ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী।
গ্রে স্ট্রিট শতদল
পুরনো পুজো বলেই আজও আমাদের কোথাও থিমের ছোঁয়া নেই। এ বার সাবেক প্রতিমার রূপদান করছেন শিল্পী পশুপতি রুদ্র পাল। মণ্ডপ সাজানো হবে রঙিন কাগজে তৈরি চিনা-আলোয়। এ ছাড়া পাড়ার ছোটদের নিয়ে অনুষ্ঠানের ভাবনাও আছে। বিশ্বকর্মা পুজোর পরেই শুরু হবে মণ্ডপের কাজ। তবে মণ্ডপসজ্জার সামগ্রী তৈরির কাজ খানিকটা এগিয়ে গিয়েছে। অষ্টমীর দিন প্রায় ৮০০-৯০০ লোককে বসিয়ে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করি। সব মিলিয়ে পুজোর রেশ কিন্তু ছড়িয়ে গিয়েছে।
গড়পার মাতৃমন্দির
আমাদের পুজো এ বার পা দিল ৯৭ বছরে। কোনও কোনও বছর থিম পুজো করলেও এ বার ফিরে এসেছি প্রথাগত ধারায়। একচালার সাবেক প্রতিমা। উদ্বোধনের দিন পাড়ার বাচ্চারা নাটক আর গান করবে। বয়স্ক গুণিজনদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। সব মিলিয়ে পুজোপ্রাঙ্গণে ঘরোয়া আড্ডার পরিবেশ। অষ্টমীর দিন রয়েছে পাড়ার সকলে মিলে খাওয়ার আয়োজনও।
বেলগাছিয়া সাধারণ দুর্গোৎসব
পুজোয় মা তো সবার ঘরেই আসেন। ভালো-মন্দ, ধনী-গরিব বিচার না করেই। তাই এ বার আমরা তুলে ধরব মানুষের জীবনের উত্থান-পতনকে। এই প্রথম মণ্ডপ তৈরিতে ব্যবহার হবে মই। জীবনের দৈনন্দিন চড়াই-উতরাইকে তুলে ধরতেই এই ভাবনা। ভিতরে থাকবেন সাবেক প্রতিমা। আর রোজই থাকছে হরেকরকম ভোগের আয়োজন।
হাটখোলা গোঁসাইপাড়া
ঐতিহ্যপূর্ণ এই পুজোর এ বার ৭৮তম বর্ষ। আমাদের পুজোয় ‘ত্রিশক্তি’ রূপে মা আসবেন। মণ্ডপ ও প্রতিমার সজ্জায় দেখানো হবে দুর্গার সৃষ্টির রূপ। থার্মোকল, প্লাস্টিকের নানাবিধ জিনিসে সাজবে মণ্ডপ। শিল্পী স্বপন পালের ভাবনায় প্রতিমা সাবেক ধাঁচের হলেও থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্যও থাকছে। উদ্বোধনের দিন থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সব মিলিয়ে আমাদের পুজো কিন্তু দর্শনার্থীদের নজর কাড়বে।
জোড়াসাঁকো ৭-এর পল্লি
আমাদের পুজো এ বার নবরাত্রির রঙের ছোঁয়ায় রঙিন। তাই ভাবনা ‘রঙের খেলাতে, আলোর ছটাতে’। মণ্ডপে আলোকসজ্জায় থাকবে চমক। পার্থ দাসের ভাবনায় মণ্ডপে ব্যবহার হচ্ছে ছাঁকনি, লুফা জাতীয় নানা জিনিস। প্রসেনজিৎ মাজির প্রতিমা সাবেক হলেও দেবীমূর্তির গায়ে এবং শাড়িতে থাকবে ন’টি রঙের ছোঁয়া। দর্শনার্থীরাও রঙিন হবেন নবরাত্রির রঙে।
৯-এর পল্লি
বরাবরের ঐতিহ্য বজায় রেখে এ বারও আমাদের প্রতিমা সাবেক। দুর্গাপুজো আমাদের কাছে পুনর্মিলন উৎসব। এই পাড়া, শহর বা দেশ ছেড়ে যাওয়া বন্ধুরা আবার এক হন। দিনভর আড্ডাতেই কোথা দিয়ে কেটে যায় চার-চারটে দিন। সবাই মিলে মঞ্চস্থ করি নৃত্যনাট্য, নাটক। পুজো তাই আমাদের গোটা পাড়াকে এক করে রাখে।
মল পল্লি (দমদম)
আমাদের পুজো দেখে দর্শক কিছু ক্ষণের জন্য ফিরে যাবেন শৈশবে। মণ্ডপ সাজবে শৈশবের ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসে। দুর্গাও থাকছেন মানবী মায়ের রূপে। পঞ্চমীতে বস্ত্রদান ও সঙ্গীতানুষ্ঠান দিয়ে শুরু। দশমীর সিঁদুর খেলায় শেষ। মাঝে থাকবে ভোগ এবং এক সঙ্গে দুপুরে পাত পেড়ে খাওয়া।
পূর্ব কলিকাতা সর্বজনীন
আমাদের এ বারের থিম ‘দু’টি চাকা, দু’টি প্রাণ/ তাতে দেবীর অধিষ্ঠান’। পূর্ব কলকাতা সর্বজনীন (ফুলবাগান)-এর মণ্ডপ হবে তারের জালে। মণ্ডপ সাজানোর জিনিস ইতিমধ্যেই তৈরি। ক’দিন পরেই শুরু হবে মণ্ডপের কাজ। কালো-সোনালি রঙে সাজবে প্রতিমা। পঞ্চমীর দিন যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে, তার দায়িত্বে আছেন কল্যাণ সেন বরাট। আবহসঙ্গীতের দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি।
বেলেঘাটা সর্বজনীন দুর্গাপূজা
আমাদের পুজোয় চাঁদার দাবি নেই, মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে যা দেন, তা দিয়েই পুজোর আয়োজন করা হয়। মন্দিরের আদলে তৈরি মণ্ডপে থাকবে ঝলমলে সাজের প্রতিমা। সপ্তমীর দিন আমরা বাবুঘাটে যাই কলাবউ স্নান করানোর জন্য। সেখান থেকে ঘট নিয়ে শোভাযাত্রা করে মণ্ডপে ফিরি। বহু দিন ধরে চলে আসছে এই প্রথা। নবমীর দিন পাড়ার সকলকে ভোগ বিতরণ করা হয়।
বাঙুর অ্যাভিনিউ প্রতিরোধ বাহিনী
বাঁকুড়ার পাঁচমুড়া গ্রামের টেরাকোটা পুতুলে সাজবে আমাদের মণ্ডপ। অখ্যাত শিল্পীদের স্বীকৃতি দিতেই এই উদ্যোগ। প্রতিমার মধ্যেও থাকবে গ্রাম্য আদল। পাড়াতেও শিল্পীরা এসে পুতুল তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছেন। বাসিন্দারা এ পুজোর সঙ্গে আন্তরিকভাবে জড়িত। ষষ্ঠীর দিন আমরাই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করছি। এই পুজোর বাড়তি আকর্ষণ মেলা, যা চলবে লক্ষ্মীপুজো পর্যন্ত।