এ বার বিধিভঙ্গকারীর সংখ্যা বাড়ায় কঠোর হাতে পরিস্থিতি সামলানোর নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার। ফাইল চিত্র।
বার বার সাবধান করা সত্ত্বেও সচেতন হচ্ছেন না শহরের বাসিন্দাদের একাংশ। অভিযোগ, রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত বলবৎ থাকা নৈশ কার্ফু উপেক্ষা করে বিনা কারণে অনেকেই রাস্তায় বেরোচ্ছেন। কেউ কেউ গাড়ি নিয়েও ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বালাই নেই মাস্ক পরারও। পুলিশ ধরলে তাঁরা যুক্তি দিচ্ছেন, প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ় তো নেওয়া হয়ে গিয়েছে! আমজনতার এ হেন মনোভাব দেখে নৈশ কার্ফু আরও কঠোর ভাবে বলবৎ করাতে তৎপর হল লালবাজার। রাতে গাড়ি নিয়ে বেরোনোর উপযুক্ত কারণ দেখাতে না পারলে বিধিভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি গাড়ি আটক করার পথেও হাঁটছে পুলিশ। শুধু সোমবার রাতেই ১৩৮০টি গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর।
কলকাতা পুলিশের একটি অংশ জানাচ্ছে, গত শনি ও রবিবারও রাতের বিধিনিষেধ অমান্য করে কেউ গাড়ি নিয়ে বেরোলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল লালবাজারের তরফে। সেই মতো ওই দু’দিন শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ট্র্যাফিক গার্ডগুলি প্রায় এক হাজার গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। সব চেয়ে বেশি গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় ইএম বাইপাস এলাকায়।
উল্লেখ্য, আগের বার নৈশ কার্ফুর ক্ষেত্রে অনেক নরম হতে দেখা গিয়েছিল পুলিশকে। জরুরি কারণ ছাড়া বেরোলে বহু ক্ষেত্রে গাড়ি-সহ চালকের ছবি তুলে তাঁকে সচেতন করার পাশাপাশি তাৎক্ষণিক ১০০ টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ বার বিধিভঙ্গকারীর সংখ্যা বাড়ায় কঠোর হাতে পরিস্থিতি সামলানোর নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার। মোটরযান আইনের ২০৭ নম্বর ধারা প্রয়োগ করে গাড়ির নথি বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি আটক করা হচ্ছে গাড়িও। এর সঙ্গে ১১৫ নম্বর ধারা (নো এন্ট্রি জ়োনে গাড়ি চালানো) প্রয়োগ করে মোটা জরিমানার পথেও হাঁটছে পুলিশ। এ ক্ষেত্রে প্রথম বার আইন ভাঙলে দু’হাজার টাকা এবং পরের বার একই অপরাধের জন্য পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার নিয়ম আছে।
ইএম বাইপাসে কর্তব্যরত এক ট্র্যাফিক সার্জেন্ট বললেন, ‘‘আগে মূলত লোকজনকে সচেতন করার উপরেই জোর দেওয়া হত। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অল্প জরিমানা করে, কখনও বিধিভঙ্গকারীর ছবি তুলে তাঁকে সাবধান করে ছেড়ে দেওয়া হত। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে যে ভাবে রাতে নিয়ম না মানার প্রবণতা বাড়ছে, তাতে কঠোর হওয়া ছাড়া উপায় থাকছে না।’’
যদিও কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘বেপরোয়া গতিতে লাগাম টানতে সারা বছরই ২০৭ ধারা প্রয়োগ করা হয়। তবে নৈশ কার্ফুর ক্ষেত্রে কোনও ঢিলেমি দেওয়া হচ্ছে না। নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি নাকা-তল্লাশিতেও জোর দেওয়া হচ্ছে।’’ লালবাজারের কর্তারা জানিয়েছেন, রাতের শহরে এমন অভিযান লাগাতার চলবে।