বৌবাজারের এই হস্টেলেই যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ। — নিজস্ব চিত্র।
বৌবাজারের হস্টেলে ইরশাদকে মারধর করার সময় ভিডিয়ো করেছিলেন আবাসিকেরা। অভিযুক্ত ১৪ জনকে জেরা করে তাঁদের বয়ান থেকে এই তথ্য জানা গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তবে যে মোবাইলে ভিডিয়ো করা হয়েছে, তার হদিস এখনও পাননি তদন্তকারীরা। সেই মোবাইলের খোঁজ চালানো হচ্ছে। অন্য দিকে, তদন্তে নেমে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে যে, আবাসিকদের মধ্যে দুই প্রাক্তন ছাত্রও ছিলেন। পুলিশ সূত্রে খবর, পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে প্রথমে তাঁরা নিজেদের হস্টেলের কর্মী বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। কিন্তু তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে তাঁরা আদতে হস্টেলে কোনও কাজ করেন না।
সোমবারই বৌবাজারের উদয়ন হস্টেলে গিয়েছে ফরেনসিক দল। সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। মিলেছে রক্তের নমুনা, ভাঙা ব্যাট। ফরেনসিক দল হস্টেলের একতলা এবং দোতলায় তল্লাশি চালিয়েছে। এর আগেও ওই হস্টেল থেকে একাধিক ব্যাট এবং লাঠি পেয়েছিল পুলিশ। যুবককে মারধরে তা ব্যবহার করা হয়েছিল কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত শুক্রবার বৌবাজারের হস্টেলে ইরশাদ আলম নামে ৩৭ বছরের যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। তিনি বেলগাছিয়ার বাসিন্দা। চাঁদনি চক এলাকায় একটি মোবাইলের দোকানে কাজ করে সংসার চালাতেন। অভিযোগ, বৌবাজারে উদয়ন হস্টেলের সামনের রাস্তায় শুক্রবার সকালে তাঁকে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছিল। সূত্রের খবর, আগের দিন ওই হস্টেলের এক জনের মোবাইল চুরি গিয়েছিল। ইরশাদকে দেখে ছাত্রদের সন্দেহ হয় এবং তাঁরা তাঁকে ফুটপাথ থেকে টেনেহিঁচড়ে ভিতরে নিয়ে যান। অভিযোগ, হস্টেলের ভিতরে তাঁকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে বৌবাজার থানার পুলিশ পৌঁছলে প্রথমে দরজা খোলা হয়নি। পরে সেখানে পৌঁছয় মুচিপাড়া থানার পুলিশ। তার পর দরজা খোলা হলে পুলিশ ইরশাদকে উদ্ধার করে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, ‘হাইপোভলিউমিক শক’-এর কারণে মৃত্যু হয়েছে যুবকের। হৃদ্যন্ত্র-সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত বা ‘ফ্লুইড’ (তরল পদার্থ) না পৌঁছলে এই শারীরিক অবস্থা তৈরি হয়। মনে করা হচ্ছে, শরীরে একাধিক আঘাতের কারণে এ রকম হয়েছে।