দূষণের মাত্রা অনুযায়ী কলকাতাকে কয়েকটি জ়োনে ভাগ করা হবে। ফাইল চিত্র।
দূষণের মাত্রা অনুযায়ী কলকাতাকে কয়েকটি জ়োনে ভাগ করা হবে। জ়োন-ভিত্তিক দূষণের মাত্রা অনুযায়ী তা রোধের পরিকল্পনা তৈরি হবে। সে জন্য বিশেষজ্ঞদের থেকে পরামর্শও নেওয়া হবে। গত মাসেই পরিবেশবিদদের সঙ্গে কলকাতা পুরসভার এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিশ্ব পরিবেশ দিবসের আগের দিন, শনিবার এমনটাই জানিয়েছেন পরিবেশ দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার।
স্বপনবাবুর কথায়, ‘‘শহরের সব জায়গায় বায়ুদূষণ, শব্দদূষণের মাত্রা সমান নয়। তাই আমরা জ়োন-ভিত্তিক দূষণ নিয়ন্ত্রণে জোর দিয়েছি। এক মাস পর থেকে সেই অনুযায়ী কাজ শুরু হবে।’’ পরিবেশ নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে পুর প্রতিনিধিদল বছরভর স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের কাছে যাবে। তার মৌলিক উদ্দেশ্য হল, পরিবেশ সম্পর্কে পরবর্তী প্রজন্মকে সচেতন করা। যদিও এর আগেও শহরের বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করেছিল পুরসভা। যাদের রিপোর্ট জমা পড়া নিয়ে দীর্ঘ টালবাহানাও চলে। ফলে, এ বারের উদ্যোগ কতটা বাস্তবায়িত হবে, তা নিয়ে সংশয়ে অনেকেই।
এমনিতে শহরের বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, জলাভূমি ভরাট, পূর্ব কলকাতা জমাভূমিতে বেআইনি নির্মাণ-সহ একাধিক বিষয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। যেখানে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পাশাপাশি কলকাতা পুরসভারও নাম জড়িয়েছে। মামলাগুলির প্রেক্ষিতে পরিবেশ আদালতের নানা নির্দেশ রয়েছে। সেই নির্দেশ মানার ক্ষেত্রে পুরসভা-সহ রাজ্য সরকারের যথেষ্ট গাফিলতিও রয়েছে বলে জানাচ্ছেন পরিবেশকর্মীরা।
এক পরিবেশবিদের বক্তব্য, ‘‘প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে শুধু পরিবেশ নিয়েই যে কতগুলো কমিটি হয়েছে, তা গুনে শেষ করা যাবে না। তবু পরিবেশ রক্ষা হয় কোথায়!’’ পরিবেশ আদালতে একাধিক বিষয়ে মামলাকারী পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলছেন, ‘‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদ্যাপন তো রাজ্য সরকারের কাছে বাৎসরিক উৎসব। এ দিকে, অন্য দিনগুলিতে ব্রাত্য থাকে পরিবেশ।’’ শব্দদূষণ নিয়ে কাজ করা পরিবেশকর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’-এর সাধারণ সম্পাদক নব দত্তের মতে, ‘‘রাজ্যে পরিবেশ রক্ষায় কারও নজর আছে নাকি! রাজ্য সরকার তো উৎসব পালন করেই খালাস!’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।