প্রতীকী চিত্র।
মডেলিংয়ের জগতে কাজের সুযোগ করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দুই মহিলার ভিডিয়ো তোলার পরে তা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় একটি হোটেলের খোঁজ পেয়েছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই ওই হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা। হোটেল কর্তৃপক্ষ অবশ্য দাবি করেছেন, ওই ভিডিয়ো সেখানে তোলা হয়নি।
বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় এমন ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। ভিডিয়ো তোলার জন্য হোটেল, গেস্ট হাউস, এমনকি সরকারি উদ্যানকেও ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি বিধাননগর সাইবার থানা একই ধরনের অভিযোগে এক মেক-আপ শিল্পী ও এক ফোটোগ্রাফারকে গ্রেফতার করেছে। সেই ঘটনায় শুটিং হয়েছিল সল্টলেকের বনবিতানে। গত মার্চে এমন আর একটি ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সেই ঘটনায় গণধর্ষণ ও নারী পাচারের অভিযোগের ধারা যুক্ত করা হয়েছিল।
নিউ টাউনের বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, পঞ্জাবের দুই গ্যাংস্টারের মৃত্যুর ঘটনার পরে বহিরাগতদের সম্পর্কে তথ্য নেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ পদক্ষেপ করছে। আবাসিক সমিতিগুলির সঙ্গে বৈঠকও করেছে প্রশাসন। তাঁদের দাবি, এ বার গেস্ট হাউস ও হোটেলগুলির উপরেও নজরদারি বাড়ানো হোক। নিউ টাউনের বাসিন্দাদের একটি সংগঠন ‘সিটিজ়েন্স ওয়েলফেয়ার ফ্রেটারনিটি’র এক কর্মকর্তার কথায়, ‘‘এই এলাকায় প্রচুর গেস্ট হাউস তৈরি হয়েছে। সেগুলি নিয়ম মেনে চলছে কি না এবং ভিতরে অবৈধ কোনও কারবার চালানো হচ্ছে কি না, সে দিকে পুলিশের নজর দেওয়া উচিত।’’ পুলিশের অবশ্য দাবি, গেস্ট হাউসগুলির উপরে নিয়মিত নজরদারি চালানো হয়।
সাইবার অপরাধ বিষয়ক আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, করোনা পরিস্থিতিতে সাইবার অপরাধের যে সমস্ত ঘটনা সামনে এসেছে, তার মধ্যে মহিলাদের আপত্তিকর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার বেশ কিছু দৃষ্টান্ত রয়েছে। তিনি বলেন,‘‘সিনেমা হল বন্ধ। ভিডিয়ো দেখার অ্যাপ এবং ওয়েব সিরিজ়ের রমরমা চলছে। এই পরিস্থিতিতে মহিলাদের প্রলোভন দেখিয়ে তাঁদের আপত্তিকর ছবি কিংবা ভিডিয়ো তুলে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে পোস্ট করা হচ্ছে। কখনও আবার সেই ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করে টাকা আদায় করা হচ্ছে। এ বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে। হোটেল ও গেস্ট হাউসগুলির উপরেও নজরদারি চালানো প্রয়োজন।’’
দুই মহিলার ভিডিয়ো-কাণ্ডে নিউ টাউনের একটি পাঁচতারা হোটেলের নাম জড়িয়েছে। হোটেলের এক মুখপাত্র অবশ্য দাবি করেন, সেখানে ওই ধরনের কোনও শুটিং হয়নি। দুই মহিলা হোটেলে ঘর বুক করতে এসেছিলেন। কিন্তু পর্যাপ্ত নথি না থাকায় তাঁদের ঘর দেওয়া হয়নি। বিধাননগরের এক পুলিশকর্তার দাবি, ‘‘অভিযোগ পেলেই দ্রুত পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তদন্ত চলছে। সব দিক থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’