নিয়ে কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই।’’ পালমোনোলজিস্ট অরূপ হালদার বলছেন, ‘‘আমাদের কারওরই বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণার (পিএম২.৫) বিরুদ্ধে শরীরে প্রতিরোধশক্তি নেই। তাই দূষিত বায়ুর কারণে প্রতি মিনিটে তিনটি মৃত্যু হচ্ছে।’’

বায়ুদূষণ রোধে কাজ করা বেসরকারি সংস্থার এক সমীক্ষা আবার জানাচ্ছে, সদ্যোজাত ও অল্পবয়সিদের প্রায় ৫০-৬০ শতাংশই এই দূষিত বায়ুর শিকার। এর আগে সংস্থার তরফে বায়ুদূষণ নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে একটি আলোচনার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই আলোচনাতেও বাতাসের ক্রমবর্ধমান দূষণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের বক্তব্য, শ্বাসকষ্ট, সিওপিডি, ফুসফুসের ক্যানসার, ক্রনিক কাশি নিয়ে রোগীর সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘বায়ুদূষণের কথা ভেবেই জরুরি ভিত্তিতে রাজ্য সরকারের তরফে নির্দেশ-বিধি (অ্যাডভাইজ়রি) জারি করা দরকার। কারণ, সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য এখানে জড়িত।’’

Advertisement

চিকিৎসকদের বক্তব্য, শুধুই নির্দেশ-বিধি জারি করে বায়ুদূষণ রোধ করা যাবে না। এ বিষয়ে রাজনৈতিক নেতৃত্বকেও দায়িত্ব নিতে হবে। শহরের এক সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকের কথায়, ‘‘স্থানীয় নেতা-কাউন্সিলরেরা যত সহজে মানুষের কাছে পৌঁছতে পারবেন, সেটা অন্য কারও পক্ষে সম্ভব নয়।’’ সংযুক্তাদেবী আবার জানাচ্ছেন, বায়ুদূষণ রোধে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ন্যাশনাল ক্লিন এয়ার প্রোগ্রাম’-এর পরিকল্পনা ভাল হলেও তার বাস্তবায়ন জরুরি। তাঁর কথায়, ‘‘বায়ুদূষণের বিপদ বোঝাতে হবে মানুষকে। এই দূষণ রোধে তাঁদের কী করণীয়, সেটাও বোঝাতে হবে। সমাজের সব স্তরের প্রচেষ্টা ছাড়া এই বিপদ রোখা মুশকিল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement