—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির বিজ্ঞপ্তিতে স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য সরাসরি ভর্তির পাশাপাশি বাইরের পড়ুয়াদের জন্য লটারি ব্যবস্থায় ভর্তির কথাও উল্লেখ করেছিলেন কর্তৃপক্ষ। এ-ও বলা ছিল, এ ক্ষেত্রে স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। কিন্তু অভিভাবকেরা দাবি তোলেন, চতুর্থ শ্রেণির সব ছাত্রীকেই পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি নিতে হবে। আর তাঁদের সেই দাবিকে কেন্দ্র করে বুধবার সকালে উত্তেজনা ছড়াল শিয়ালদহের টাকি হাউস গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড গার্লস হাইস্কুলে। প্রায় ঘণ্টাখানেক এমন অবস্থা চলার পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের জানান, শিক্ষা দফতরের নিয়ম অনুযায়ী তাঁরা একই চত্বরে (প্রেমিসেস) থাকা প্রাথমিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ১০৮ জন ছাত্রীকেই পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি নেবেন। এই আশ্বাসবাণীতে স্বস্তি পান অভিভাবকেরা।
টাকি গার্লস হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, তাঁদের চত্বরে প্রাথমিক স্কুলটি থাকলেও সেটির প্রধান শিক্ষিকা এবং পরিচালন সমিতি হাইস্কুলের থেকে সম্পূর্ণ পৃথক। দু’টি স্কুলের নাম এক হলেও পৃথক দুই ভবনে পঠনপাঠন চলে। কিন্তু শিক্ষা দফতরের নিয়ম অনুযায়ী, একই
চত্বরে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুল থাকলে চতুর্থ শ্রেণির সব পড়ুয়াকে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি নিতেই হবে। ওই দুই স্কুলের পরিচালন সমিতি, প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকা আলাদা হলেও এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। আর গোলমাল বেধেছে ঠিক এখানেই। প্রাথমিক স্কুলটির কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, তাঁদের পঞ্চম শ্রেণিতে আসন সংখ্যা ৮০। অথচ, চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া রয়েছে ১০৮ জন। সবাইকে ভর্তি নিতে হলে বাকি ২৮ জন পড়ুয়াকে তাঁরা বসাবেন কোথায়?
সমস্যা রয়েছে আরও। প্রাথমিক স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে তাঁদের প্রাথমিকের পড়ুয়াদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন তাঁরা। সেই সঙ্গে অন্য স্কুলের পড়ুয়ারাও যাতে এখানে পড়ার সুযোগ পায়, তাই শিক্ষা দফতরের নিয়ম মেনে তাদের জন্য লটারি করার কথাও উল্লেখ করেছিলেন। কর্তৃপক্ষের প্রশ্ন, ১০৮ জন পড়ুয়া পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে গেলে অন্য স্কুলের পড়ুয়ারা সুযোগ পাবে কী ভাবে?
শিক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই ধরনের সমস্যা শুধু টাকি স্কুলের ক্ষেত্রেই নয়, হচ্ছে অন্য স্কুলেও। তাই একই চত্বরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুল থাকলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির নিয়ম পাল্টানো দরকার। ‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘‘একই চত্বরে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল থাকলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির সময়ে তার নিয়ন্ত্রক হয়ে যাচ্ছে প্রাথমিক স্কুল। পঞ্চম শ্রেণিতে যত আসনই থাক, প্রাথমিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির সব পড়ুয়াকে ভর্তি নিতেই হচ্ছে। এর ফলে লটারির মাধ্যমে ভর্তি হতে পারছে না অন্য স্কুলের পড়ুয়ারা। ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও তারা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’’
এই নিয়মের পরিবর্তন হবে কি? শিক্ষা দফতরের এক কর্তা শুধু বলেন, ‘‘যে নিয়ম আছে, আপাতত সেই অনুযায়ীই স্কুলগুলিকে ভর্তি করতে হবে।’’