ইডির হাতে গ্রেফতার রঞ্জন মণ্ডল। —ফাইল চিত্র।
কলকাতা হাই কোর্ট দিন ছয়েক আগেই সিবিআই মামলায় তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছিল। তবে জেলমুক্তির আগেই আবার গ্রেফতার হলেন চন্দন মণ্ডল ওরফে ‘সৎ রঞ্জন’। এ বার ইডির হাতে গ্রেফতার হলেন তিনি।
স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছিল বাগদার বাসিন্দা রঞ্জনের। মঙ্গলবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে (বিচার ভবন) তাঁর ‘শোন অ্যারেস্টে’র আবেদন জানিয়েছিল ইডি। সেই আবেদন মঞ্জুর হতেই রঞ্জনকে গ্রেফতার করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। ইডি সূত্রে খবর, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। আগামী সোমবার পর্যন্ত তাঁর ইডি হেফাজত মঞ্জুর করেছেন বিচারক।
নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম জড়িয়েছে। সেই সূত্র ধরেই সিবিআই তাঁকে নিজ়াম প্যালেসে ডেকে একাধিক বার জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে তাঁকে গ্রেফতারও করে। সিবিআই তাঁকে দু’টি মামলায় গ্রেফতার করেছিল। গ্রুপ সি এবং নবম-দশম শ্রেণিতে নিয়োগ মামলায়। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই জেলেই রঞ্জন।
গত ২০ নভেম্বর রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ ন’জনের জামিন মামলার রায়দান ছিল। সেই তালিকায় ছিলেন রঞ্জনও। জামিন মঞ্জুর করা নিয়ে সে দিন বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেয়। বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় ন’জনেরই জামিন মঞ্জুর করেছিলেন। কিন্তু বিচারপতি সিংহ রায় ভিন্ন মত দেন। তিনি সকলের জামিন মঞ্জুর করেননি। ন’জনের মধ্যে চার জন— কৌশিক ঘোষ, শেখ আলি ইমাম, সুব্রত সামন্ত রায় এবং রঞ্জনের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারপতি সিংহ রায়। জামিন মঞ্জুর হলেও জেল থেকে মুক্তি পাননি রঞ্জন। জামিনের শর্ত পুরোপুরি মানার ব্যাপারে জটিলতার কারণে জেল থেকে ছাড়া পাননি তিনি। যদিও রঞ্জনের আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা জানান, হাই কোর্টে জামিন মঞ্জুর হওয়ার পর জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার যাবতীয় কাজ ২২ নভেম্বরের মধ্যেই শেষ করা হয়। কিন্তু তার পরও কেন তাঁকে জেলে আটকে রাখা হয়েছিল, জানা নেই। এ ব্যাপারে হাই কোর্টে দ্বারস্থ হওয়ার ভাবনাচিন্তাও করছেন বলে জানান রঞ্জনের আইনজীবী। জামিন পাওয়ার পরেই তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ইডি। মঙ্গলবার তাঁকে গ্রেফতার করা হল।
গত বছরের গোড়ার দিকে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা প্রাক্তন সিবিআই কর্তা উপেন বিশ্বাসের একটি পুরনো ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছিল। সেখানেই ‘রঞ্জন’-এর কথা বলেছিলেন উপেন। অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে বহু চাকরিপ্রার্থীকে সরকারি চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন ওই ‘রঞ্জন’। রঞ্জনের প্রকৃত নাম-ধামও সেই সময় প্রকাশ করেননি তিনি। যদিও পরে আদালতে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার আবেদনকারীরা প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন রঞ্জনের আসল নাম চন্দন মণ্ডল।