crime

ফেসবুকে ঘনিষ্ঠতা, লেকটাউনের মহিলার ৫ লাখের গয়না নিয়ে চম্পট দিল ‘পুলিশ বন্ধু’!

মহিলার অভিযোগ, পাকাপাকি ভাবে বাড়ি ছাড়ার সময় তিনি যেন তাঁর সোনা-রুপোর সমস্ত গয়না নিয়ে বেরোন, এমনটাই বলেছিল ওই যুবক। সেই অনুযায়ী দিন কয়েক আগে এক দিন সকালে তাঁর স্বামী যখন মেয়েকে স্কুলে পৌঁছে দিতে বেরোন, সেই সময় সমস্ত গয়নাগাটি নিয়ে বাড়ি ছাড়েন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৯ ১৫:৩৬
Share:

৫ লাখ টাকার সোনা-রুপোর গয়না নিয়ে চম্পট দিল ওই ‘ফেসবুক বন্ধু’। অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস

ফেসবুকে আলাপ। সেখান থেকেই ঘনিষ্ঠতা। সেই ঘনিষ্ঠতার মাশুল গুনতে হল লেকটাউনের এক মহিলাকে। তাঁর ৫ লাখ টাকার সোনা-রুপোর গয়না নিয়ে চম্পট দিল ওই ‘ফেসবুক বন্ধু’। শনিবার ওই মহিলা লেকটাউন থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে, এখনও ওই ‘বন্ধু’র হদিশ পাননি তদন্তকারীরা।

Advertisement

লেকটাউনের বাসিন্দা বছর পঁয়ত্রিশের ওই মহিলা পুলিশকে জানিয়েছেন, গত অগস্টে ফেসবুকে তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় রূপম মণ্ডল নামে এক যুবকের। ওই যুবক নিজেকে কলকাতা পুলিশের কর্মী হিসাবে পরিচয় দিয়েছিল। ফেসবুকের মাধ্যমেই তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। পরে নিজেদের মোবাইল নম্বরও তাঁরা আদান-প্রদান করেন। নিয়মিত ফোনে কথাবার্তা চলতে থাকে দু’জনের। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলা বিবাহিতা। তাঁর একটি মেয়ে আছে।

অভিযোগে ওই মহিলা পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, তিনি ঠিক করেন ওই যুবকের সঙ্গে নতুন করে সংসার পাতবেন। মহিলার অভিযোগ, পাকাপাকি ভাবে বাড়ি ছাড়ার সময় তিনি যেন তাঁর সোনা-রুপোর সমস্ত গয়না নিয়ে বেরোন, এমনটাই বলেছিল ওই যুবক। সেই অনুযায়ী দিন কয়েক আগে এক দিন সকালে তাঁর স্বামী যখন মেয়েকে স্কুলে পৌঁছে দিতে বেরোন, সেই সময় সমস্ত গয়নাগাটি নিয়ে বাড়ি ছাড়েন তিনি।

Advertisement

আরও পড়ুন: সরকারি হোম থেকেও অবাধেই বেরোন নির্যাতিতা

পুলিশের কাছে ওই মহিলা জানিয়েছেন, আগেই ঠিক ছিল শ্রীভূমি বাসস্টপে ওই যুবকের সঙ্গে দেখা হবে। পূর্ব পরিকল্পনা মতো একটি কালো রঙের বাইক নিয়ে এর পর সেখানে ওই যুবক আসে। তার পর গোটা কলকাতা ঘোরাফেরা করে ওই মহিলাকে বাইকে করে সে বাইপাসের ধারে আনন্দপুর এলাকায় যায়। পুলিশের কাছে লিখিত বয়ানে ওই মহিলা জানিয়েছেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ আনন্দপুরে তাঁরা যখন পৌঁছন, সেই সময় ওই যুবকের মোবাইলে একটি ফোন আসে। ফোনে কথা বলা শেষ হতেই ওই যুবক তাঁকে জানায়, মহিলার স্বামী এবং পরিবারের লোকজন গোটা বিষয়টি জানতে পেরেছেন। তাঁরা ওই যুবকের বাড়ি গিয়ে গন্ডগোল করছে। একই সঙ্গে বলে, বাড়ি গিয়ে গন্ডগোল মিটিয়ে সে মহিলাকে নিয়ে যাবে। তাঁকে সেখানেই অপেক্ষা করতে বলে। যাওয়ার আগে মহিলাকে এ-ও বলে, গয়নাগাটি নিয়ে একা থাকা ঠিক হবে না। তাই ওই গয়নাগাটি যুবকটি তাঁর কাছ থেকে নিয়ে নেয়।

আরও পড়ুন: অপহৃতই অভিযুক্ত প্রতারণায়, জানা গেল কিনারার পরে

মহিলার অভিযোগ, এর পর রাত ১০টা পর্যন্ত তিনি সেখানে অপেক্ষা করেন। কিন্তু, ওই যুবক আর ফেরেনি। পুলিশকে মহিলা জানিয়েছেন, স্বামী ফোন করতে পারে ভেবে তিনি মোবাইল বন্ধ রেখেছিলেন। সেই মোবাইলটিও ওই যুবকের কাছে রেখেছিলেন তিনি। ফলে ফোনও করতে পারেননি তাকে। পুলিশ সূত্রে খবর, মহিলাকে উদ্দেশ্যবিহীন ভাবে আনন্দপুর এলাকায় ঘুরতে দেখে স্থানীয় থানার পুলিশকর্মীরা। তাঁরা ওই মহিলার সঙ্গে কথা বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারিত হয়েছেন। আনন্দপুর থানার পুলিশ মহিলার দিদির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে তাঁকে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে।

আরও পড়ুন: নয়া মেট্রোর উদ্বোধনে সময় চাইলেন জিএম

পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত রূপম মণ্ডলের ফেসবুক প্রোফাইল ছাড়া একটি ফোন নম্বর পাওয়া গিয়েছে। যে নম্বর থেকে সে ফোন করত ওই মহিলাকে। তবে প্রোফাইলটি ভুয়ো বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। ওই মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘মোবাইল নম্বর এবং ফেসবুক প্রোফাইলের সূত্র ধরেই আমরা অভিযুক্তকে খোঁজার চেষ্টা করছি। তবে এখনও তার কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement