কলকাতা বইমেলা। —ফাইল চিত্র।
আগামী বছরের কলকাতা বইমেলায় নতুন প্রকাশনা সংস্থার সংখ্যা অন্তত ৫০-৬০টির মতো বাড়ছে। রবিবার এমনটাই জানালেন ‘পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ড’-এর সাধারণ সম্পাদক সুধাংশুশেখর দে। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘গত বার যে সমস্ত নতুন প্রকাশক মাত্র ৫০ বর্গফুটের স্টল দিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই এ বার একটু বড় স্টল দিতে চান। সেই সঙ্গে এ বার অন্তত ৫০ থেকে ৬০ জন নতুন প্রকাশক বইমেলায় স্টল দেবেন। সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাঁদের স্টলের জায়গাও বাড়ানো হবে।’’
গত বার বইমেলায় নতুন প্রকাশকদের অংশগ্রহণ করার উৎসাহ দেখে তাঁদের জন্য ৫০ বর্গফুটের ছোট স্টলের ব্যবস্থা করেছিল গিল্ড। ১০০ বর্গফুটের এক-একটি স্টলকে অর্ধেক করে দু’টি স্টলের ব্যবস্থা করেছিল তারা। গিল্ডের এক কর্তা জানান, এ বার আগের বারের তুলনায় আরও বেশি সংখ্যক নতুন প্রকাশক মেলায় স্টল দিতে আবেদন করেছেন। গত বার বই বিক্রি ভাল হয়েছে দেখে নতুন প্রকাশকদের অনেকেই আগামী বইমেলায় অংশ নিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে চাইছেন। গত বার ৫০টির মতো এমন স্টল ছিল। এ বার অন্তত ১০০টি ওই রকম স্টল হবে। সেই সঙ্গেই সুধাংশুশেখর বলেন, ‘‘গত বার যে সমস্ত ছোট প্রকাশনা সংস্থা বইমেলায় স্টল দিয়েছিল, তাদের বইয়ের সংখ্যাও এ বার বেড়েছে। অনেক সংস্থাই নতুন নতুন বিষয়ের উপরে বই করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখ রাখলেই দেখা যাচ্ছে, প্রকাশকেরা নতুন নতুন বইয়ের উদ্বোধনের কথা ঘোষণা করছেন। নতুন বইয়ের অনেকগুলিরই উদ্বোধন বইমেলায় হবে। সেই সমস্ত বই সামনে সাজিয়ে রাখার জন্য জায়গাও তো দরকার। তাই যাদের বই বেড়েছে, তাদের ৫০ বর্গফুটের বদলে ১০০ বর্গফুট জায়গা দেওয়া যায় কি না, তার চেষ্টা হচ্ছে।’’ শুধু নতুন প্রকাশকদের জায়গাই নয়, এ বার বইমেলায় লিটল ম্যাগাজ়িনের টেবিলের সংখ্যাও বাড়ানো হবে বলে জানাচ্ছেন বইমেলার কর্তারা।
প্রতি বছর লক্ষাধিক মানুষের ভিড় হয় বইমেলায়। দমকলের গাড়ি ঢোকানোর জায়গা থেকে শুরু করে নিরাপত্তার সব রকম নিয়ম মেনেই স্টল দিতে হবে। অথচ, সল্টলেকের করুণাময়ীতে বইমেলার মাঠের জায়গা তো একই থাকছে। তা হলে কী ভাবে বাড়ানো হবে স্টল? গিল্ডের কর্তারা জানাচ্ছেন, কী ভাবে সব বিধি মেনে স্টলের সংখ্যা বাড়ানো যায়, তা নিয়ে বইমেলার মাঠে ইতিমধ্যেই সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। গত বার ফুড কোর্ট যেখানে ছিল, তার আশপাশে কিছু স্টল বসানো যায় কি না, দেখা হচ্ছে। সুধাংশুশেখর বলেন, ‘‘আমরা সমীক্ষা করে দেখেছি, এ বারের বইমেলায় বইয়ের সংখ্যা গত বারের চেয়ে বাড়বে।’’
৪৭তম কলকাতা বইমেলা শুরু হচ্ছে আগামী ১৮ জানুয়ারি। শেষ হবে ৩১ জানুয়ারি। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং অন্যান্য বোর্ডের পরীক্ষার কথা চিন্তা করে এ বার বইমেলা খানিকটা এগিয়ে আনা হয়েছে। এ বারের বইমেলায় ছুটির দিন হিসাবে দুটো করে শনিবার এবং রবিবার ছাড়াও ২৩ জানুয়ারি ও ২৬ জানুয়ারি পাওয়া যাচ্ছে। গত বার ২৬ লক্ষ বইপ্রেমীর সমাগম হয়েছিল বইমেলায়। আর বই বিক্রি হয়েছিল ২৫ কোটি টাকার মতো। এ বার অতিরিক্ত দু’দিন ছুটি থাকায় আরও বেশি বইপ্রেমীর ভিড় হবে এবং আরও বেশি বই বিক্রি হবে বলেই মনে করছেন গিল্ডকর্তারা।