সৌরশক্তি ব্যবহারে কমছে দূষণ, দাবি পুরসভার

কলকাতা পুরসভার পার্কে সৌরশক্তি চালিত আলো ব্যবহারের ফলে কমে গিয়েছে এলাকার দূষণ। সম্প্রতি পুরসভার একটি সমীক্ষায় সেই তথ্যই উঠে এল। দক্ষিণ এবং উত্তর কলকাতার বিভিন্ন পার্কে সৌরশক্তি ব্যবহারের ফলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ এক মাসে কমে দাঁড়িয়েছে ৫,৮৮৩. ৯ কিলোগ্রাম।

Advertisement

কৌশিক ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৫:৫৫
Share:

দূষণে জেরবার শহরে ভরসা সৌরশক্তি!

Advertisement

কলকাতা পুরসভার পার্কে সৌরশক্তি চালিত আলো ব্যবহারের ফলে কমে গিয়েছে এলাকার দূষণ। সম্প্রতি পুরসভার একটি সমীক্ষায় সেই তথ্যই উঠে এল। দক্ষিণ এবং উত্তর কলকাতার বিভিন্ন পার্কে সৌরশক্তি ব্যবহারের ফলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ এক মাসে কমে দাঁড়িয়েছে ৫,৮৮৩. ৯ কিলোগ্রাম। সৌরশক্তি পরিচালিত আলো ব্যবহারের ফলে এক বছরে এই সাতটি পার্কে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ কমতে পারে ৭০,৬০৬.৮ কিলোগ্রাম। একই ভাবে বিদ্যুতের খরচ কমেছে গড়ে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ।

কলকাতা পুরসভার উদ্যান দফতরের মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘পরিবেশের দূষণ কমাতে সৌরশক্তি ব্যবহারে জোর দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। আপাতত শহরের ৮টি উদ্যানে সৌরশক্তি চালিত আলো বসানো হয়েছে। সম্প্রতি ৭টি পার্কে সৌরশক্তি পরিচালিত আলো বসিয়ে কী পরিমাণ দুষণ কমানো যায় তার একটি সমীক্ষা হয়েছে। দূষণ প্রতিরোধ সম্ভব হয়েছে।’’ তিনি জানান, পরবর্তীকালে, শহরের অন্যান্য পার্কগুলিতেও সৌরশক্তি পরিচালিত আলো বসানো হবে।

Advertisement

কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, উত্তর কলকাতার কলেজ স্কোয়ার, দক্ষিণ কলকাতার দেশপ্রিয় পার্ক, যতীন দাস পার্ক, ম্যাডক্স স্কোয়ার পার্ক, বেহালার মোহিনী কুঞ্জ, পাটুলি উপনগরী উদ্যান এবং সরশুনা লেক ও তার সংলগ্ন এলাকায় সৌরশক্তি বসানোর ফলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের দূষণ অনেকটাই আটকানো সম্ভব হয়েছে। পুরসভার এক আধিকারিক জানান, শীতে এমনিতেই দুষণের পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে যায়। সেই কারণে বৈদ্যুতিক আলোর পরিবর্তে কয়েক বছর আগেই পরিবেশবান্ধব সৌরশক্তি ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।

পুরকর্তৃপক্ষ জানান, আলো জ্বালানোর জন্য মূলত জ্বালানি হিসেবে কয়লার ব্যবহার করা হয়। কয়লা পুড়ে বাতাসে তৈরি হয় কার্বন-ডাই-অক্সাইড। তার থেকেই পরিবেশে দূষণ ছড়ায়। শুধু তাই নয়, আলো জ্বালাতে একটি পার্কে যে পরিমাণ তাপ বিদ্যুতের (কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুৎ) প্রয়োজন হয়, সৌরবিদ্যুতের ক্ষেত্রে সেই পরিমাণ বিদ্যুৎ তৈরি করতে খরচ অনেকটাই কমে যায়। পুর সমীক্ষাতেই জানা গিয়েছে, সৌরশক্তি ব্যবহারের আগে সাতটি পার্কে গত এক মাসে বৈদ্য়ুতিক আলো জ্বালাতে মোট বিদ্যুৎ লেগেছে ২৬,৭৪৮ কিলোওয়াট আওয়ার। সৌরশক্তি ব্যবহারের পর তার পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ১০,৮৫২ কিলোওয়াট আওয়ার।

পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘১০০০ ওয়াট বিদ্যুৎ এক ঘণ্টায় দেড় কিলোগ্রাম কার্বন-ডাই-অক্সাইড তৈরি হয়। সুতরাং কয়লা পুড়িয়ে তাপ বিদ্যুৎ উৎপাদনের ফলে পরিবেশে দূষণ বেড়েই চলেছে। বিকল্প সৌরশক্তি। পুরসভার উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়।’’ তিনি জানান, পুরসভার নিজস্ব নীতি থাকা প্রয়োজন। যাতে নতুন যে সমস্ত বাড়ি তৈরি হচ্ছে সেখানে সৌরশক্তির ব্যবস্থা থাকে। দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘শহরে গ্রিন হাউস তৈরিতে কলকাতা পুরসভা ইতিমধ্যেই জোর দিয়েছে। আগের চেয়ে সৌরশক্তির ব্যবহারও অনেক গুণ বেড়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement