মিছিল করে আসছেন পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।
যাদবপুরে মৃত পড়ুয়ার ‘খুনে’র পিছনে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের সকলের শাস্তি দাবি করে মিছিল করলেন নদিয়ার বগুলা এলাকার কিছু তরুণ-তরুণী। বুধবার দুপুরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে ‘বিচার চেয়ে’ মিছিল করেন তাঁরা। উল্লেখ্য যে, যাদবপুরের মৃত পড়ুয়ার বাড়ি নদিয়া জেলার বগুলাতেই। বুধবারের মিছিলে অংশ নেন বগুলা এলাকার বেশ কয়েক জন গৃহশিক্ষকও।
বুধবার সকাল ৮টা ৪০ নাগাদ হঠাৎ ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান তুলে কৃষ্ণনগর লোকালে ওঠেন এক দল তরুণ-তরুণী। তাঁদের হাতে ছিল প্রতিবাদী ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন, কালো ব্যাচ, আর গলায় ঝোলানো ছিল মৃত পড়ুয়ার ছবি। আগেই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এবং হস্টেলে র্যাগিং বন্ধের দাবিতে ও বগুলার সন্তানের মৃত্যুর সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকের কঠোর শাস্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় অভিযানের ডাক দিয়েছিল ‘বগুলা ছাত্র সমাজ’ বলে একটি মঞ্চ। শুধু বগুলা নয়, নদীয়ার একাধিক স্টেশন থেকে যাদবপুর অভিযানে শামিল হন ছাত্রছাত্রীরা। ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে অংশ নেন বেশ কিছু শিক্ষকও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর প্রতিবাদে এবং দোষীদের শাস্তির দাবিতে শুক্রবার নদিয়ায় পথে নেমেছিল একাধিক স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা। ওই দিনই স্থির হয়, বুধবার ৯টা থেকে কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, বগুলা, হাঁসখালি-সহ একাধিক স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠে যাদবপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন কয়েকশো ছাত্রছাত্রী। বেশির ভাগ জায়গাতে তাঁদের নেতৃত্ব দেন গৃহশিক্ষকেরা। মঞ্চটির তরফে দোষী প্রত্যেককে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তোলা হয়।
মিছিলে অংশ নেওয়া বগুলা উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়া সুভাষ নস্কর বলেন, “আর কয়েক মাস বাদেই আমরা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে যাব। সেখানকার পরিবেশ যদি র্যাগিংমুক্ত না হয়, তা হলে আবার আমাদের মধ্যে থেকে কাউকে বলি হতে হবে। এর চিরস্থায়ী সমাধান চাই।” মিছিলে অংশ নেন পদার্থবিদ্যার গৃহশিক্ষক নব্যেন্দু বিশ্বাস। তিনি বলেন, “এটা কোনও ভাবেই অস্বাভাবিক মৃত্যু নয়। তদন্ত যত এগোচ্ছে, এটা পরিষ্কার হচ্ছে যে, এটা দীর্ঘ দিনের চলে আসা একটা ব্যবস্থার ফল। প্রাতিষ্ঠানিক খুন। যারা গাফিলতির সঙ্গে যুক্ত এবং যারা খুনে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে যুক্ত, প্রত্যেকের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।”