—প্রতীকী চিত্র।
পুরসভার সাফাইকর্মীদের হাজিরা দিতে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে। পুরসভার বিভিন্ন বরো অফিসে কেবল সাফাইকর্মীদের হাজিরার জন্য বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হয়েছে। এর প্রতিবাদে শুক্রবার হাতিবাগানে দু’নম্বর বরো অফিসে বিক্ষোভ দেখান সাফাইকর্মীরা। তাঁরা দীর্ঘক্ষণ বরো অফিসের সামনে বিধান সরণি অবরোধ করে রাখেন। রাস্তা অবরোধের জেরে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিলে বিক্ষোভ-অবরোধ উঠে যায়।
দিন দুয়েক আগে একই বিষয়ে ফুলবাগানে তিন নম্বর বরো অফিসের সামনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন সেখানকার সাফাইকর্মীরা। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত পুরসভার সাফাইকর্মীদের কাজ করতে হয়। তাঁদের বর্তমান হাজিরা-নীতি অনুযায়ী তাঁরা যে ওয়ার্ড অফিসে কর্মরত, সেই অফিসে সকাল ৬টায় গিয়ে বায়োমেট্রিক মেশিনে আঙুল স্পর্শ করতে হবে। ফের দুপুরে কাজ শেষ হয়ে গেলে বাড়ি ফেরার আগে ওয়ার্ড অফিসে গিয়ে হাজিরা দিতে হবে।
সাফাইকর্মীদের অভিযোগ, পুরসভার প্রত্যেকটি ওয়ার্ড আয়তনে বেশ বড়। তাঁরা কাজের তুলনায় এমনিতেই কম বেতন পান। এ দিকে, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা দিতে গিয়ে কর্মস্থল থেকে হেঁটে ওয়ার্ড অফিস আসতে বেশ সময় লাগে। হাতিবাগানে বিক্ষোভরত এক সাফাইকর্মীর অভিযোগ, ‘‘আমরা পুরসভার যে আবাসনে থাকি, সেখানে একই শৌচাগার অনেকে ব্যবহার করি। এর জন্য সকালে বাড়ি থেকে বেরোতে দেরি হয়। কিন্তু, কোনও দিন পাঁচ মিনিট দেরিতে ঢুকে বায়োমেট্রিক মেশিনে হাজিরা দিয়ে সারা দিন কাজ করলেও অনুপস্থিত দেখাচ্ছে। সামান্য দেরি হলেও কেন আমাদের অনুপস্থিত দেখানো হবে?’’ কর্মীদের দাবি, আগের মতো খাতায় সই করে তাঁদের হাজিরার পদ্ধতি ফিরিয়ে আনা হোক। তাঁদের হুঁশিয়ারি, কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে তাঁদের দাবি না মানলে শীঘ্রই বড় আন্দোলনে শামিল হবেন তাঁরা।
কলকাতা মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড অ্যালায়েড অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মানস সিংহের দাবি, ‘‘বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করতে হলে পুরসভার সমস্ত স্তরের কর্মীদের জন্যই চালু করা উচিত। পুরসভার সদর দফতরে এখনও অনেক কর্মী বেলা ১২টায় অফিসে ঢুকে ৪টেয় বাড়ি চলে যান।’’ কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ বিভাগ) দেবব্রত মজুমদার বলেন, ‘‘কর্মীরা যাতে ঠিক সময়ে কাজে যোগ দেন, তাই বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হয়েছে। কর্মসংস্কৃতি ফেরাতে এই উদ্যোগ। শহর পরিচ্ছন্ন রাখতে সাফাইকর্মীদের দায়িত্ব অনেকখানি। পুরসভার সর্বস্তরের কর্মীদের জন্য বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হবে। সাফাইকর্মীদের জন্য আগেই শুরু হয়েছে।’’