East Kolkata

Wetlands: পূর্ব কলকাতা জলাভূমি রক্ষায় সরকারি পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন

পূর্ব কলকাতা জলাভূমি প্রাকৃতিক ভাবে দৈনিক ৯১ কোটি লিটার তরল বর্জ্য পরিশোধন করে। যা পাঁচটি এসটিপি-র মোট ক্ষমতার প্রায় পাঁচ গুণ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২২ ০৬:৪৪
Share:

ফাইল চিত্র।

তরল বর্জ্য পরিশোধনের জন্য নিকাশি পরিশোধন প্লান্ট (সুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বা এসটিপি) তৈরি করতে কয়েকশো কোটি টাকা খরচ হয়। শুধু একটি এসটিপি তৈরিতে খরচ প্রায় ৩০০-৪০০ কোটি টাকা। সেটি চালাতে এবং রক্ষণাবেক্ষণে বছরে খরচ হয় আরও ২০০-৩০০ কোটি টাকা। সেখানে পূর্ব কলকাতা জলাভূমি নিখরচায় দৈনিক ভিত্তিতে শহরের প্রায় ৯১ কোটি লিটার নোংরা জলকে প্রাকৃতিক উপায়ে শোধন করছে। তাই কলকাতাকে বাঁচাতে হলে পূর্ব কলকাতা জলাভূমিকে রক্ষা করতেই হবে। রবিবার, বিশ্ব পরিবেশ দিবসে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এমনই বার্তা দিলেন রাজ্য পরিবেশ দফতরের সচিব বিবেক কুমার। তাঁর কথায়, ‘‘পূর্ব কলকাতা জলাভূমি রক্ষা করতে আগামী প্রজন্মকেও দায়িত্ব নিতে হবে।’’

Advertisement

সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, কলকাতায় উৎপাদিত তরল বর্জ্যের পরিমাণ দৈনিক ১৪০ কোটি লিটার। বাঙুর, গার্ডেনরিচ, বাঘা যতীন, কেওড়াপুকুর ও হাতিশুঁড়— কলকাতা পুরসভার এই পাঁচটি এসটিপি-র মাধ্যমে দৈনিক ১৭ কোটি ৯০ লক্ষ লিটার তরল বর্জ্য পরিশোধিত হয়। অন্য দিকে, পূর্ব কলকাতা জলাভূমি প্রাকৃতিক ভাবে দৈনিক ৯১ কোটি লিটার তরল বর্জ্য পরিশোধন করে। যা পাঁচটি এসটিপি-র মোট ক্ষমতার প্রায় পাঁচ গুণ।

তার পরেও কেন এই জলাভূমি ভরাটের অভিযোগে সরব হতে হয় পরিবেশকর্মীদের? তাঁদের মতে, ২০০৭-২০২১, এই সময়ের মধ্যে জলাভূমি ভরাট, জমির চরিত্র পরিবর্তন সংক্রান্ত ৩৫৮টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে পুলিশে। তবে রাজ্য সরকারও পূর্ব কলকাতা জলাভূমি রক্ষায় সব চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ দফতরের সচিব। দফতর সূত্রের খবর, সেখানকার বুজে যাওয়া জমি পুনরুদ্ধারে ২ কোটি টাকা খরচ হবে।

Advertisement

ঘূর্ণিঝড় এবং ম্যানগ্রোভের প্রসঙ্গও অনুষ্ঠানে উঠে আসে। বিশেষজ্ঞেরা বলেন, সাধারণত দশ বছরে এক বার প্রবল ঘূর্ণিঝড় হয়ে থাকে। কিন্তু জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রতিক কালে ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড় হয়েছে। বিবেক কুমার জানিয়েছেন, ৭০ কোটি টাকা খরচ করে সুন্দরবনে ১৫ কোটি ম্যানগ্রোভ লাগানো হয়েছে। যা ভবিষ্যতে কলকাতাকে ঝড় থেকে রক্ষা করবে।

যদিও পূর্ব কলকাতা জলাভূমি এবং ম্যানগ্রোভ বিষয়ে সরকারি বক্তব্যে প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশকর্মীরা। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের বক্তব্য, ‘‘জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে পূর্ব কলকাতা জলাভূমি রক্ষায় সরকার পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছে। তা-ও ৯৯ শতাংশ নির্দেশ পালন হয়নি।’’ আর এক পরিবেশবিজ্ঞানীর বক্তব্য, ‘‘ম্যানগ্রোভ লাগিয়ে ঝড় সামলানো যাবে কি না, তা বিতর্কের বিষয়।’’

এ দিনের অনুষ্ঠানে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে বায়ুদূষণ নিয়ে একটি পুস্তিকা প্রকাশ হয়। সেখানে বলা হয়েছে, বাতাসে ভাসমান প্রায় ৫০ শতাংশ দূষকই ভিন্ রাজ্য থেকে এই রাজ্যে প্রবেশ করে। তাদের মধ্যে মাত্র দু’টি দূষক, ভাসমান ধূলিকণা (পিএম১০) এবং অতিসূক্ষ্ম ধূলিকণা (পিএম২.৫) শীতের সময়ে নির্ধারিত মাত্রা লঙ্ঘন করে। এ-ও দাবি করা হয়েছে, ২০১৮ সালের তুলনায় চলতি বছরে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা এবং অতিসূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণ কমানো গিয়েছে যথাক্রমে ৩.৪৪ এবং ৬.৩৭ শতাংশ। রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী রত্না দে নাগ বলেন, ‘‘বায়ুদূষণ সংক্রান্ত বিষয়টি সহজ ভাবে বুঝতে বইটি সাহায্য করবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement