ফাইল চিত্র।
একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটেছে ওই রাস্তায়। সর্বশেষ ঘটনাটি ঘটেছে গত সপ্তাহে, যার জেরে মারা যান কলকাতা পুলিশের এক ট্র্যাফিক সার্জেন্ট। পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, রাস্তার বেহাল দশার জন্যই সে দিন প্রাণ হারাতে হয়েছিল ওই সার্জেন্টকে। সেই কারণে এ বার নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। বাসন্তী হাইওয়ের আমূল সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূর্ত দফতর।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই সায়েন্স সিটি থেকে ঘটকপুকুর পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার অংশ নতুন করে তৈরি করার জন্য দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই ওই রাস্তার দু’পাশের জঙ্গল সাফ করার কাজ শুরু হবে। আশা করা যায়, আগামী মাসেই রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে যাবে।
পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক জানান, বাসন্তী হাইওয়ের যে সমস্ত অংশের অবস্থা বেশি খারাপ, সেখানকার পিচের আস্তরণ তুলে ফেলে নতুন করে রাস্তা তৈরি করা হবে। বাকি অংশেও প্রয়োজন মতো মেরামতির কাজ করা হবে। মেরামতির কাজ শেষ হয়ে গেলে ওই রাস্তার বেশ কিছু জায়গায় ট্র্যাফিক সিগন্যাল বসানো হবে, যাতে দুর্ঘটনার সংখ্যা কমানো যায়।
কলকাতা পুলিশের তরফে পূর্ত দফতরকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছিল, বাসন্তী হাইওয়ের মোট ১৮টি জায়গার আমূল সংস্কার প্রয়োজন। সেই চিঠি পাওয়ার পরেই পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে বাসন্তী হাইওয়ে পরিদর্শন করেন। দুর্ঘটনা রোধে কোথায় কোথায় কী কী করা প্রয়োজন, সে সব খতিয়ে দেখেন তাঁরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, পূর্ত দফতর সরকারি ভাবে লালবাজারকে এখনও কিছু জানায়নি। তবে রাস্তার দু’পাশে খালে গাড়ি পড়া ঠেকাতে ‘ক্র্যাশ ব্যারিয়ার’ বসানো হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে পুলিশকে। পুলিশের তরফে ওই রাস্তার মাঝে যে ‘রাম্বল স্ট্রিপ’ বসানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, মেরামতির পরে সেই কাজও করা হবে বলে পূর্ত দফতর সূত্রের খবর। পুলিশের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে বাকি ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। মেরামতির কাজ চলাকালীন যান চলাচল যাতে বাধাপ্রাপ্ত না হয়, সে দিকেও নজর রাখা হচ্ছে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি বাসন্তী হাইওয়েতে টহল দেওয়ার সময়ে মোটরবাইকের সামনের চাকা গর্তে পড়ে যায় সার্জেন্ট শশিভূষণ মিঞ্জের। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাইক থেকে ছিটকে পড়েন তিনি। এর পরে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। ফরেন্সিক পরীক্ষার পরে লালবাজারের কর্তারা জানতে পারেন, শশিভূষণবাবুর বাইকের গতি নির্ধারিত সীমার মধ্যেই ছিল। বাইকটি উল্টে যাওয়ার সময়ে হ্যান্ডেলের মতো কোনও অংশ তাঁর বুকে সজোরে লাগে। যার জেরে তাঁর ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মনে করা হচ্ছে, ওই আঘাতের কারণে মাত্রাতিরিক্ত রক্তপাতের ফলেই মৃত্যু হয় শশিভূষণবাবুর। লালবাজার জানিয়েছে, ওই রাস্তায় গাড়ির বেপরোয়া গতি ঠেকাতে গতি মাপার বেশ কয়েকটি স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র বসানো হয়েছে।