ফাইল চিত্র।
পথ-নিরাপত্তার স্বার্থে রাজ্য পরিবহণ দফতর ঘোষিত জরিমানার নতুন হার ‘ভয়াবহ’ বলে দাবি করেছিল একাধিক বেসরকারি পরিবহণ সংগঠন। বৃহস্পতিবার তারা রাজ্যের সেই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। পরিবহণ দফতর এবং পুলিশের কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছে কয়েকটি সংগঠন।
এ দিন সকালে রাসবিহারী মোড়ে ঘণ্টা দেড়েক বিক্ষোভ দেখায় কয়েকটি বাস, অ্যাপ-ক্যাব এবং ট্যাক্সি সংগঠন। পরে পরিবহণ দফতরের সচিবের হাতে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ড’, ‘অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’, ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’, ‘নর্থ বেঙ্গল প্যাসেঞ্জার ট্রান্সপোর্ট অপারেটর্স কোঅর্ডিনেশন কমিটি’, ‘কলকাতা-মেদিনীপুর বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’ এবং ‘বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন’-এর স্বাক্ষরিত চিঠি পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে পাঠানো হয়।
‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’ ও ‘অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা এবং রাহুল চট্টোপাধ্যায় জানান, দু’বছর আগে কেন্দ্র ওই নির্দেশিকা জারি করলে রাজ্য তখন বিরোধিতা করে। তবুও কেন ওই নির্দেশিকা রাজ্য জারি করল, প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ড’-এর সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে ক্ষেত্রে জরিমানা ১০০ টাকা ছিল, তা ৫০০ টাকা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধানও রয়েছে।’’
প্রতিবাদে সরব বামপন্থী সংগঠন এআইটিইউসি-র অ্যাপ-ক্যাব ও ট্যাক্সি চালকেরাও। শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে তাঁরা দুপুর দুটো থেকে ঘণ্টা দুয়েক বিক্ষোভ দেখান। পরে পরিবহণমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের নেতা নওলকিশোর শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘ডিজ়েলের দাম বাড়লেও ভাড়া বাড়েনি। ১ ফেব্রুয়ারি লেনিন মূর্তির সামনে প্রতিবাদ করা হবে। সরকার পুনর্বিবেচনা না করলে ধর্মঘটে যেতে হবে।’’
অন্য বামপন্থী সংগঠন সিটুর অ্যাপ-ক্যাব চালকেরা পরিবহণ সচিব এবং ডেপুটি কমিশনারের (ট্র্যাফিক) কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। পরিবহণ ভবন এবং হাওড়া ব্রিজ ট্র্যাফিক গার্ডের সামনেও বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। সভাপতি ইন্দ্রজিৎ ঘোষের প্রশ্ন, ‘‘সরকার ওই নির্দেশের বিরোধিতা করেও এখন কেন কার্যকর করছে?’’
নতুন হারে জরিমানা আদায় করলে আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা করছেন পুলিশের একাংশ। পরিবহণ ভবন সূত্রের খবর, সরকার পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে। পথ নিরাপত্তাই অগ্রাধিকার।