প্রতীকী ছবি।
শহর জুড়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আটটি দল ঘুরবে। শব্দবিধি ভেঙে বাজি ফাটানোর ঘটনা দেখলে সঙ্গে সঙ্গেই এফআইআর দায়ের করবেন দলের সদস্যেরা। এই প্রথম বার পর্ষদের আধিকারিকদের এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। বুধবার এক সাংবাদিক বৈঠকে এমনই জানালেন রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র।
যদিও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগের কারণেই পর্ষদের এই সিদ্ধান্ত কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশকর্মীদের একাংশ। এক পরিবেশকর্মীর বক্তব্য, ‘‘পুলিশ যদি সক্রিয় হত, তা হলে পর্ষদের আধিকারিকদের আলাদা করে এই ক্ষমতা দিতে হত না।’’ যদিও পর্ষদের সদস্য-সচিব আইপিএস অফিসার রাজেশ কুমার বলেন, ‘‘পুলিশ যথেষ্ট কাজ করছে। কারও একার উদ্যোগে শব্দবাজি আটকানো যাবে না। তাই যৌথ ভাবেই এই কাজ করা হচ্ছে।’’ পরিবেশকর্মীরা অনেকে অবশ্য জানাচ্ছেন, হাতে ক্ষমতা থাকলেও গত কয়েক বছর তা প্রয়োগ করেনি পর্ষদ। পরিবেশকর্মী নব দত্তের কথায়, ‘‘অতীতে পর্ষদ নিজেই অভিযোগ দায়ের করত। ফের যে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।’’
এ দিন এফআইআর দায়ের, পরিবেশের ক্ষতি করার জন্য সংশ্লিষ্ট নিয়মভঙ্গকারীর থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়-সহ একাধিক বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছে পর্ষদ। ডিজে যে নিষিদ্ধ, তা-ও স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কল্যাণবাবু বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী রাত ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে বাজি ফাটানো গেলেও নিষিদ্ধ বাজি ফাটানো যাবে না।’’
কল্যাণবাবু জানান, গুগল স্টোর থেকে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল পরিবেশ অ্যাপ’ ডাউনলোড করে সেখানেও নাগরিকেরা শব্দবাজি নিয়ে নিজেদের অভিযোগ জানাতে পারবেন। পর্ষদ জানাচ্ছে, শব্দবাজির মাত্রা নির্ধারণের জন্য ইতিমধ্যেই পুলিশকে ৫৪০টি সাউন্ড মিটার দেওয়া হয়েছে। আরও ৮০০টি সাউন্ড মিটার দেওয়া হবে। গত কয়েক বছরের শব্দবাজি নিয়ে অভিযোগপ্রাপ্তির নিরিখে কসবা, গরফা, বেলেঘাটা, মানিকতলা, সোনারপুর-সহ মোট ৩২টি জায়গায় বাড়তি নজরদারি চালাবে পর্ষদ।
বায়ুদূষণের বিষয়টিও এ দিন মনে করিয়ে দিয়েছেন পর্ষদের কর্তারা। যেমন গত বছরই কালীপুজো ও দীপাবলিতে রাত ১২টায় বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার (পিএম১০) পরিমাণ ছিল যথাক্রমে প্রতি ঘনমিটারে ৭২০.৪১ এবং ১৭২৭.২০ মাইক্রোগ্রাম। সহনশীল মাত্রার থেকে যথাক্রমে যা সাত গুণ এবং ১৭ গুণ বেশি!
গ্রিন বাজি কতটা পরিবেশবান্ধব, এ দিনের বৈঠকে সে প্রসঙ্গও উঠেছিল। যদিও কল্যাণবাবু বলেন, ‘‘গ্রিন বাজি আমার কাছে সোনার পাথরবাটির মতো। পৃথিবীতে এমন কোনও বাজি নেই, যা থেকে কোনও না কোনও দূষণ ছড়ায় না।’’