বৃষ্টির আশঙ্কায় বিকল্প প্রস্তুতি পাড়ায় পাড়ায়

শহরের অধিকাংশ পুজোকর্তার মনে এখন শুধুই বৃষ্টি-আতঙ্ক। বৃষ্টির জেরে পুজো যাতে পণ্ড না হয়, তার জন্য কোমর বেঁধে নেমেছেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:২৬
Share:

একডালিয়া এভারগ্রিনের মণ্ডপে ব্যবহার করা হয়েছে জল-নিরোধক প্লাই। জল যাতে না জমে, তার জন্যও করা হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। নিজস্ব চিত্র

কেউ মণ্ডপের ভিতরের ঢাকা অংশের জায়গা বাড়িয়েছেন। কেউ আবার মণ্ডপ তৈরি করিয়েছেন জল-নিরোধক প্লাইউড দিয়ে। অনেকেই মণ্ডপের পাশে তৈরি রাখছেন পাম্প। যাতে জল জমলেও তা পাম্প করে বার করে দেওয়া যায়। মণ্ডপ সংলগ্ন নিকাশি নালা সাফাইয়ের কাজও শুরু করে দিয়েছেন কেউ কেউ।

Advertisement

শহরের অধিকাংশ পুজোকর্তার মনে এখন শুধুই বৃষ্টি-আতঙ্ক। বৃষ্টির জেরে পুজো যাতে পণ্ড না হয়, তার জন্য কোমর বেঁধে নেমেছেন তাঁরা। কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, পুজোয় যদি বৃষ্টি না হয়, তা হলে তো খুবই ভাল। কিন্তু বৃষ্টি হলেও তাঁদের যা প্রস্তুতি আছে, তাতে মণ্ডপ ভেসে যাবে না। বৃষ্টি মাথায় নিয়েও উৎসবের রং ম্লান হবে না। বৃষ্টির জমা জলে বিদ্যুতের তার পড়ে যাতে কোনও অঘটন না ঘটে, সে ব্যাপারেও সচেতন থাকছেন তাঁরা। মণ্ডপে ছড়ানো হচ্ছে অগ্নি-নিরোধক স্প্রে।

বোসপুকুর শীতলা মন্দিরের মণ্ডপে গিয়ে দেখা গেল, পুজোর প্রস্তুতি তুঙ্গে। চলছে মণ্ডপসজ্জার কাজ। বিভিন্ন রঙের পেনসিল দিয়ে তৈরি হয়েছে প্রজাপতি। পাখির ডানা তৈরি হয়েছে বইয়ের দু’টি পাতা দিয়ে। কিন্তু এই পাখি বা প্রজাপতি সবই উড়ছে ত্রিপলের নীচে। বৃষ্টির আতঙ্কে বোসপুকুরের মণ্ডপসজ্জা পুরোটাই ত্রিপলের ভিতরে। পুজোর কর্মকর্তা কাজল সরকার বললেন, ‘‘এ বার অক্টোবরের প্রথমে পুজো হওয়ায় বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছেই। তাই একটি প্রাথমিক প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু পুজো এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে যে ভাবে বৃষ্টির ভ্রূকুটি বাড়ছে, তাতে আমরা এ বার বেশ কিছু অতিরিক্ত প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।’’ কাজলবাবু জানান, তাঁদের মণ্ডপে এ বার প্রবেশপথ বাদে পুরোটাই রয়েছে ত্রিপলের নীচে। খাবারের স্টলগুলিও ঢাকা থাকবে ত্রিপলে।

Advertisement

রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের পুজো একডালিয়া এভারগ্রিনের মণ্ডপের গোটা কাঠামোই তৈরি হচ্ছে জল-নিরোধক প্লাই দিয়ে। সুব্রতবাবু বললেন, ‘‘মণ্ডপ এমন ভাবে তৈরি হয়েছে, যাতে কোথাও জল জমতে না পারে। মণ্ডপসজ্জায় ওয়াটারপ্রুফ প্লাইউড ব্যবহার করা হয়েছে। বৃষ্টি হলেও যাতে প্রতিমা দর্শনে কোনও অসুবিধা না হয়, সে দিকেই সব থেকে বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে।’’ বেহালার বড়িশা ক্লাব বা ত্রিধারার কর্মকর্তারাও জানাচ্ছেন, তাঁদের মণ্ডপেরও বেশির ভাগটাই থাকছে ত্রিপলের নীচে। বেশি বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে মণ্ডপ বানানোর সময়ে দু’টি ত্রিপলও কোথাও কোথাও ব্যবহার করা হচ্ছে।

অন্য দিকে, উত্তরের ত্রিধারার পুজোকর্তারা জানাচ্ছেন, তাঁরা কিনে রেখেছেন বেশ কিছু ছাতা ও রেন কোট। পুজোর এক কর্তা সন্দীপ বসু বললেন, ‘‘পুজোর সময়ে বৃষ্টি হলে প্রবীণ দর্শনার্থী বা বাচ্চাদের যাতে ভিজতে না হয়, তার জন্য কয়েক জন স্বেচ্ছাসেবক ছাতা নিয়ে থাকবেন। আমাদের পুজোর থিমের সাজসজ্জা সবই থাকছে ত্রিপলের নীচে।’’ অন্য দিকে, কাশী বোস লেনের পুজোর কর্মকর্তা সৌমেন দে বললেন, ‘‘মণ্ডপে তিনটে পাম্প রেখেছি। জল জমলেই পাম্পের সাহায্যে তা বার করে দেওয়া হবে। মণ্ডপের আশপাশে নিকাশি নালা পরিষ্কারের কাজ শুরু করেছি। যাতে বৃষ্টি হলেও জল নিকাশি নালা দিয়ে বেরিয়ে যায়।’’ ভিআইপি রোডের আর এক বড় পুজো শ্রীভূমির কর্মকর্তারাও জানালেন, তাঁরাও এ বার বেশ কয়েকটি পাম্প এনে রাখছেন। বেশি বৃষ্টি হলে পাম্পের সাহায্যে জল নামিয়ে দেওয়া হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement