প্রতীকী ছবি।
সরকারি ভাবে এখনও ঘোষণা না হলেও বর্তমান টালা সেতু ভেঙে সেখানে নতুন সেতু তৈরির পথেই এগোচ্ছে রাজ্য সরকার। নতুন পরিকাঠামো তৈরির প্রাথমিক প্রস্তুতি নিতেও শুরু করেছে পূর্ত দফতর। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবারই মাটি পরীক্ষা করার জন্য দরপত্র ডাকা হয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত ৯ অক্টোবর সেতু-বিশেষজ্ঞ ভি কে রায়না রাজ্যের মুখ্যসচিবকে রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছিলেন, টালা সেতু বড়জোর দু’মাস সচল রাখা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে মেনে চলতে হবে একাধিক বিধি। তবে আজ না-হোক কাল, ওই সেতু ভেঙে নতুন সেতু তৈরি করতেই হবে। রায়নার সেই সুপারিশই মেনে নিতে চলেছে রাজ্য। এ দিনের ডাকা দরপত্রে উল্লেখ রয়েছে, প্রস্তাবিত নতুন সেতুর জন্য মাটি পরীক্ষা করা দরকার। সেই কাজে দক্ষতা থাকা সংস্থাগুলি দরপত্রে অংশ নিতে পারে। নির্বাচিত সংস্থাকে দু’সপ্তাহের মধ্যে মাটি পরীক্ষা করে সরকারকে রিপোর্ট দিতে হবে। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘যা পরিস্থিতি, তাতে নতুন সেতু তৈরি করতেই হবে। সেই কারণে জায়গা চিহ্নিত করে মাটি পরীক্ষার কাজ শুরু করা হচ্ছে।’’
সব কিছু পরিকল্পনামাফিক চললে প্রস্তাবিত নতুন টালা সেতুর নকশা তৈরি করবে পূর্ত দফতরই। সেই নকশা পরীক্ষা করবেন রেল কর্তৃপক্ষ। তাদের ছাড়পত্র পেলে সেতুর নকশা চূড়ান্ত হবে। তার পরে শুরু হবে নির্মাণকাজ। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই রেলের সঙ্গে কয়েক দফায় বৈঠক করেছেন পূর্ত দফতরের আধিকারিক-ইঞ্জিনিয়ারেরা। সেখানে প্রস্তাবিত সেতুর নির্মাণ এবং নকশা সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয়েছে দু’পক্ষে। প্রশাসনের এক কর্তা জানাচ্ছেন, টালা সেতু কয়েকটি ভাগ বা স্প্যানে বিভক্ত। ফলে সে দিকটি মাথায় রেখে নিখুঁত ‘অ্যালাইনমেন্ট’ করে তবেই নকশা তৈরির কাজ শুরু করতে হবে। টালা সেতুর উপরিভাগের একটি অংশ রেললাইনের উপর দিয়ে যাওয়ার কারণে তা রেল ওভারব্রিজ (আরওবি) হিসেবে চিহ্নিত। সেই কারণে মাঝেরহাট সেতুর মতো এই সেতুর নকশায় রেলের অনুমোদন থাকা বাধ্যতামূলক।
বর্তমান টালা সেতু ভেঙে নতুন সেতু তৈরি করতে গেলে উত্তর কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকার যান চলাচলে ব্যাপক প্রভাব পড়বে। থাকছে নিত্যযাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ার আশঙ্কাও। সেই দিকটি মাথায় রেখে বিকল্প উপায় খুঁজতে আজ, শুক্রবার পরিবহণ দফতরের বৈঠক করার কথা। বৈঠকে কলকাতা পুলিশও থাকতে পারে। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘সেতু তৈরির প্রক্রিয়া পুরোপুরি শুরু হওয়ার আগেই ওই এলাকার যান চলাচলের বিকল্প উপায় সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। সেই উপায় খুঁজতেই পরিবহণ দফতর এবং কলকাতা পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’’