জল-যাত্রা: ভারী বৃষ্টির পরে মুক্তারামবাবু স্ট্রিট। মঙ্গলবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী
পুজোর আগেই কপালে ভাঁজ বাঙালির। সৌজন্যে, বরুণদেবের মেজাজ! আশ্বিনের শুরুতেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, আজ বুধবারও বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টি কমতে পারে কাল, বৃহস্পতিবার থেকে। হাওয়া অফিসের খবর, দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশের উপরে একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। সেখান থেকে বঙ্গের উপর দিয়ে বাংলাদেশ পর্যন্ত একটি অক্ষরেখা বিস্তৃত রয়েছে। তার জেরেই এ দিন দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে।
পুজোর ঢাকে কার্যত কাঠি পড়ে গিয়েছে। চলতি সপ্তাহের শেষেই মহালয়া। কলকাতায় মহালয়ার দু’দিন পর থেকেই পুজো শুরু হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে পুজোর উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে ক্রেতা-বিক্রেতা, সকলের কপালেই চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে বৃষ্টি।
উদ্যোক্তাদের অনেকেই বলছেন, মণ্ডপ তৈরি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ সময়ে বৃষ্টিতে মণ্ডপের ক্ষতি হলে সামলানো কঠিন। অন্য দিকে, কুমোরটুলিতে প্রতিমায় পড়ছে রঙের পোঁচ। ভেজা আবহাওয়া থাকলে আখেরে কাজের ক্ষতি। উত্তরের একটি ছোট পুজোর কর্তার আকুল প্রার্থনা, ‘‘এখন বৃষ্টি হয়ে যাক। কিন্তু মহালয়ার পরে যেন না হয়।’’ আচমকা বৃষ্টিতে হতাশ ছোট দোকানিদের অনেকেই। তাঁদের বক্তব্য, এ সময়ে স্বল্পবিত্তের ক্রেতারা কেনাকাটা করতে আসা শুরু করেন। বৃষ্টিতে সেই বাজার মার খাবে।
আমজনতার প্রশ্ন, পুজোতেও কি এ বার মুক্তি নেই বৃষ্টি থেকে?
দুর্গাপুজোয় বৃষ্টি-দেবতা ব্যাঘাত ঘটাবেন কি না, তা নিয়ে এত আগে নিশ্চিত পূর্বাভাসে নারাজ আবহাওয়া দফতর। গণেশবাবুর কথায়, ‘‘কয়েক দিন পরে এ ব্যাপারে স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাবে।’’ তবে আবহবিদদের অনেকে বলছেন, নির্ঘণ্ট অনুযায়ী এ বার দুর্গার বিদায়ের পরে বর্ষা বিদায়ের পালা। তবে যেহেতু বর্ষার আগমনে দেরি হয়েছে, তাই তার বিদায়ও বিলম্বিত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে পুজোয় খটখটে আবহাওয়া মেলার আশা কম। তবে কতটা বৃষ্টি হবে, তা দেবীপক্ষের সূচনার আগে বলা কঠিন।
সুতরাং দেবীপক্ষে বাঙালির জন্য সুখবর আনতে পারে কি না, সেটাই এখন দেখার।