প্রতীকী ছবি।
ইন্টারনেটের যুগে চিঠি লেখার পাট চুকে গিয়েছে আগেই। ডাক মারফত হাতে লেখা চিঠি পাঠানোর রেওয়াজ স্মার্টফোন-পরবর্তী যুগে ঢুকে গিয়েছে ইতিহাসের পাতায়। প্রযুক্তির ধাক্কায় জমি হারানো ডাক বিভাগ গত কয়েক বছর ধরে আঁকড়ে ধরতে চাইছিল পার্সেল পরিষেবাকে। সেখানেও তাকে বেসরকারি কুরিয়র সংস্থার সঙ্গে পাল্লা দিতে হচ্ছে। তাই পরিষেবা আকর্ষণীয় করে তুলতে প্রেরকের দরজা থেকে পার্সেল তুলে আনতে ঝাঁপাচ্ছে ডাক বিভাগ। উত্তর কলকাতায় বড়বাজারে ওই পরিষেবা শুরু করে সাফল্য পেয়ে সম্প্রতি বিধাননগর ও নিউ টাউনে তারই সূচনা হল।
ডাক বিভাগ সূত্রের খবর, দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা প্রিয়জনকে উপহার, জরুরি জিনিসের পার্সেল পাঠাতে অনেকে ডাকঘরে আসেন। এ ছাড়াও শুকনো খাবার, পোশাক, ঘর সাজানোর উপকরণ, হস্তশিল্প সামগ্রী অনলাইনে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিতে পার্সেল পরিষেবার সাহায্য নেন বিক্রেতারা। পার্সেল পাঠাতে এমন গ্রাহকদের যাতে ডাকঘরে আসতে না হয়, সেই সুবিধাই দিচ্ছে নতুন পরিষেবা। পার্সেল বাড়ি থেকে তুলে আনবে ডাক বিভাগ। সে জন্য বিশেষ পার্সেল ভ্যানকে চলমান পোস্ট অফিসের ধাঁচেই গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে পার্সেল ওজন করার ব্যবস্থা থাকছে। সঙ্গে সঙ্গে রসিদ দেওয়ার জন্য পিওএস বা পস মেশিনও রাখা হয়েছে। পূর্ব কলকাতা পোস্টাল ডিভিশনের অধীনে বিধাননগর পোস্ট অফিসে সম্প্রতি এই পরিষেবার সূচনা করেন কলকাতা রিজিয়নের পোস্টমাস্টার জেনারেল নীরজ কুমার।
এমনকি ভবিষ্যতে পণ্য মোড়কজাতকরণের পরিকাঠামোও ডাক বিভাগ গড়ে তুলতে চায় বলে জানিয়েছেন পোস্টমাস্টার জেনারেল। তিনি জানান, বৃহত্তর কলকাতায় গত ফেব্রুয়ারিতে ৪৬ হাজার পার্সেলের মাধ্যমে মোট ৩০৬ টন পণ্য গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে ডাক বিভাগ। প্রেরকের খোঁজে ইতিমধ্যেই নিউ টাউন ও বিধাননগরে সমীক্ষা করেছে দফতর। প্রচারে লিফলেট বিলি হচ্ছে। মোবাইল ভ্যানের গায়ে ফোন নম্বর লিখে দেওয়ার কথাও ভাবা হয়েছে। প্রেরক ওই নম্বরে ফোন করে ঠিকানা জানালেই পার্সেল সংগ্রহ করতে বাড়ি পৌঁছে যাবে মোবাইল ভ্যান। কাছাকাছি এলাকা হলে সে দিনই পার্সেল ডেলিভারি দেওয়াও পরিকল্পনার উদ্দেশ্য। ডাক বিভাগ মানুষের কাছে আকর্ষণ বাড়াতে সম্প্রতি একটি পার্ক গড়ে তুলেছে। বিধাননগর ডাকঘরে তৈরি হয়েছে সেই ফিলাটেলিক পার্ক। ডাকটিকিটের আদলে বিভিন্ন কাঠামো এবং গাছ দিয়ে সাজানো ওই উদ্যান।