বাইক-আরোহী পড়ুয়াদের মাথায় নেই হেলমেট। শহরের রাস্তায় এই দৃশ্য বন্ধেই উদ্যোগ পুলিশের। ফাইল চিত্র
মোটরবাইক বা স্কুটারে চেপে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে প্রতিটি পড়ুয়ার মাথায় থাক হেলমেট। অভিভাবকেরাও অভ্যাস করুন হেলমেট পরার। আজ, সোমবার থেকে শুরু হতে চলা পথ নিরাপত্তা সপ্তাহে এই বার্তাই দিতে চলেছে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ। তাদের অভিযোগ, স্কুলে যাওয়ার পথে অভিভাবকেরা অনেকেই নিজেরা তো হেলমেট পরেনই না, সন্তানকেও পরান না। এই প্রবণতাই বদলাতে চাইছে পুলিশ।
সেই উদ্দেশ্যেই নিজেদের এলাকার ১২টি স্কুলকে বেছে নিয়েছে জোড়াবাগান ট্র্যাফিক গার্ড। স্কুলের নজরদারিতে পড়ুয়া ও তাদের অভিভাবকেরা যাতে ট্র্যাফিক আইন মেনে চলেন এবং হেলমেট ব্যবহার করেন, তা নিশ্চিত করতেই আগামী বুধবার ওই স্কুলগুলির কর্তাদের নিয়ে একটি কর্মশালা করা হবে ট্র্যাফিক গার্ডের তরফে।
কী ভাবে কাজে লাগানো হবে স্কুলগুলিকে?
পুলিশ সূত্রের খবর, মধ্য ও উত্তর কলকাতার বাছাই করা ১২টি স্কুলের সামনে ছুটি এবং স্কুল শুরুর সময়ে কী অবস্থা থাকে, তার ভিডিয়ো তোলা হয়েছে ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে। ট্র্যাফিক আইন লঙ্ঘন, হেলমেট না পরা, যত্রতত্র বেআইনি ভাবে গাড়ি রাখার মতো সব কিছুর দৃশ্যই তুলেছে পুলিশ। সেই ভিডিয়ো আগামী বুধবার ওই কর্মশালায় বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষের সামনে দেখানো হবে। একই সঙ্গে তাঁদের বলা হবে, নিজেদের স্কুলে লাগানো সিসি ক্যামেরার ছবি দেখে অভিভাবকদের সর্তক করুন। সেই সতর্কবার্তায় কাজ না হলে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। পুলিশের দাবি, এ ব্যাপারে স্কুলগুলির তরফে ইতিমধ্যেই সাড়া মিলেছে। কর্মশালার পরেই অভিভাবকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে তারা।
লালবাজারের ট্র্যাফিক পুলিশকর্তাদের দাবি, শহরের প্রায় প্রতিটি স্কুলের সামনেই দেখা যায়, অভিভাবকদের একাংশ ট্র্যাফিক আইন মানেন না। পুলিশ চাইছে, এই পরিস্থিতি বদলাতে সক্রিয় ভাবে এগিয়ে আসুক স্কুলগুলিও। সেই কারণেই অভিভাবকেরা কী ধরনের ট্র্যাফিক আইন লঙ্ঘন করেন, তা তুলে ধরতে চাওয়া হচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষের সামনে।
এর আগে মধ্য কলকাতার দু’টি স্কুলের তরফে ‘নো হেলমেট, নো ক্লাস’ নিয়ম চালু করা হয়েছিল। তাতে সাড়া মিলেছিল ভালই। এই ধরনেরই দৃষ্টান্তমূলক কোনও ব্যবস্থা নিতে চাইছে পুলিশ। স্কুলগুলির কাছে সেই কারণে সাহায্য চেয়েছেন তাঁরা। মধ্য কলকাতার একটি স্কুলের অছি পরিষদের তরফে জগমোহন বাগলা জানান, তাঁরা পুলিশের পাশে আছেন। পড়ুয়া ও অভিভাবকদের সচেতন করতে পুলিশের সঙ্গে তাঁরাও একযোগে কাজ করবেন। আগামী বুধবারের কর্মশালার পরে তাঁরা ট্র্যাফিক আইন ভাঙা অভিভাবকদের ডেকে সর্তক করবেন বলেও জগমোহন জানান। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘অভিভাবকেরা সচেতন হলে তবে তো
পড়ুয়ারা হবে।’’