আরজি করের ঘটনায় জুনিয়র চিকিৎসকদের বিক্ষোভ। — নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর হাসপাতালে জুনিয়র চিকিৎসকদের বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। হাসপাতাল চত্বরে মিছিল বার করেছেন তাঁরা। তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার বিচার চাইছেন সকলে। আন্দোলনকারীরা দাবি করেছেন, অবিলম্বে এই ঘটনার দোষীদের শাস্তি দিতে হবে। না হলে তাঁরা কাজ করবেন না। পরিষেবাও বন্ধ থাকবে। আরজি কর হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকেরা নিরাপত্তাজনিত অনিশ্চয়তায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন। আরজি করের ঘটনার প্রভাব পড়েছে শহরের অন্য সরকারি হাসপাতালগুলিতেও। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ইতিমধ্যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। পাশাপাশি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে। প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিশুমঙ্গল হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকেরা।
ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
শনিবার সকাল থেকে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিল শুরু করেছেন আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসকেরা। মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে স্লোগান দিচ্ছেন। এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘আমাদের কোনও নিরাপত্তা নেই এখানে। গত দিনের ঘটনার পর আমরা ভয়ে আছি। আমাদের পরিবার চিন্তায় আছে। আমাদের এক জনকে হাসপাতালের মধ্যে ধর্ষণ করে খুন করে ফেলে দেওয়া হল। তার পরেও কী ভাবে আমরা এই হাসপাতালে কাজ করব?’’ আরও এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘‘ওঁর সঙ্গে যা হয়েছে, আগামী দিনে তা আমার সঙ্গেও হতে পারে। আমরা এখানে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করি। নিরাপত্তা নিশ্চিত না করলে, দোষীদের কঠোর শাস্তি না হলে আমরা কাজে ফিরব না।’’ আরজি করে আন্দোলনরত এক তরুণী চিকিৎসক বলেছেন, ‘‘রাতে হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। রাতে হাসপাতালের মধ্যে এক জন চিকিৎসক কী ভাবে ধর্ষিতা হলেন? নিরাপত্তা তা হলে কোথায়?’’
আরজি করের ঘটনায় জুনিয়র চিকিৎসকদের বিক্ষোভ ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। — নিজস্ব চিত্র।
মিছিল নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে আরজি কর থেকে শ্যামবাজার মোড়ের দিকেও গিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। ইতিমধ্যে আরজি করে রোগীদের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। জুনিয়র চিকিৎসকেরা কাজ বন্ধ রাখায় পরিষেবায় সমস্যা হচ্ছে। যদিও জরুরি বিভাগ খোলা রয়েছে বলে খবর। পাশাপাশি হাসপাতাল চত্বরে পুলিশি নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে। পরিস্থিতি যাতে হাতের বাইরে না বেরিয়ে যায়, তাই আগে থেকে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার আরজি করের জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার হল থেকে এক তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে তাঁর মুখ, পেট, গলা, ঠোঁট, এমনকি যৌনাঙ্গেও আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। ধর্ষণ এবং খুনের মামলা রুজু করে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ইতিমধ্যে এক জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে সেই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকেরা শনিবার বহির্বিভাগে জমায়েত করবেন। দুপুরে মিছিল করে মেডিক্যাল কলেজ থেকে আরজি করে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। তবে এই হাসপাতালেও জরুরি বিভাগ চালু রয়েছে।